এই দেশে ইসলাম বিদ্বেষী বুদ্ধিজীবীদের দিন শেষ, ইসলাম বিদ্বেষী সংস্কৃতি কর্মীদের দিন শেষ, নষ্ট ভ্রষ্ট বাম রাজনীতির দিন শেষ....

লিখেছেন লিখেছেন ডাক্তার মেহেদী ০৮ জুলাই, ২০১৩, ১২:১৯:২০ রাত



প্রায় তিন মাস আগে এই লিখাটি লিখেছিলাম। বরিশাল, খুলনা, সিলেট, রাজশাহীর পর রাজাকারের তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হল আর একটি নাম, গাজীপুর।। চেতনা ব্যাবসায় ভয়াবহ ধস।। এই চরম ক্রান্তি লগণে লিখাটি চরম প্রাসঙ্গিক হওয়ার কারণে আবারও পড়ার আমন্ত্রণ রইল।।

----------------------------------------

সময়টা ২০০৯ সালের কোন এক সময়। তখন রমজান মাস। সন্ধ্যায় টিভিতে একটা লাইভ টকশো দেখছিলাম। অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর একজন অধ্যাপিকা, খুব সম্ভবত ডঃ আমিনা মহসিন নাম। উনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড বিষেদাগার করছিলেন। হতবাক হয়ে শুনছিলাম উনার ক্রুদ্ধ হবার কারণ। উনার প্রচণ্ড বিদ্বেষের কারণ ছিল শুধুমাত্র এই যে, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ রমজান মাসে কেন ইফতার পার্টির আয়োজন করেছে! উনার ভাষায়, আওয়ামীলীগ যেহেতু একটি ধর্মনিরপেক্ষ দল, সেহেতু ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা ধর্ম নিরপেক্ষতার পরিপন্থী আচরণ। বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকাকেও উনি আওয়ামীলীগের দ্বিমুখী আচরণ বলে অভিমত প্রকাশ করেন।

এইটা শুধুমাত্র সামগ্রিক চিত্রের একটা ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। এই নষ্ট বাম ও কমিউনিস্টরা আওয়ামীলীগের মাঝে অনুপ্রবেশ করে এই দলকে তাদের অভীষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়নের একটি প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করেছে বছরের পর বছর। ১৯৪৯ সালে জন্ম নেয়া বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ একটি পোড় খাওয়া রাজনৈতিক দল, এদেশের মাটি ও মানুষের হৃদস্পন্দন ওরা না বুঝার কথা নয়। কিন্তু আপেলের সেই পোকাগুলো প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধর্মনিরপেক্ষতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, প্রগতিশীলতা, অসাম্প্রদায়িকতা এইসব গাল ভরা ঘুমপাড়ানিয়া শব্দের আড়ালে ইসলামী চেতনা, সংস্কৃতি, ইসলামী অনুশাসন কে কটাক্ষ করে চলেছে। এই মাটিতে স্লো পয়জনিং এর মত করে মিশাতে চেষ্টা করেছে পৌত্তলিক সংস্কৃতি। এই দেশের তথাকথিত বুদ্ধিবেশ্যাদের নিকট ইসলাম বরাবরই ছিল অস্পৃশ্য একটা শব্দ। নাটকে, সিনেমায়, পথনাট্যে সব থেকে খারাপ চরিত্রের ভিলেনটিকে উপস্থাপনা করা হয়েছে একজন দাড়িওয়ালা টুপিওয়ালা লোক হিসেবে যার কপালে কিনা আবার নামাজের দাগ। বৈশাখী র‍্যালি কিংবা বিজয় দিবসের র‍্যালিতে একজনকে দাড়ি, টুপি সাজিয়ে রাজাকার বানানো হয়েছে। অতীতে আমরা দেখেছি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের বর্ষবরণ শুরু হয়ছে উলুধ্বনি দিয়ে। কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে কোন অনুষ্ঠান শুরু করার কালচার প্রতিস্থাপিত হয়েছে মঙ্গল প্রদীপ দ্বারা। পার্বত্য চট্টগ্রামে বছরের পর বছর ধরে উপজাতি জনগোষ্ঠীকে খৃস্টান মিশনারীদের মাধ্যমে খৃস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করে, পার্বত্য অঞ্চলে একটি স্বাধীন খৃস্টান রাষ্ট্র গঠনের অপচেষ্টা এদেশের দেশপ্রেমিকের ভেকধারী বুদ্ধিজীবীরা জেনেও চুপ থেকেছে বছরের পর বছর। প্রকৃত অর্থে,তাদের নিকট এ দেশ, এ দেশের স্থিতিশীলতা, কোন রাজনৈতিক দল এর প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছিল, এ দেশের ইসলামিক তমদ্দুন ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ক্রুসেড ঘোষণা করে নাসির উদ্দিন, মুনতাসির গংরা তদস্থলে কলকাতার পৌত্তলিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছিল।

কিন্তু, গত ৯ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এ দেশের ইসলামী জনতার পুনর্জাগরণ এক মহাবিস্ফোরণ ঘটিয়েছে গতকাল ৬ এপ্রিলের লংমার্চ। এ এমন এক মহাজাগরণ, যা এ দেশের দেশপ্রেমিক মুসলমানদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে বছরের পর বছর, প্রজন্মের পর প্রজন্ম। এ এমন এক তীর যা বিদ্ধ হয়েছে শাহরিয়ার কবির এবং মীরজাফরদের বুকের অনেক গভীরে এক্কেবারে কলিজার ভিতর। আজ এই নষ্ট ভ্রষ্টরা প্রমাণ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে, "আমি কত বড় মুসলমান!!" ১৩ দফা মানা হোক আর না হোক শেষ কথাটি বলে দিয়েছেন দেশের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা আল্লামা শফী- " এ দেশে ক্ষমতায় থাকতে হলে এ গুলো মেনেই থাকতে হবে আবার ক্ষমতায় যেতে হলেও এ গুলো মেনেই যেতে হবে।" এই মেসেজটা বি এন পির জন্য ও। মানে কথা স্পষ্ট, এই দেশে ইসলাম বিদ্বেষী বুদ্ধিজীবীদের দিন শেষ, ইসলাম বিদ্বেষী সংস্কৃতি কর্মীদের দিন শেষ, নষ্ট ভ্রষ্ট বাম রাজনীতির দিন শেষ। এই দেশে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে চূড়ান্ত প্রভাব বিস্তার করার আগে প্রমাণ করতে হবে যে সে ইসলাম বিদ্বেষী নয়, এটাই চূড়ান্ত মেসেজ, এটাই চূড়ান্ত তীর।

বিষয়: বিবিধ

১৭১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File