যে অধীকার দেয়নি কেউ!

লিখেছেন লিখেছেন ডাঃ হাবিবুর রহমান ০১ জুন, ২০১৩, ০২:১১:২৭ দুপুর

যে অধীকার দেয়নি কেউ কখোনো নারীকেঃ ইসলাম এর আগে

১। পুরুষকে অবশ্যই উপযুক্ত মোহরানা দিয়ে বিয়ে করতে হবে কোন নারীকে। পরিষোধ না করলে স্ত্রী বৈধ হবেনা। বরং কবীরা গোনাহ হবে। আর তার জন্য ভোগ করতে হবে কঠিন শাস্তি।

কোরআনের আয়াত - “নারীদের তাদের মোহরানার অংক একান্ত খুশী মনে তাদের (মালিকানায়) দিয়ে দাও, অতপর তারা যদি নিজেদের মনের খুশিতে এর কিছু অংশ তোমাদের (ছেড়ে) দেয়, তাহলে তোমরা তা খুশী মনে ভোগ করতে পারো। [সুরা - আন-নিসা, আয়াত - ০৪]

২। নাবালিকা নারীর [কণ্যা অথবা বোন] লালন-পালনের দ্বায়িত্ব পিতার ও ভাইদের।

৩। স্ত্রীর ভরোন-পোষন এর দায়ভার একান্তই স্বামীর। স্ত্রীদের সে দায়ভার একেবারেই নাই।

কোরআনের আয়াত - আল্লাহ তায়ালা যে সম্পদকে (দুনিয়ায়) তোমাদের প্রতিষ্ঠা লাভের উপকরণ হিসাবে বানিয়ে দিয়েছেন, তা এই নির্বোধ (স্ত্রী) লোকদের হাতে ছেড়ে দিয়ো না, (অবশ্যই এ থেকে) তাদের (স্ত্রী) খাওয়ার ব্যবস্থা করবে, তাদের পোষাক সরবরাহ করবে, (সর্বোপরি) তাদের সাথে ভালো কথা বলবে। [সুরা - আন-নিসা, আয়াত - ০৫]

৪। নারীদের জন্য সম্পদের উত্তরাধীকার হিস্যা ঃ

# পিতার সম্পদে কণ্যা হিসাবে পাবে ৩ (তিন) ভাগের ১ (এক) ভাগ অর্থাৎ ভাই যা পাবে বোন পাবে তার অর্ধেক। ভাই ঃ বোন = ২ ঃ ১ অনুপাতে।

# স্বামীর সম্পদে স্ত্রী হিসাবে পাবে ৪ (চার) ভাগের ১ (এক) ভাগ অর্থাৎ স্বামীর পরিত্যাক্ত মোট সম্পদের ৩ ঃ ১ অনুপাতে যদি কোন সন্তান না থাকে। সন্তান থাকলে ৮(আট) ভাগের ১ (এক) ভাগ অর্থাৎ ৭ ঃ ১ অনুপাতে।

# ছেলের সম্পদে মা হিসাবে পাবে ৩ (তিন) ভাগের ১ (এক) ভাগ অর্থাৎ ছেলের পরিত্যাক্ত মোট সম্পদের ৩ ঃ ১ অনুপাতে যদি কোন সন্তান না থাকে। সন্তান থাকলে ৬ (ছয়) ভাগের ১ (এক) ভাগ অর্থাৎ ৫ ঃ ১ অনুপাতে।

# ভাইয়ের সম্পদে বোন হিসাবে পাবে ২ (দুই) ভাগের ১ (এক) ভাগ, যদি মৃত ব্যাক্তির পিতা-মাতা, সন্তান না থাকে এবং সে যদি একমাত্র বোন হয়। আর যদি দুই বোন হয় তাহলে পাবে দুই-তৃতীয়াংশ সমান ভাবে। আর যদি ভাইও থাকে বোনও থাকে তাহলে মেয়েদের অংশ এক ভাগ ও পুরুষের অংশ দুই ভাগ হবে, অর্থাৎ ২ ঃ ১ অনুপাতে।

কোরআনের আয়াত - (মৃত ব্যক্তির সম্পদ) বন্টনের সময় যখন (তার) আপনজন, এতীম ও মিসকীনরা (সেখানে) এসে হাজির হয়, তখন তা থেকে তাদেরও কিছু দেবে এবং তাদের সাথে সুন্দরভাবে কথা বলবে। [সুরা - আন-নিসা, আয়াত - ০৮]

কোরআনের আয়াত - আল্লাহ তায়ালা (তোমাদের উত্তরাধিকারে) সন্তানদের সম্পর্কে (এ মর্মে) তোমাদের জন্য বিধান জারি করেছেন যে, এক ছেলের অংশ হবে দুই কণ্যা সন্তানের মতো, কিন্তু (উত্তরাধিকারী) কণ্যারা যদি দুয়ের বেশী হয় তাহলে তাদের জন্য (থাকবে) রেখে যাওয়া সম্পত্তির দুই তৃতীয়াংশ, আর (সে) কণ্যা সন্তান যদি একজন হয়, তাহলে তার (অংশ) হবে (পরিত্যক্ত সম্পত্তির) অর্ধেক (যদি মৃত ব্যাক্তির পুত্র সন্তান না থাকে) ; মৃত ব্যাক্তির সন্তান থাকলে তার পিতা-মাতা প্রত্যেকের জন্যে থাকবে (সে সম্পদের) ছয় ভাগের এক ভাগ, (অপর দিকে) মৃত ব্যাক্তির যদি কোন সন্তান না থাকে এবং পিতা-মাতাই যদি হয় (তার একমাত্র) উত্তরাধিকারী, তাহলে তার মায়ের (অংশ) হবে তিন ভাগের এক ভাগ, যদি মৃত ব্যাক্তির কোন ভাই-বোন (বেচে) থাকে তাহলে তার মায়ের (অংশ) হবে ছয় ভাগের এক ভাগ, (মৃত্যুর) আগে সে যা ওসিয়ত করে গেছে এবং তার (রেখে যাওয়া) ঋণ আদায় করে দেয়ার পরই (কিন্তু এ সব ভাগ-বাটোয়ারা করতে হবে); তোমরা জান না তোমাদের সন্তান-সন্ততির মধ্যে কে তোমাদের জন্যে উপকারের দিক থেকে বেশী নিকটবর্তী; (অতএব) এ হচ্ছে আল্লাহর বিধান, অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা সকল কিছু সম্পর্কে ওয়াকেফহাল এবং তিনিই হচ্ছেন বিজ্ঞ, পরম কুশলী। [সুরা - আন-নিসা, আয়াত - ১১]

কোরআনের আয়াত - তোমাদের স্ত্রীদের রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে তোমাদের অংশ হচ্ছে অর্ধেক, যদি কোন সন্তানাদি না থাকে, আর যদি তাদের সন্তান থাকে তাহলে (সে সম্পত্তিতে) তোমাদের অংশ হবে চার ভাগের এক ভাগ, তারা যে ওসিয়ত করে গেছে কিংবা (তাদের) ঋণ পরিশোধ করার পরই (কিন্তু তোমরা এই অংশ পাবে); তোমাদের স্ত্রীদের জন্যে (থাকবে) তোমাদের রেখে যাওয়া সম্পত্তির এক চতুর্থাংশ, যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে, যদি তোমাদের সন্তান থাকে, তাহলে তারা পাবে রেখে যাওয়া সম্পদের আট ভাগের এক ভাগ, (মৃত্যুর আগে) তোমরা যা ওসিয়ত করে যাবে কিংবা যে ঋণ তোমরা রেখে যাবে তা পরিশোধ করে দেয়ার পরই (এই অংশ তারা পাবে); যদি কোন পুরুষ কিংবা নারী এমন হয় যে, তার কোন সন্তানও নাই পিতা-মাতাও নাই (শুধু) আছে তার এক ভাই ও এক বোন, তাহলে তাদের সবার জন্যে থাকবে ছয় ভাগের এক ভাগ, (ভাই-বোন মিলে) তারা যদি এর চাইতে বেশী হয় তবে (মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পদের) এক-তৃতীয়াংশ তারা সবাই (সমান) অংশীদার হবে, অবশ্য (এ সম্পত্তির ওপর) মৃত ব্যক্তির যা ওসিয়ত করা আছে কিংবা কোন ঋণ (পরিশোধ) এর পরই (এ ভাগাভাগি করা যাবে), তবে (খেয়াল রাখতে হবে), কখনো উত্তরাধিকারীদের পাওয়ার পথে তা যেন ক্ষতিকর হয়ে না দাড়ায়, কেননা এ হচ্ছে আল্লাহর নির্দেশ; আর আল্লাহ তায়ালা সর্বজ্ঞানী ও পরম ধর্যশীল। [সুরা - আন-নিসা, আয়াত - ১২]

৫। ইসলামই প্রথম অন্ধকার যুগে কণ্যা সন্তান হত্যা করা বন্ধ করে।

৬। ইসলামই প্রথম বিধাবা নারীদের পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবার অনুমোদন দেয়।

৭। ইসলামই একমাত্র নারীদের পণ্য হওয়ার বিরোধীতা করে। তাদের মর্যাদার স্থানে আসন দেয়। সযতেœ ইজ্জত ও আব্র“র সাথে রাখার বিধান দেয় (যেমন মূল্যবান জিনিস মানুষ অত্যন্ত যতেœর সাথে গোপনীয়তার সাথে হেফাজত করে)। নারীদের পর্দার বিধান ও সেরকম একটি বিধান যা তাদের সম্ভ্রান্ত করেছে। অতি উত্তম মর্যাদা দান করেছে ঘরে ও বাইরে।

৮। ইসলামই একমাত্র (প্রথম) নারীদের শিক্ষার ব্যাপারে বিধান দিয়েছে (প্রত্যেক নারী ও পুরুষের উপর জ্ঞান অর্জন ফরজ করা হয়েছে)।

৯। ইসলামই সর্বপ্রথম দাসীদের মানুষের সম্মান দেয়, তাদেরকে বিবাহ করার অনুমোদন দেয় তাও আবার মালিকের সাথে। তাদেরকে সেই সকল খাবার পরিবেশনের কথা বলে যা মালিকেরা খায়। সেই সব পোষাক দিতে বলে যা মালিকেরা পরিধান করে। সর্বোপরি তাদের সাথে উত্তম ব্যাবহার করার কথা বলে।

বিষয়: বিবিধ

২৩৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File