জামাত শিবিরের হরতাল, হরতালে সহিংসতা; আমার অপরিপক্ক মস্তিষ্কপ্রসূত কিছু প্রশ্ন এবং আহসান ভাইয়ের কিছু লজিক। [মন্তব্য অতীব প্রয়োজন]
লিখেছেন লিখেছেন ডাক্তার মেহেদী ২৪ জুলাই, ২০১৩, ০৫:৩০:২২ বিকাল
Mehedi Hassan
আসসালামু আলাইকুম ভাই।। দরিদ্র রিক্সা চালকের রিক্সা পুড়ানো হলে, কিয়ামতেরে দিন ও কি মাফ করবে????
হরতাল কি সুন্নাহ সমর্থন করে???? আলেম অপিনিওন কি জানেন???
01:20
Mohammad Ahsanul Haque Arif
ওয়ালাইকুম সালাম। ১। দরিদ্র রিক্সা চালক একটি বিষয়, আর হরতালে তার রিক্সা পোড়ানো ভিন্ন বিষয়। যেমনটি একটি মেয়ের সৌন্দর্য আর তার পরীক্ষার রেজাল্ট ভিন্ন বিষয়। যেমনটি একজন মানুষের ইসলাম জানা আর বিরাট পদার্থবিদ হওয়া ভিন্ন বিষয়। যেমনটি একজন উগ্র মানুষের উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলা আর ইসলাম প্রতিষ্ঠা ভিন্ন বিষয়। মুলত দরিদ্র বা ধনি বিষয় না, রিক্সা পুড়িয়েছে কি গাড়ি ভেঙ্গেছে বিষয় না। কারন রিক্সা চালক ধনী হলেও বা অভাব কম থাকলেও অন্যায়ভাবে তার রিক্সা পুড়িয়ে দেয়া হলে তা অন্যায়ই। আবার, হরতালের আওতায় থাকা কোন বস্তু হরতালের বিপরীতে থাকলে তার উপর পিকেটিং হালাল কিনা এটিও একটি প্রশ্ন!!! আশাকরি বুঝতে পারছেন যে, দরিদ্র রিক্সা চালকের রিক্সা পুড়ানো হলে তার সাথে দরিদ্র বা ধনীর কোন বিষয় নেই, বরং সেটি অন্যায় কিনা সেটিই বিবেচ্য। যদি অন্যায় হয় তাহলে তার জন্যে শাস্তির কথা আছে। আর যদি অন্যায় না হয়, তাহলে শাস্তির বিষয় নেই। মাফ পাওয়াটা ভিন্ন বিষয়, কারন আল্লাহ শিরক ছাড়া যেকোন অপরাধ মাফ করতে পারেন। আবার অন্যের অধিকার হরনের ব্যাপারে বলব, সে মাফ করতে পারে আবার নাও করতে পারে। তবে অন্যায়ভাবে কারো অধিকার বিনষ্ট করা ঠিক না। এখন হরতালে রিক্সা পোড়ানো (যদিও রিক্সা ইসলামিস্টরা পুড়িয়েছে বলে কখনো শুনিনি) হালাল কি হারাম শাস্তি হবে কি হবে না তা হরতালের বুঝের উপর নির্ভর করছে।
২। হরতাল কে সুন্নাহ সমর্থন না করার কি কারন থাকতে পারে। সুন্নাহ কি সাপোর্ট করে আর কি করে না রাজনৈতিক এইসব কর্মকান্ডের ব্যাপারে, তার কোন মুলনীতির সাথে হরতাল সাংঘর্ষিক? আমিতো কোন সাংঘর্ষিক কিছু পাই না। আপনি পেয়েছেন কি?
01:35
Mehedi Hassan
অন্যের অধিকার হরন, ব্যাক্তিগত সম্পত্তি ধ্বংস, এটা হারাম নয় কি????? আপনি যদি হরতাল ডাকেন, তাঁর আগেরদিন যদি আপনি আমার গাড়ি পুড়ান, এটা কি??? রিক্সা তো পুড়ায়, সিএনজি ও পুড়ায়।। এটা হারাম নয় কি??
01:45
Mohammad Ahsanul Haque Arif
বিনা কারনে অন্যের অধিকার হরন, ব্যক্তিগত সম্পদ ধ্বংস এগুলো হারাম। হরতাল রিলেটেড কর্মকান্ডে গাড়ি ভাঙ্গা বা পুড়ান ইত্যাদি হারাম কিনা তা নির্ভর করছে হরতাল কি, কেন এবং কিভাবে পালন হয় তার উপর। সরকারের কর্মকান্ডের ব্যাপারে সাধারন মানুষের লায়েবিলিটির উপর। সাধারন মানুষের ট্যাক্সের টাকায় চলা সরকার, পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিচারবিভাগের আচরনের উপর, এই ব্যাপারে জনগনের মতামতের উপর।
আপনি বর্তমান আধুনিক রাষ্ট্রগুলোর সরকার ও জনগনের সম্পর্ক, ডিপেন্ডেন্সি, দুরত্ব, কন্ট্রোলিং ইত্যাদিকে কিভাবে দেখেন?
তার উপর নির্ভর করছে জনগন কতটুকু লায়েবল। আমার ভিউতে তারা লায়েবল। আর তাই তাদের সাফার করাটা সময়ের দাবী, যেমনটি আমরা সাফার করছি। আমরা জনগনের বাইরে নই। আর যদি বলেন যে না, তারা লায়েবল না, তাহলে উপরের প্রশ্নটির আপনার দৃষ্টিতে উত্তর কি?
Today
02:36
Mehedi Hassan
ব্যাপারটা একটু জটিল।। একজন দরিদ্র বশির আলির রিক্সা পুড়ানো আর সালামান এফ রহমানের গাড়ি পুড়ানোর মাঝে কি পার্থক্য নেই??? ওয়েল, রাসুল(সাঃ) মদিনায় বসে মক্কাবাসীর সিরিয়া ফেরত বাণিজ্য কাফেলায় আক্রমন করতেন, মক্কার অর্থনীতি তে আঘাত হানতে, একজনকে দেখলাম এ বিষয়টাকে এইটার সাথে মিলাতে। আমি জানিনা, এটা মেলে কিনা।। ধরুণ, গোলাম আজমের অন্যায়ভাবে ফাঁসি হল। উত্তেজিত শিবির কর্মীরা ঢাকা শহরে রহীম আলির দোকান, করিম আলির গাড়ি ভাঙ্গল, রহীম করিম কোনভাবেই আওয়ামীলীগ বা ট্রাইব্যুনালের সাথে সম্পর্কিত নয়। মানে, ওরা যুদ্ধের শত্রুপক্ষ নয়।। এখন প্রতিবাদের এই ভাষায় কি আমরা সমগ্র রাষ্ট্রের জনগণকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলব??????? আল কায়েদা যদি তাদের উপর জুলুমকারী মার্কিন রাষ্ট্রের সকল নাগরিককে প্রতিপক্ষ বানিয়ে বোমা হামলা করে আমি তাহলে ওদের সমালোচনা কেন করি???????? আসলে রাসুল এবং তাদের সাহাবীদের জীবনীতে আমরা কোন নির্দেশনা পাই কিনা এই রুপ পরিস্থিতির ব্যাপারে। আপনার জানা আছে কি???
03:34
Mohammad Ahsanul Haque Arif
মেহেদী ভাই, ১। ন্যায় অন্যায়ের গানিতিক দৃষ্টিকোন নয়, বরং মানবিক দিক থেকে দেখলে বশির আলীর রিক্সা পোড়ানো আর সালমানের গাড়ি পোড়ানোয় অবশ্যই পার্থক্য আছে। আমরা রোবট না, আমরা মানুষ, আর তাই আমাদের বিচারে অবশ্যই মানবিকতার প্রশ্ন আসবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনও তা কনসিডার করেন বলেই আমার মনে হয়।
২। মুলত আমাদের সময় আর রাসুল (স) এর সময় এক না। আর রাসুল (স) এর সময়ের প্রতিটি খুটিনাটি বিষয়ের সিমিলারিটি নিয়ে কিন্তু যুগ গঠিত হয় না। বরং তার জীবনী থেকে আমরা কেবল মুলনীতি নিতে পারি। এই মুলনীতিগুলো কখনো সরাসরি সিমিলার উদাহরন দ্বারা কমপ্লিমেন্টারি হতে পারে, আবার কখনো একদম সিমিলার উদাহরন আপনি পাবেন না। যেমনঃ রাসুল (স) যে এরিয়াতে পৃথিবীতে কাজ শুরু করেছিলেন সে এরিয়াটিতে কোন সংগঠিত রাষ্ট্র ছিল না। তবে তার চেয়ে অনেক দূরে আবার সংগঠিত রাষ্ট্র ছিল, যেমন ইরান ও রোমানরা। আবার এই রাষ্ট্রগুলোও বর্তমানকালের রাষ্ট্রগুলোর মত ক্লোজড ছিল না। বরং খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিতসা, বাসস্থান ইত্যাদির সাথে রাষ্ট্রে দায়-দায়িত্বের যোগ তেমন ছিলই না, নাগরিকরা নিজেদের মত করেই জীবন যাপন করত, কেবল সম্রাটের কর পরিশোধ করত। তাও সেই করে সাথে সম্রাট কর্তৃক তাদের প্রতি বিশেষ কোন সেবা ছিল না। যা বর্তমান কালের রাষ্ট্রগুলোর আলোকে চিন্তাই করা যায় না যেখানে সামান্য সুচ থেকে শুরু করে এরোপ্লেন, লবন-চিনি থেকে শুরু করে টনে টনে গম, এমন কোন কিছু নেই যা সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে চলে না। এখানে পুলিশ আছে, আর্মি আছে, তাদের নীতিমালা আছে। অথচ রাসুল (স) এর সময় ইসলামী রাষ্ট্রেও কোন পুলিশ ছিল না, বেতনভুক্ত আর্মি ছিল না যা পরে এসেছে উমর (রা) এর সময়ে। একইভাবে, ইসলামী রাষ্ট্রেও নাগরিকদের জন্যে শিক্ষা ব্যবস্থার এখনকার মত সুনির্দিষ্ট কোন নীতিমালা ছিল না (কেবল ধর্মীয় শিক্ষার কিছু পদ্ধতি ছিল, জীবনের আর কোন ব্রাঞ্চে শিক্ষার ব্যাপারে এমনকি ততকালীন ধনী ইসলামি খিলাফায়ও তেমন কিছু ছিল না রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে), আবাসন নীতি মালা ছিল না, প্রতিবছরে বাজেট পাস হত না, সুসংগবদ্ধ নির্বাচন কমিশন ছিল না, জুডিশিয়ারি-লেগিসলেশনের বর্তমান কালের মত ক্লোজড এবং এক্সপ্লিসিট ব্রাঞ্চ ছিল না। ইসলামিষ্টদের জন্যে সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জ ইসলামী একক নেতৃত্বের অভাবে ছিল না, যা রাসুল (স) এর সময়ে আল্লাহর রাসুল এর উপস্থিতির মাধ্যমে পুরন হচ্ছিল। এসব যাবতীয় বিষয় না বুঝে, জীবনে তেমন কোন সময় রাজনীতি 'র' ও না বুঝে, মাঠ লেভেলের দাওয়াতের 'দ' এর সাথে সম্পৃক্ত না থেকে কেবল এসি রুমে বসে যারা থিউরিটিক্যাল ইসলাম চর্চা করে তাদের থেকে ফতোয়া নিলে যা হয়, ইসলাম গত কয়েকশ বছর সেই অসুবিধাই ফেস করছে। রাসুল (স) এর সাহাবীরা কেউ থিউরিটিক্যাল ইসলামী ফতোয়া দেননি। বরং তারাই দাওয়াতী কাজ করতেন, তারাই যুদ্ধে যেতেন, তারাই নামাজ পড়াতেন, তারাই কাফিরদের সাথে বুরোক্রেসির কাজ করতেন, তারাই আবার ফতোয়া দিতেন। যার কারনে উমর (রা) যখন কুরয়ানের বিধান রদ করে দুর্ভিক্ষের অভিযোগে চোরের হাত কাতার বিধান সাময়িকভাবে রহিত করলেন, আপনি দেখবেন সাহাবীর বলেননি যে আল্লাহ বলছে হাত কাটতে, রাসুল (স) কাটছেন, আর তুমি উমর কে যে এটা রহিত কর। মেহেদী ভাই, চিন্তা করুন এটিই ছিল সাহাবীদের ইসলামের বুঝ। যার কারনে তাদেরকে কেউ বলে দিতে হয় নি যে, কুরয়ানে দেয়া হাত কাটার বিধানের বাক্যগুলোতে কোন কন্ডিশন দেয়া না থাকলেও সেখানে মুলত কন্ডিশন আছে। আর তা হল যে অভাবের কারনে কে চুরি করতে পারে সেই অভাব আগে মোচন করতে হবে ইসলামী রাষ্ট্রে, তারপরই হাত কাটা যাবে। চিন্তা করুন, আল্লাহ তাদের কোথাও এটি বলেননি, রাসুল (স)ও কোন উদাহরন রেখে যাননি এভাবে বিধান রহিত করার, তারপরও তারা কেউ কিন্তু বুঝতে ভুল করেননি। কারন তারা প্রাকটিক্যাল ইসলামে ছিলেন এবং নিজেদের জীবনে বুঝেই ফতোয়া বের করতেন। কিন্ত বর্তমানের শায়খদের অবস্থা হল, তারা এসি রুমে বসে অনেকে আবার শাসকদের (উদাহরন সৌদি শাসকদের) মসনদ তাওয়াফ করতে করতে ফতোয়া দেয়। কেউ কেউ তো কোনদিন না রাষ্ট্রবিজ্ঞান ছুয়ে দেখেছে, না অর্থনীতি ছুয়ে দেখেছে, না সমাজবিজ্ঞান ছুয়ে দেখেছে, এমনি এমনিই ফতোয়া দিয়ে দিচ্ছে যে, মানব সমাজের এই অবস্থায় এর বাইরে কিছু করা যাবে না। ভাই আমি এই জাতীয় ফতোয়াকে কখনই সঠিক ধারার মনে করি না। আমি দেশে থাকতে কেবল ইসলামের নামে গোড়ামী দেখতাম আর তাকেই ইসলাম মনে করতাম। বিদেশে আসার পর যখন আরো হাজারো স্কুল অফ থটের মুসলিম দেখেছি তখনঈ আমার বিশ্বাস করা ইসলামের অনেক বিধানই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তখনি আমি বুঝেছি, মুসলিম দেশগুলোতে ইসলামের ব্যাপারে আমরা নিজেরা যা শিক্ষার চর্চা করছি বরং আরো বেশী চর্চার দরকার আছে।
যাক, এবার পরে প্রসঙ্গে আসি। আপনি মনে হয় একটি বিষয় ভুলে গেছেন যে, সাধারনভাবে শিবির কর্মীরা উত্তেজিত থাকে না। এমনকি গোলাম আযম সাহেবের মত সর্বাধিক প্রিয় ব্যক্তির ফাসিতেও না। কারন তারা জানে যে ইসলামী আন্দোলন করতে গিয়ে তাদের সামনে এই পর্যায় আসতেই পারে। তারা যখন কিছু ভাঙ্গে বা পোড়ায় তা মুলত সেখানকার পরিবেশ পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। কোন কর্মী ভুল করতে পারে, তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ঠান্ডা মাথাতেই পরিস্থিতি এবং গুরুত্বের বিবেচনাতেই তা করা হয়। রাষ্ট্র আমাদের ট্যাক্সের টাকায় চলে। আমাদের ভোটেই সরকার তৈরি হয়। আমাদের হ্যাসুচক সিগনালেই সরকার বেপরোয়া হয়। আপনি সরকারের একটী অন্যায়ের প্রতিবাদে মিছিল দিলে যদি সাধারন মানুষ আপনার সেই প্রতিবাদ মিছিলে না আসে, তাহলে অন্যায়ের শরীক সেই সাধারন মানুষও হয়। কারন অন্যায়ের প্রতিবাদে মিছিলে যখন ১০০ জন থাকে আর সরকারের টনক নড়তে যদি ১০০০ জন দরকার হয়, তাহলে সাধারন মানুষ অনুপস্থিত থেকে ১০০০ জন না হওয়ার জন্যে দায়ী থাকবে। বর্তমান সমাজ ও রাষ্ট্রগুলো এইভাবেই চলে।
আপনি চিন্তা করতে পারেন, রাসুল (স ) এর সময়ে তারা কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ বের হয়েছে আর মুসলিমরা ঘরে বসে আছে। এটি কখনোই হতে পারে না। এখন আপনি হয়তো বলবেন তখনকার পরিবেশ আর এখনকার পরিবেশ এক না। কেন না? কেন গোলাম আযম সাহেব আর যুদ্ধাপরাধী, কেন কাদের সিদ্দীকী না? এটি জ্ঞানের বিষয় আর স্টাডির বিষয়। তখন সময়েও যারা পড়েছে বুঝার চেষ্টা করেছে তারা রাসুল (স) এর সাথে ছিল, আর বাকীরা কাফিরদের সাথে ছিল। এখনকার সময়েও তা। কেবল কেমোফ্লেজ আর আমাদের গোমরাহী বেড়েছে কিছুটা। আর তাই আমরা এখন যারা আমাদের মিছিলে আসে না তাদেরকে কাফির বলি না, কারন আমরা জানি জ্ঞান এখন অনেক কমপ্লেক্স হয়ে গেছে, তাই কেউ কেউ পুরো জ্ঞানটি কমপ্লেক্সিটি অনুযায়ী বুঝতে নাও পারে। এবং এখন রাসুল (স) এর মত কোন একক নেতৃত্ব নেই
03:42
Mohammad Ahsanul Haque Arif
আর তাই আমরা আমাদের সাথে না আসলেও তাকে কাফির বলি না, কারন সেটি ছাড়াও ভিন্ন মত এখন ইসলামে আছে। কিন্তু কেউ অন্যায় দেখেও চুপ করে থাকলে, নিজের দুর্বলতা ও ভয়ের কারনে প্রতিবাদ না করলে সমাজ যে অন্যায়ে ছেয়ে যায়, তার প্রতিকার কিভাবে হবে। তার জন্যে যখনই প্রতিবাদ হবে তখনো বিশৃংখলা হবে, তখনই মারামারি হবে। এবং সেখানে কিছু না কিছু সাধারন (যদিও সাধারন বিষয়টাই পরিবেশ পরিস্থিরু উপর নির্ভ করে) মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আপনার বুঝে আসা দরকার, মক্কার ইকোনমি ধ্বংসে কিন্তু কেবল মক্কার ধনীদের ক্ষতি হত না, মক্কা বিজয়ের সময় কিন্ত কেউ সৈন্য মুভ করায়নি, তাহলে মুসলিমরা কাকে আক্রমন করতে গিয়েছিল, কেন বলল যে যারা অমুক অমুক যায়গায় আশ্রয় নিবে তারা তারা নিরাপদ। কেন সেখানেতো সবাই সাধারন মানুষ ছিল, কেউ তো অশ্ত্র হাতে নেয়নি মক্কার, তাহলে কেন সবাই এমনিই রাস্তাঘাটে নিরাপদ থাকবে না? জানি এইসব ছোটখাট বিষয়গুলোর উত্তর হয়তো আপনি চিন্তার প্রয়োজন মনে করেননি। শিবিরকে পুলিশ না পেটানো পর্যন্ত শিবির কোনদিন পুলিশের গায়ে হাত তোলেনি। সরকার জোর করে ফাসি দিতে চাওয়ার আগ পর্যন্ত জামায়াত হরতাল ডাকেনি। হরতাল ডাকার পরে তা সফল করার জন্যে যে কাজগুলো লাগে জামায়াত তাই করেছে। এর বেশী এক দানাও করেনি। কেউ নিজের গাড়ি বা রিক্সা মুভ না করলে সেখানে কারো গাড়ি গ্যারেজ থেকে টেনে এনে পোড়ানো হয়নি। আর তাছাড়া হরতাল বা তার প্রভাব মুলত কেবল ঐ সময় টাতেই নয়, বরং তার আগে এবং পরেও থাকে। পুরো বিষয়টী বুঝেই ফতোয়া দিতে হয়।
03:55
Mohammad Ahsanul Haque Arif
এখন আপনি হয়তো বলতে পারেন তাহলে তো হরতাল দেয়াটাই অন্যায়। আচ্ছা, সৈন্য মুভ করাটা অন্যায় কিনা? বর্তমান ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টার ফরম্যাট আর রাসুল (স) এর ফরম্যাট কিছু এক না। কারন তখনকার পরিবেশ পরিস্থিতি আর এখনকার পরিবেশ পরিস্থিতি কিন্তু এক না। তখন মানুষ যুদ্ধ করতো সৈন্যরা এক ময়দানে এসে। এর বাইরে বাকী সবাইকে সিভিলিয়ান ধরা হত। এখনকার সময়ের কোন যুদ্ধটি এই রকম? এখন ইরাক, আফগানিস্তান বা ৭১ এর যুদ্ধ কোনটিই এমন না। আবার সিভিল ওয়ার যেটি দেশের নাগরিকদের মাঝে হয় তাও কোন জায়গায় ময়দানে হয় না। বরং টীভি, পত্রিকা, ম্যাগাজিন, বক্তব্য, মিছিল, মিটিং, হরতাল সব জায়গায় মিলিয়েই যুদ্ধ হয়। পৃথিবীর ফরম্যাট পরিবর্তন হয়, কিন্তু আফসোস যে মুসলিমদের চিন্তার ফরম্যাট পরিবর্তন হয় না। স্বাধেতো আর মুসলিমরা এই জিল্লতি আর গোলামীর জিন্দেগী পায়নি সারা পৃথিবিতে। এটী মুলত মুসলিমদের নিজেদের হাতের কামাই। কারন তারা এসি রুমে বসে জীবন সম্পর্কিত ফিলসফির রাজনপথের নীতিমালা ঠিক করতে চায়। পৃথিবীর বড় বড় কাফির দেশগুলো তা করেনি। আফসোস মুসলিমরা তাই করে। এইজন্যে তারা এখনো পৃথিবীতে গোলামীর জিন্দেগী যাপন করে। যারাই এতোদিন বলে এসেছিল রাজনীতি হারাম, তারা এখন রাজনীতি করে। যারাই এতোদিন বলে এসেছিল মিছিল হরতাল হারাম, তারাই কিছুদিন আগে মিছিল হরতাল দিয়ে তা হালাল হওয়া স্বীকার করে নিয়েছে। জ্বি হেজাজত তাবলীগ এদের কথাই বলছি। আফসোস যে সব হারামের ফতোয়াগুলো ঘানি টানতে হয় জামায়াতকে, কারন জামায়াতের দোষতো এটিই যে তারা যা হারাম নয়, তাকে কখনো হারাম বানায়নি অতি ইসলামের নাম দিয়ে। ইসলাম কোন বিষবিহীন সাপ নয় যে তার সাথে অনৈসলাম সহাবস্থান করতে পারে। বরং ইসলাম এমন বিষধর সাপ যার সাথে অনৈসলাম নতি সীকার করেই থাকতে হয়। চিন্তা করুন সেই দিনটির কথা যেদিন শান্তির ধর্ম ইসলামের অনুসারীরা বদর যুদ্ধের জন্যে কাফিরদের দিকে অগ্রসর হয়েছিল। চিন্তা করুন, কাফিররা কিন্তু যুদ্ধের জন্যে বের হয়নি, বরং তারা ফিরে যাচ্ছিল। মুসলিমরাই তাদেরকে যুদ্ধের জন্যে আহবান করেছিল। আসলে আমরা অনেক সময় খেদমতে দ্বীন আর সুফীজমের প্রভাবে পৃথিবীর কিভাবে আদর্শিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় তার বাস্তবতা ভুলে যাই। আর এই কারনেই আমাদের প্রজম্ন থেকে প্রজম্ম ইসলামকে আরো ইম্প্রাকটিক্যাল চিন্তা করে। কারন তারা তাদের জীবনের কোন প্রয়োজনীয় দিকেরই যুক্তিবোধ্য সমাধান আমাদের প্রচলিত ইসলাম থেকে পায় না। আমরা সবই হারাম করে রাখি, কিন্তু লাইফ কিভাবে সুন্দরভাবে লিড করতে হয় তার কোন সমাধান দিই না। এই জন্যে মুসলিমদের গোলামির জীবন আর জিল্লতি। এই হল আমার বুঝ।
03:55
Mohammad Ahsanul Haque Arif
পছন্দ হলে বা আপনার দ্বিমত থাকলে জানাবেন।
04:02
Mohammad Ahsanul Haque Arif
আরেকটা কথা। এভাবে প্রতিবাদের ভাষায় সমস্ত রাষ্ট্রে জনগন প্রতিপক্ষ হয় না, বরং ইনভলভ হয়। আর যদি প্রতিপক্ষ হয় চিন্তা করেন, তাহলে তা আওয়ামীলীগ বিএনপি বা অন্য ইসলামী দলগুলোর ক্ষেত্রেও হয়। কেবল আলাদাভাবে জামায়াত বা শিবিরের জন্যে হয়। কই তখনতো কারো মনে আসে না যে সমস্ত জনগন কি প্রতিপক্ষ হল নাকি। এখানে ইসলামের বিষয় নেই, কেবল রাজনৈতিকভাবে বুঝার বিষয় আছে। কারন রাষ্ট্র প্রতিপক্ষ হল কি হল না তা নিয়ে ইসলামের মাথা ব্যাথা নেই, মাথা ব্যাথা আছে রাজনৈতিক বিজয়ের হিকমার।
Today
16:58
Mehedi Hassan
আলহামদুলিল্লাহ্, আমি খুব সম্ভবত আমার জিজ্ঞাসার জবাব পেয়েছি।। সারকথা, হরতালকে ব্রড সেন্সে দেখতে হবে, ইন্ডিভিজুয়াল রহীম আলী করিম আলীর সেন্সে দেখার সুযোগ অন্তত এই যুগে নেই, এইত??? আমি রাসুল এবং তাদের সাহাবীদের জীবনীতে আমরা কোন নির্দেশনা পাই কিনা এই জিজ্ঞাসা করেছিলাম। এইটার উত্তরও সম্ভবত পেয়ে গেছি।
"মক্কার ইকোনমি ধ্বংসে কিন্তু কেবল মক্কার ধনীদের ক্ষতি হত না, মক্কা বিজয়ের সময় কিন্ত কেউ সৈন্য মুভ করায়নি, তাহলে মুসলিমরা কাকে আক্রমন করতে গিয়েছিল, কেন বলল যে যারা অমুক অমুক যায়গায় আশ্রয় নিবে তারা তারা নিরাপদ। কেন সেখানেতো সবাই সাধারন মানুষ ছিল, কেউ তো অশ্ত্র হাতে নেয়নি মক্কার, তাহলে কেন সবাই এমনিই রাস্তাঘাটে নিরাপদ থাকবে না? "
এখন আমি তো আপনার সাথে দ্বিমত করার কোন সুযোগ পাচ্ছিনা। কারণ দুটো হতে পারে, ১)আপনী যথার্থ ও সত্য বলেছেন ২)আপ্নার অনুপম বর্ণনাভঙ্গী ও যুক্তিবাদিতা । তবে, আমি আশা করি প্রথমটাই সত্য।।
আপনি অনেক সময় নিয়ে কষ্ট করে টাইপ করেছেন, আমি কৃতজ্ঞ।
সর্বশেষ প্রশ্ন, আপনি জুনিয়র হরলিক্স আর কমপ্লেন ছাড়া আর কি কি খান???
বিষয়: বিবিধ
২২৭৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন