Then…??? 0 hrs left for religious study, ঐশীরা এরকম হতে বাধ্য
লিখেছেন লিখেছেন আবাবিল পাখি ১৮ আগস্ট, ২০১৩, ১২:১২:৪১ দুপুর
বেশ কিছুদিন থেকে দেশী চ্যানেলগুলোতে একটি প্রবণতা দৃষ্টিকটুভাবে বাড়ছে। চ্যানেলগুলো টিনএজ ছেলে-মেয়েদের নিয়ে টকশো টাইপের প্রোগ্রাম করে। বিষয় বস্তু থাকে-কিভাবে নিজেকে বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে, আধুনিক পোষাক-আশাক কিভাবে স্মার্টলি পরতে হবে, নিজেকে কিভাবে আরো স্মার্ট করে গড়ে তুলতে হবে এইসব। প্রায় বেশীরভাগ সময় দেখি এখানে আসা টিনএজ ছেলে-মেয়েরা থাকে হাংকু-পাংকু টাইপের। ছেলেদের থাকে উদ্ভট হেয়ার ষ্টাইল, তেরেবেরে মার্কা ড্রেস আপ। মেয়েরাতো মাশাআল্লাহ, এতো আটসাঁট কাপড়-চোপড় পরে আসে মনে হবে সুপার গ্লু দিয়ে শরীরের সাথে লেপ্টে এসেছে, একটাও সামান্য ওড়না পর্যন্ত ব্যবহার করতে রাজি নয়। কদাচিৎ দেখা যায় কেউ ওড়না নামক একখানা ছোট তেনা পরে আসে, তবে ওই পর্যন্তই, এটা শুধু গলাতেই পেচানো থাকে! ভাব-সাব এমন যে ওড়না আসলে বুকে না, গলায় পেচিয়ে রাখতে হয়!! এই যে টিনএজ মেয়েরা ঘর থেকে আব্রুবিহীন এই সুরতে বের হয় তখন বাবা-মায়েরা কই থাকে???
একটা সময় ছিলো ছোটবেলা আমরা প্রায় সবাই মসজিদ-মক্তবে আরবী পড়তাম, হুজুররা ঘটে যাওয়া বিভিন্ন শিক্ষণীয় উদাহরণ আমাদের কাছে শেয়ার করতেন আর আমরা গোগ্রাসে তা গিলতাম। আর এখনকার ছেলে-মেয়েরা? ঘুম থেকে উঠেই সকাল সাতটা-আটটায় স্কুলে চলে যায়, আসে দুপুর ২টা কিংবা বিকাল ৪টায়। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম। তারপর বিকেল পাঁচটায় কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে দে ছুট ‘১০০% গ্যারান্টেড A+ কোচিং’ সেন্টারে। সেখান থেকে আসতে আসতে প্রায় সাড়ে ছয়টা-সাতটা হয়ে যায়। সান্ধ্যকালীন নাস্তা-টাস্তা খেয়ে আটটার দিকে আবার আমার মত প্রাইভেট টিউটরদের হানা। যথারিতি চলে প্রায় দশটা পর্যন্ত। তারপর দশটা থেকে রাত আনুমানিক ২টা পর্যন্ত চলে খাওয়া-দাওয়া, ষ্টার জলসা, ষ্টার প্লাস, লাক্স-চ্যানেল আই সুপার ষ্টার মার্কা বড়ি খাওয়া পর্ব। Then…??? 0 hrs left for religious study. অবশ্য অনেকে এর মধ্য থেকে ধর্ম শিক্ষার জন্য সময় বের করে নেন, তবে তা অপর্যাপ্ত। ফলাফল- জিজ্ঞাসা করলে এরা সূরা ফাতিহা পর্যন্ত ভালোভাবে পড়তে পারেনা কিন্তু আউল-ফাউল যত হিন্দি, বাংলা, ইংরেজী গান-বাজনা আছে সব হ্যারিকেনের বেগে মুখ দিয়ে বের হয়ে আসে। মা-বাবারা তখন কই থাকে???
বাবা-মা থাকেন বড় বড় অফিসিয়াল অথবা বড় ব্যবসায়ী। চলাফেরা সব বড়লোক-প্রভাবশালীদের সাথে। নামী-দামী সব প্রোগ্রামে পার্টিসিপেট করেন, বিদেশে যান। বাসায় এসে ছেলে-মেয়েদের সাথে শেয়ার করেন-আজকে ইয়া বড় প্রোগ্রাম করে আসলাম, এমপি-মন্ত্রী কেনা ছিলো! কিন্তু তারা কখনো পারিবারিকভাবে নবী-রাসূল, সাহাবী, ওলী-আউলিয়া, বিখ্যাত মুসলিম ব্যক্তিত্বদের নিয়ে আলোচনা করেন না, ঘরে রাখতে চাননা ধর্মীয় দরকারী বইগুলো, পাছে যদি সন্তানরা বিত্ত-বৈভব বাদ দিয়ে ধর্ম-কর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে! সর্বনাশ!! দরকার নেই ঘরে রাখার এসব আপদের!!! পারতপক্ষে একটি কোরআন শরীফ রাখে কিন্তু ওটা থাকে ধূলী-বালীর দখলে আর হুমায়ুন আজাদদের বই থাকবে অতি সযতনে। ওরা নষ্ট হওয়ার জন্য তাহলে দায়ী কে??? ওই বাবা-মারাই।
ছেলে কোথায় যাচ্ছে, কাদের সাথে থাকছে, কি করছে, বাইরে বন্ধুদের সাথে জুস খাচ্ছে না গাঞ্জা খাচ্ছে তার খবর রাখার কোনো গরজ নেই। মেয়ে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় যথাযথ পর্দা করছে কিনা, তার সাথে কারা সঙ্গ দেয়, মেয়ে কেন দেরী করে বাসায় আসে সেদিকে মা-বাবার ভ্রুক্ষেপ নেই। ওরা নষ্ট হওয়ার জন্য তাহলে দায়ী কে??? ওই বাবা-মারাই।
স্বামী অসৎভাবে অর্থ উপার্জন করে কিন্তু স্ত্রী স্বামীকে অসৎ উপার্জনে বাধা দেয়না। আর অসৎভাবে উপার্জিত ধন-সম্পদে কোনো বরকত থাকেনা। আর বরকত থাকেনা বলেই এই টাকা দিয়ে গড়ে তোলা সন্তানরাও অসৎ পথে চালিত হয়।
এইযে ঐশীর বাবা মাহফুজুর রহমান(আল্লাহ তাদেরকে মাফ করুক) পুলিশের এসবির কর্মকর্তা, কে জানে হয়ত তিনি কত মায়ের অভিশাপ নিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। কত মায়ের সন্তান তাদের দ্বারা ধৃত হয়ে খুন হয়েছেন, গুম হয়েছেন, পা হারিয়েছেন, মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জীবনের সব স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ করেছেন, রিমান্ডে নিয়ে একদা সদা হাস্যোজ্জ্বল, অমায়িক, বন্ধুবৎসল, সুঠাম মানুষ গুলোকে হুইল চেয়ার উপহার দিয়ে জামিনের ব্যবস্থা করেছেন কিন্তু একবারও কি তার নিজ সন্তান অথবা নিজেরা এরকম নির্মম নিষ্টুরতার শিকার হতে পারেন তা চিন্তা করেছেন??? এগুলা যত তাড়াতাড়ি বুঝা যাবে, ততই সবারই মঙ্গল।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে জাহেলিয়্যাত থেকে রক্ষা করুন।
বিষয়: বিবিধ
২২০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন