“কথিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ/বিশৃংখল মানবতা” বনাম "ইসলামের সামঞ্জস্যপূর্ণ/শৃংখল মানবতা"……
লিখেছেন লিখেছেন ফারাবী সোহান ০৫ জুলাই, ২০১৩, ০৩:৪৫:৫৬ রাত
Exapmle 01 (বাস্তব): সাভার ট্র্যাজেডির ঘটনার পর একদিন একাত্তর টিভির টক শোতে রোকেয়া প্রাচীরকে বলতে শুনলাম যে (আমার ভাষায়),”এই যে এখানে উদ্ধারকর্মীরা একসাথে মিলেমিশে কাজ করছে,এই যে একটা দারুণ মানবতার বিষয়,এখানে দেখা হচ্ছেনা যে,কোনো ছেলে কোনো মেয়েকে তুললো কিনা কিংবা কে কাকে সাহায্য করছে এইটা দেখার বিষয় না।এখানে মানুষ মানুষকে সাহায্য করছে এটাই বড় কথা।এটাইতো সবার কাম্য।“
হুম…খুব ভালো কথা,আপাত দৃষ্টিতে কথাটি মনে হবে যেনো কতই না মধুর।কিন্তু একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায় যে এই মানবতার তো কোনো দরকারই ছিলোনা যদি না রানা প্লাজা ধ্বসে না পরতো !দরকার ছিলোনা এতো এতো রক্ত দানের,ত্রান সামগ্রীর,হাহাকারময় এক পরিবেশের,চারিদিক থেকে স্বেচ্ছাসেবক দলগুলার সাহায্য করার জন্য হুমরি খেয়ে পড়া !!আজকে যদি রানা প্লাজা না ই ধ্বসে পড়ত তাহলে কি কোনো দরকার ছিলো এইরকম মানবতার?!অথচ রানা প্লাজা যেনো না ধ্বসে পড়ে সেই ব্যবস্থাই ছিলো কিন্তু আসল মানবতা।কিন্তু সেইটা সবার চোখেই তেমন কিছু না।যেমন – বিল্ডিং করার অনুমোদন,সঠিক ফাউন্ডেশন,চুরি-চামারি বাদ দিয়ে ভালো করে কনস্ট্রাকশনের কাজ,বিল্ডিং এ ফাটল দেখার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ইত্যাদি জিনিষগুলা যদি সঠিকভাবে করা হত তাহলে হয়তোবা এই রকম ঘটনা নাও ঘটতে পারত (যদিও সব কিছু আল্লাহই ভালো জানেন)।আমার উল্লেখ করা উপরের প্রতেকটি কারণই ইসলামে কঠোরভাবে অবশ্যপালনীয় কাজ।যেমন-অবৈধ অনুমোদনের জন্য ঘুষ না খাওয়া,কাচামালের ক্ষেত্রে আমানতের খিয়ানত না করা,বরাদ্দ করা টাকা থেকে ১ টাকাও না মারা,শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া এইসবই হলো ইসলামিক বিধান।আর এই বিধান মানলে আর অতশত মানবতা দেখানো লাগতনা।নিয়মমাফিক মানবতা দেখালে আর অনিয়মমাফিক মানবতা খুব কম ক্ষেত্রেই দেখাতে হয়।কিন্তু সুশীলগণ সেইটা নিয়ে আর বলবেননা,কারণ পাছে যে ইসলামিক রুল্টাই না আবার কায়েম করার কথা বলতে হয় !!
Example 02 (কাল্পনিক): মনে করুন একজন ব্যক্তি মদ পান করে মাতাল অবস্থায় রাস্তায় গাড়ী চালাচ্ছে।ফলে সে রাস্তায় নিয়ণ্ত্রণ হারিয়ে একজনকে আহত করলো।লোকজন সেই আহত ব্যক্তিটিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলো।তারপর মাতাল ব্যক্তিটির ঘোর কাটার পর সে আহত ব্যক্তিকে দেখার জন্য হাসপাতালে গেলো এবং সর্বোচ্চ ভালো চিকিৎসার জন্য যত টাকা লাগে সব দিলো এবং সাথে তাকে ভালোরকমের ক্ষতিপূরণও দিলো।আপাতো দৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে যেনো লোকটা কতই না ভালো!আহত ব্যক্তির জন্য দারুণ মানবতা দেখিয়েছেন।কিন্তু আসল জিনিষটা আর কারো মাথাতেই আসবেনা।কারণ এই আহত পরবর্তী মানবতাটা আর প্রয়োজনই ছিলোনা যদিনা লোকটা মদ না খেয়ে মাতাল অবস্থায় গাড়ি না চালাতো,তাহলে হয়তোবা এতো বড় আ্যক্সিডেন্টও ঘটতনা (যদিও আল্লাহই ভালো জানেন)।এখানে টাকা দিয়ে এবং ক্ষতিপূরণ দিয়ে আহত ব্যক্তিকে সাহায্য করাটা হলো বিশৃংখল মানবতা,আর মদ না খাওয়াটাই হলো ইসলামের কঠোর আইন।একইভাবে মদের লাইসেন্স না দেওয়া,মদের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া,মদের বিক্রি অনুমোদন না দেওয়া,আমদানী-রপ্তানীতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা।ইসলামের এই মানবতাগুলো মানলে কি কোনো দরকার আছে ফেইক মানবতাগুলো দেখানোর?!!
ইসলাম আসলে নিজেই মানবতার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ।এর নিয়ম-কানুনগুলোই মানবতা,তবে সু-শৃংখল।কারণ ইসলাম সবসময় “Prevention is better than cure” নীতিতে চলে
(বিঃদ্রঃ তার মানে এই নয় যে ইসলাম কোনো একটি দুর্ঘটনা ঘটে গেলে সেখানে তার প্রতিকারের কথা মানা করে! কারণ সব কিছুই আল্লাহই ভালো জানেন।তাই ইসলাম যেই কাজটা করে সেটা হলো এই যে, দুর্ঘটনা থেকে পরিত্রানের পথ দেখিয়ে দেয়।তার মানে এই না যে, দুর্ঘটনা ঘটবেনা !!)
বিষয়: বিবিধ
১৫৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন