এদের থেকে সাবধান হোন!
লিখেছেন লিখেছেন আবাবিল পাখি ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১২:২২:৫২ দুপুর
ইতোমধ্যে ওরা আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি করে ফেলছে। কিভাবে তাগুত মিডিয়াগুলো আমাদেরকে খন্ড-বিখন্ড করে ফেলছে তা এই ঘটনাটা পড়লেই কিছুটা হলেও বুঝতে পারবেন।
মিশরে মুরসী বিরোধী সেনা সমর্থিতরা ফেসবুকে ব্রাদারহুডের নামে একটি পেজ খুলে। সেখানে তারা একটি ভুয়া ফতোয়া পোষ্ট করে- ব্রাদারহুড সমর্থকরা ‘সেক্সুয়াল জিহাদ’ চালু করেছে। রাবেয়া স্কয়ারে মুরসী সমর্থক পুরুষরা নারীদের সাথে সেক্স করতে পারবে! পরে দেখা যায় এটা সম্পূর্ণ ভুয়া। নিছক সেনা সমর্থিতদের একটি অপপ্রচার। আর এই ভুয়া ফতোয়াটিকে তথাকথিত বিশ্ব সেরা মিডিয়া ‘ওয়াশিংটন টাইমস’ কনভার্ট করে আরেক দফা অপপ্রচার চালায়। বেশ ইন্টারেস্টিংও বটে! তারা বলে ‘পূর্বাঞ্চলীয় ইরাকের এক সরকারী কর্মকর্তা আমাদের জানিয়েছেন, সিনিয়র মুজাহিদীনরা ফতোয়া দিয়েছেন-শহীদ মুজাহিদীনদের বিধবা স্ত্রীরা সিরিয়ার মুজাহিদীনদের সাথে ফ্রী সেক্স করবেন যাতে করে মুজাহিদীনরা চাঙ্গা থাকেন।’ দেখেন কোথাকার পানি কোথায় গড়িয়েছে! একটা ভুয়া খবরকে তারা রঙ্গিয়ে-চঙ্গিয়ে একেবারে ইরাক হয়ে সিরিয়া পৌছে দিয়েছে!! অনেক মানুষ এটা বিশ্বাসও করেছে।
এসব অপপ্রচারে সাধারণ মানুষ কিভাবে চরমভাবে বিভ্রান্ত হয় তা একটি উদাহরণের মাধ্যমে বুঝা যাক। ধরেন, একজন লোক ফেবুতে স্ট্যাটাস দিলো-সিনিয়র মুজাহিদীনরা ফতোয়া দিয়েছেন-শহীদ মুজাহিদীনদের বিধবা স্ত্রীরা সিরিয়ার মুজাহিদীনদের সাথে ফ্রী সেক্স করবেন যাতে করে মুজাহিদীনরা চাঙ্গা থাকেন। ওরা এতোই খারাপ, আমিতো আগে জানতামনা!' এখন ওই স্ট্যাটাসের একজন পাঠকের খটকা লাগায় তিনি বললেন- ভাই এটার স্বপক্ষে প্রমাণ কি? স্ট্যাটাস পোষ্টার ধরেন প্রথম আলোতে প্রকাশিত ওটার লিংক দিলেন। তাতেও তার খটকা গেলনা। পোষ্টার আবার সমকালের লিংক দিলেন। তখনো খটকা গেলনা। এরপর সে তাকে ওয়াশিংটন টাইমস এর ওই ভুয়া লিংক দিলো। এরপর ওই পাঠকের সব খটকা দূর হয়ে গেলো। আসল ঘটনা কিন্তু আর জানতে পারলেননা!! তিনিও তখন ওই মুজাহিদীনদের চৌদ্দ গোষ্টি উদ্ধারের নিমিত্তে অনলাইন-অফলাইনে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। অতঃপর ওই পাঠকের মেসেজ ভাইরাসের মত ছড়িয়ে পড়লো।
এভাবেই কিন্তু তাগুত মিডিয়া মুসলমানদের একটি বিরাট অংশকে বুঝিয়ে ফেলছে যে, দাঁড়ি-টুপি, নিয়মিত নামাজী, বুযুর্গ, হিজাবী, বোরকাওয়ালা, তাগুতের অন্যায়ের বিরোদ্ধে অস্ত্রধারীরা হচ্ছে টেররিষ্ট, জঙ্গী, মৌলবাদী ইত্যাদি। এই মিডিয়াগুলোর অপপ্রচার এমন অবস্থায় দাড়িয়েছে, তথাকথিত মডারেট মুসলিমরা কয়েক ধার্মিক ছেলে অথবা বোরকা পরা মেয়ে দেখলেই ভাবে ওরা কোথাও জঙ্গী হামলার চিন্তা-ভাবনা করছেনাতো!! হয়ত সামান্য নির্জন কোনো জায়গায় কয়েকটা দাঁড়ীওয়ালা ছেলে আড্ডা দিচ্ছে, কোন একজনের হাতে হয়ত একটা আদর্শ নারী বা মাসিক মদীনা টাইপের ইসলামিক ম্যাগাজিন আছে। তাদের পাশ দিয়ে আইন শৃংখলা বাহিনী যাচ্ছিলো। আর যায় কই, ওদেরকে গ্রেফতার করা হোক; নিশ্চয়ই ওরা কোথাও গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা করছে। অতঃপর একাত্তর, এটিএন নিউজ এদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন- ভয়ংকর সব নাশকতার পরিকল্পনাকারী তমুক সংস্থার সাত সদস্যকে অমুক জায়গা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের সাথে অনেক জিহাদি বই ছিলো।
কয়েকদিন আগে এরকমভাবে মুফতি জসীম উদ্দীন রাহমানীকে তার কয়েকজন সঙ্গীসহ গ্রেফতার করে মিডিয়া ট্রায়াল চালানো হয়েছে, রিমান্ডে নির্যাতন করা হচ্ছে। বরিশাল থেকে ছাত্রী সংস্থার ২২ সদস্যকে গ্রেফতার করে জেলে প্রেরণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে তারা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য বৈঠক করছিলো।
তাই কোনো খবর আসলে প্রথমেই যাচাই করতে হবে এটা কতটুকু সত্য, কোন ভাবধারার মিডিয়া এটা প্রকাশ করেছে।
ভুয়া খবর দুটির লিংক- http://english.alarabiya.net/en/variety/2013/07/13/Pro-Mursi-protesters-are-awaiting-signal-for-sexual-Jihad-report-.html
http://www.washingtontimes.com/news/2013/aug/26/al-qaeda-urges-fighters-widows-show-support-throug/?utm_source=RSS_Feed&utm_medium=RSS#.Uh-9hfB16U0.facebook
বিষয়: বিবিধ
৩৭০৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন