রক্ত দিন,জ়ীবন বাঁচাতে সহায়তা করুন.....................
লিখেছেন লিখেছেন ফারাবী সোহান ২২ মার্চ, ২০১৪, ১২:০৮:২৮ রাত
রক্ত দান করাটা শুধু একটি অত্যন্ত ভালো কাজই নয়,বরং খুব গুরুত্বপূর্ণও বটে।খুব ভালো লাগে যখন দেখি মানুষের রক্ত দেও্যার ব্যাপারে আন্তরিকতা।কারণ রক্ত দেওয়ার মত মানবতা খুব কম কাজই আছে।আর রক্ত দেওয়ার ফলে আমরা একজন মানুষের কতটা উপকার করি,তার মনে যে কতটা আনন্দ দেই, তার মনের মধ্যে যে কতটা প্রশান্তি এনে দেই তা আসলে নিজের বেলায় না হলে বুঝা খুব কষ্টকর......
কিন্তু সবচেয়ে অবাক লাগে তখনই যখন দেখি আমাদের মত তরুণরা (যারা দেওয়ার জন্য শারিরীকভাবে সমর্থ) রক্ত না দেওয়ার ব্যাপারে দেখায় আজব আজব সব কারণ !!!...কেউ বলে কালকে ফুটবল খেলা, কেউ বলে কাল পরীক্ষা, কেউ বলে কোনোদিন দেইনি তাই ভয় লাগে,কেউ অনেক রাত হয়ে গেছে তাই আসতে পারবেনা, কেউ বলে বাসার গেইট বন্ধ করে দিবে! আরো ইত্যাদি ইত্যাদি। কি অবাক করা বিষয়, ফুটবল খেলার জন্য যদি কেউ রক্তদানের ব্যাপারটা ডিনাই করে তখন আর ২য় বার মনে ইচ্ছা জাগেনা যে তাকে বলি ভাই রক্তটা খুব জরুরী। কি পরিমাণ বিভৎস চিন্তা নিয়ে কেউ এরকমটা বলতে পারে ! আর তাছাড়া কেউ যদি রক্ত দেওয়ার জন্য খেলাটা মিস করতে হয় তাহলে কি তার কোনো ক্ষতি হয়ে যাবে!!? রক্ত দেওয়ার চেয়ে কি খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ!!? আমি জানিনা তার নিজের বাবা-মা কিংবা অন্যান্য আত্নীয় এমনকি নিজের ক্ষেরেও যদি কারো কাছে রক্তের জন্য চায় আর তখন যদি কেউ খেলার কথা বলে রক্ত দেওয়ার ব্যাপার ডিনাই করে তার কেমন লাগবে !?
অনেকের আবার পরীক্ষা সমস্যা ! প্রথমত বলি যে, রক্ত দিলে শরীরের আসলে কোনো প্রবলেমই হয়না ,আলহামদুলিল্লাহ। সেই ক্ষেত্রে যখন কেউ পরীক্ষার দোহাই দিয়ে একজন রক্ত দিতে না চায় তখন আমারো তাদেরকে খুব জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে আপনার মায়ের জন্য যদি কারো কাছে ইমার্জেন্সি রক্ত চায় আর তখন যদি সে পরীক্ষার দোহাই দিয়ে তার মাকে কিংবা ভাইকে কিংবা বাবাকে কিংবা তার নিজেকেই জীবনকেই অনিশ্চয়তার মাঝে ঠেলে দিয়ে রক্ত না দেয় তখন তার ক্ষেত্রে কি হবে !? তাও সেই কাজটি যদি আবার করে এমন কেউ যে কিনা খুব চেনা জানা ভাই-বন্ধু কিংবা অত্যন্ত কাছের ভাই-বন্ধু !! পরীক্ষা কি একটা মানুষের জীবনের চাইতেও মুল্যবান !!??...রক্ত দেওয়ার পর যদি কেউ অসুস্থতা অনুভব করে তাইলেও তো রক্ত না দেওয়ার ক্ষেত্রে পরীক্ষা কিংবা অন্যান্য অজুহাত খাটেনা...আর রক্ত দিলেতো তেমন কিছুই হয় না।
আমি তাদেরকেও অন্তত স্বাগত জানাই যারা রক্ত দিতে গেলে একটু ভয় ভয় পায়...।।কারণ তাদের ভয়কে ইন শা আল্লাহ কাটানো যাবে, কিন্তু যারা রক্ত দেওয়ার ব্যাপারে অযৌক্তিক এবং খুব মৃদু অজুহাত দেখায় তাদেরকে কখনো বোঝানো যাবেনা যদি না তাদের মধ্যে মানুষের জন্য নূন্যতম মানবতাবোধ না থাকে কিংবা ভাতৃ্ত্ব্বোধ না থাকে......তাদের চোখ হয়তোবা সেদিন খুলবে যেদিন অন্য কারো এই ধরনের মৃদু অজুহাতের জন্য তার নিজের কোনো ক্ষতি হয়ে যাবে !!
"আর আমি মন থেকে বলছি অন্তত যারা এই ধরনের মানসিকতা নিয়ে চলেন তারা আমার ভাই না, যদিও তারা হয়তোবা পরিস্থিতি - প্রেক্ষাপটের কারনে আমার খুব কাছে কেউ হয়ে গেছেন। আমার এমন কোনো ভাই-বন্ধু দরকার নেই যে সামান্য পরীক্ষার জন্য, কোনো প্রকার খেলা-ধূলা করার জন্য বেশী রাত হয়ে যাওয়ার জন্য কিংবা অলসতার জন্য রক্ত দেওয়ার ব্যাপারটি সরাসরি কিংবা সিস্টেমেটিক ভাবে প্রত্যাখ্যান করে।কারণ আমার নিজের ক্ষেত্রে লাগলেও যে তারা আমাকে তাদের ওইসকল পরিস্থিতিতে আমাকে ডিনাই করবেনা এবং বিপদের মুখে ঠেলে দিবেনা তার নিশ্চয়তা কি !!?"
তাই আমি সবার কাছে একটাই অনুরোধ করবো যে কেউ যখন আপনার কাছে রক্ত চায় আর আপনি যদি দেওয়র মত সমর্থ হোন তবে মানা করার আগে একবার বিবেচনা করে দেখবেন যে যেই কারণে মানা করছেন সেই কারণটা আসলে মানুষের জীবনের চাইতেও বেশী মুল্যবান কিনা। নিম্নোক্ত আয়াতটি দেখে অন্তত আমরা যারা মুসলিম আছি তারা সচেতন হতে পারি...............
"এ কারণেই আমি বনী-ইসলাঈলের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবাপৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে। এবং যে কারও জীবন রক্ষা করে, সে যেন সবার জীবন রক্ষা করে। তাদের কাছে আমার পয়গম্বরগণ প্রকাশ্য নিদর্শনাবলী নিয়ে এসেছেন। বস্তুতঃ এরপরও তাদের অনেক লোক পৃথিবীতে সীমাতিক্রম করে। " (সূরা আল মায়েদাহ:32)
আল্লাহ সুবহানওয়া তা'আলা আমাদের সকলকে বুঝার তৌফিক দান করুন......।
বিষয়: বিবিধ
১৩২৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন