ছি: ছি জামায়াতে ইসলামী এত খারাপ? আগে জানতাম নাতো এটা।
লিখেছেন লিখেছেন Deshe ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১২:১৫:৫২ দুপুর
বর্তমানে জামায়াতের যেসব নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে, তা যে মোটেই সত্য নয় তা আওয়ামী লীগ ভাল করেই জানে।
জামায়াতের এসব নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ কোন মতেই সত্য নয়,সেই জন্য এর স্বপক্ষে কোন প্রমানও নাই, তবে এ সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত অভিমত হল ঐইসব নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা বিরোধীতার যে অভিযোগ আনা হয় তা কিছুটা সত্য।
স্বাধীনতা বিরোধী আর যুদ্ধাপরাধ এক বিষয় নয়। দুইট ও পার্থক্যে আকাশ আর পাতাল।স্বাধীনতা বিরোধীতার জন্য জামায়াতের কোন নেতাকে ফাঁসি দেওয়া তো দূরের কথা যাবজ্জীবন জেলও দেওয়া যাবে না।
জাায়ায়াত এর স্বাধীনতা বিরোধীতার পোষ্টমার্টেম:-
যেহেতু আলাদা একটি ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করার জন্যই ভারত থেকে পাকিস্থান ভাগ হয়েছিল। নাম যদিও পূর্ব পাকিস্থান এবং পশ্চিশ পাকিস্থান ছিল কিন্তু ২৬ বছর এই দুই পাকিস্থান একসাথেই ছিল। এই একসাথে থাকাটা ভারতের প্রছন্দ হয়নি এই জন্য যে,এই দুই পাকিস্থান একসাথে থাকলে তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এই লক্ষ্যে ভারত দুই পাকিস্থানের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি গন্ডগোল বাঁধিয়ে একটি ফাঁদ সুষ্টি করে। আর এই ফাঁদে পা দেয় পশ্চিম পাকিস্থানের তৎকালীন গুন্ডা সরকার। ভারতের ফাঁদে পড়ে পশ্চিম পাকিস্থানের তৎকালীন সরকার এতটাই গুন্ডামি করে যে, তাতে পূর্ব পাকিস্থানের জনগন অতিষ্ট হয়ে উঠে। তৎকালীন জামায়াত নেতুবৃন্দ পূর্ব পাকিস্থানের জনগনের উপর চালানো পশ্চিম পাকিস্থান সরকারের এই অত্যাচারকে স্রেফ গুন্ডামি হিসেবে নিয়ে বৃহত্তর স্বার্থ অর্থ্যৎ ইসলাম রক্ষার স্বার্থে দুই পাকিস্থানের ঐক্য চেয়েছিল। ব্যাপারটা আরো পরিষ্কার করে বলা যায়,দুই পাকিস্থানকে আলাদা করে পাকিস্থানকে দূর্বল করে দেওয়ার প্রকৃত কৈৗশলটা জামায়াত নেতৃবৃন্দ খুব ভাল ভাবেই বুঝতে পেরেছিল। তাই তারা পশ্চিম পাকিস্থানী হানদার গোষ্টীর বিরোধীতা করলেও পাকিস্থান ভেংগে যাওয়াটা কামনা করেনি।
বর্তমান পেক্ষাপট,আপনি কাকে সমর্থন করেন?:
বর্তমান বিশ্বের রাজনীতির দিকে নজর দিলেই বিষয়টি আচ করা যাবে, আমেরিকা যেমন কুয়েত এবং ইরাকের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দিয়ে ইরাককে একঘরে করেছিল। কিন্তু আমরা তখন খোলা চোখে আমেরিকারর উদ্দেশ্যে বুঝতে পারিনি,বিংশ শতাব্দীতে এসে আমরা আজ কি দেখছি, আমেরিকার কুয়েত এর ঘাঁটি তথা মুসলিম দেশের ঘাঁটি ব্যবহার করেই ইরাক দখল করে নিল। কুয়েতসহ মুসলিম বিশ্ব এক সাথে থাকলে আমেরিকা কখনও ইরাক দখলে সাহস করত না। মুসলিমদের মধ্যে গন্ডগোল বাধিয়ে মুসলিমদের ঐক্য নষ্ট করার কাজটি আমেরিকা সফল ভাবেই করেছিল। আমেরিকার সূদূরপ্রসারি এই পরিকল্পনা বুঝতে পারলে ইরাক কখনও কুয়েতের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হত না। ব্যাপারটা বুঝতে পারলে কোন খাটি মুসলমানও কুয়েতকে ইরাকে হামলা বা ইরাককে কুয়েতে হামলার বিষয়টি সমর্থন দিত না। কারন আমেরিকা মুসলিম সভ্যতাকে ধ্বংস করার মিশনে নেমেছে। একে একে ইরাক,আফগানিস্থান,মিসর,তুরস্ক সব মুসলিম দেশই তারা আজ দখল করছে বা লিপ্ত রয়েছে।
আপনি যদি একজন সতেতন পাঠক এবং খাটি মুসলমান হন,তাহলে আমি আপনাকে প্রশ্ন করছি, আপনি কি আমেরিকার এই মিশনকে সমর্থন করবেন নাকি মুসলমানদের ঐক্য বজায় রাখাকে সমর্থন করবেন। আমি নিশ্চিত আপনি মুসলমান রাষ্ট্র গুলোর মধ্যে বিদ্যামান যুদ্ধকে সমর্থন না করে বরং তাদের ঐক্যকে প্রাধ্যন্য দেওয়াকে সমর্থন করবেন। আপনার এই সমর্থন একটি সভ্যতাকে রক্ষা করার সমর্থন। এই সমর্থন কেন দোষের হবে? এই সমর্থন দেওয়ার জন্য কেউ কি আপনার ফাঁসির দাবি তুলতে পারে?
এখন আসুন ১৯৭১ সালের কথায়,
একই ভাবে ১৯৭১ সালে দুই পাকিস্থানের মধ্যে গন্ডগোল বাধিয়ে পাকিস্থানকে আলাদা করার কাজটি ভারত সফল ভাবেই করেছিল। এই বিষয়টি বুঝতে পেরে ইসলামকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে তৎকালীন জামায়াত নেতৃবৃন্দ পাকিস্থান ভেংগে যাক তা সমর্থন করেনি। সমর্থন না করার মানে হত্যা,খুন,ধর্ষন করেছে তা মোটেও নয়। যদি কেউ করে থাকে তা ঘৃনা করি এবং তার বিচার চাই। তৎকালনি জামায়াত নেতৃবৃন্দ যে পাকিস্থানের ঐক্য কামনা করেছিল তার প্রমান তৎকালীন সময়ের পত্রিকা কাটিং। কিন্তু এই কথাও সত্য যে, তৎকালীন সময়ের পত্রিকাগুলো শাষক হানাদার পাকিস্থান সরকার সেন্সর করেই প্রকাশ করার অনুমতি দিত। তৎকালীন জামায়াত নেতৃবৃদ্ধ তাদের বিকৃত করা রিপোর্টের ব্যপারে কোন প্রতিবাদ লিপি পাঠালেও তা প্রকাশ করার অনুমতি দিত না। জামায়াত করলেও বাঙালি হওয়ার কারনে কাইকে তারা বিশ্বাস করত না। সুতারং এই ধরনের সেন্সর করা পত্রিকা কাটিং দিয়ে কারো ফাসি হতে পারে না।
সন্মানিত পাঠক ,উপরের বক্তব্যের আলোকে আপনি যদি মুসলিম হন ,জামায়াতের এই মুসলিম সভ্যতা রক্ষার সমর্থন যদি দোষের হয় ,তাহলে দোষের। কিন্তু তার জন্য তো ফাসি হতে হতে পারে না,যাবৎজ্জীন জেল হতে পারে না।
বাংলাদেশে প্রযোয্য স্বাক্ষ্য আইন ১৮৭২ অনুযায়ী ,যে স্বাক্ষী কোন ঘটনা নিজে দেখেনি,অন্যর কাছ থেকে শুনে যে স্বাক্ষ্য দেয় তাকে জনশ্র“তি স্বাক্ষ্য বলে। স্বাক্ষ্য আইন ১৮৭২ অনুযায়ী এ ধরনের স্বাক্ষ্যর কোন মূল্য নাই এবং আইনত তা গ্রহন যোগ্যও নয়।
যে জনশ্র“তি স্বাক্ষ্যর গ্রহনযোগ্যতা নাই এবং আইনে যা গ্রহনযোগ্য নয়,সেই ধরনের স্বাক্ষ্যকে বর্তমান সরকার শুধু বৈধতাই দেননি,তথাকথিত ট্রাইবুনাল গঠন করে ফাঁসির রায় দিচ্ছেন । এ কোন যুগে বাস করছি আমরা। যে স্বাক্ষ্য গ্রহনই করা হয় না। তা কিভাবে ফাঁসি দেওয়ার প্রধান স্বাক্ষ্য হয়? যা গ্রহনযোগ্য নয় বা আইনের চেখে মূল্যহীন তা যদি নেহাত গ্রহনই করতে হয় তা গ্রহন করে যদি ৫০০০/ টাকা জরিমানা করলেই তো বিতর্কিত হওয়ার কথা, ফাঁসির রায় তো অনেক দূরের কথা। চলমান---------------
বিষয়: বিবিধ
১৪০১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন