ইরাকে হামলার ফল হলটা কি!
লিখেছেন লিখেছেন অবুঝ চিন্তাশীল ০৫ আগস্ট, ২০১৩, ০২:৫৩:৫৪ দুপুর
ইরাকে মার্কিন অভিযানের ১০ বছর পূর্তি
বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িক সংঘাতের এক ভীতিকর দেশ
ইরাকযুদ্ধের ১০ বছর অতিক্রান্ত হ’ল গত ২০ মার্চ। পারমাণবিক ও রাসায়নিক অস্ত্র থাকার মিথ্যা অভিযোগ এনে ২০০৩ সালের ২০ মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রইরাকআক্রমণ করে। প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে গ্রেফতার হন। অতঃপর ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। তাঁকে ফাঁসির দড়ি পরানোর সময় যখন ইরাকী মীরজাফররা টিটকারি করে বলেছিল ‘জাহান্নামে যাও’, অন্তিম মুহূর্তেও অবিচল সাদ্দাম পাল্টা পরিহাস করেন ‘কোন জাহান্নাম, যার নামইরাক?’ মার্কিন আগ্রাসনের ১০ বছর পরইরাকএখন সত্যিই এক নরকের নাম। যেখানে প্রতি মাসে গড়ে নিহত হচ্ছে তিন শতাধিক বনু আদম। যুদ্ধের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ যুক্তি দিয়েছিলেন, ইরাকে বিপুল পরিমাণ গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্র ও রাসায়নিক অস্ত্র আছে। কিন্তু যুদ্ধ শেষে দেখা যায়, সেখানে কোন ধরনের গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্র ও রাসায়নিক অস্ত্র নেই। বিশেষজ্ঞরা অভিযোগ করেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা অজুহাতে কেবল ইরাকের বিশাল তেল সম্পদ দখল করতেই যুক্তরাষ্ট্র এ আক্রমণ করে। দেশটিতে এখনো ৫০ হাযার সেনা মোতায়েন রাখা তারই প্রমাণ।
এইযুদ্ধেমৃতের সংখ্যা ১০ লাখের বেশী।যুদ্ধেযুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় হয়েছে ৮৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও অধিক। যুক্তরাজ্যের ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন ইউরো। ইরাকের সরকারী সূত্রে জানা গেছে, মার্কিন আগ্রাসনের পর থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ৩৫ লাখ ইরাকী হতাহত হয়েছেন। ১৪ লাখ নারী হয়েছেন বিধবা। ইয়াতীম হয়েছে ৬০ লাখ শিশু। ২০০৮ সালের জানুয়ারী পর্যন্ত ৮ লাখ ইরাকী নিখোঁজ হয়েছে। ইতিমধ্যে এ সংখ্যা ১২ লাখ ছাড়িয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।এছাড়া কয়েক লাখ ইরাকি দেশছাড়া হয়ে মানবেতর জীবনজাপন করছেন অন্যদিকে সাড়ে চার হাযার মতান্তরে দশ হাজার সেনা নিহত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। মার্কিন হামলায় ধ্বংস হয়েছে হাযার বছরের মুসলিম ঐতিহ্য। পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীদের থাবায় দেশটি হয়েছে ক্ষতবিক্ষত। সে ক্ষত সারিয়ে উঠতে চেষ্টা চলছে দেশটিতে। তবে সাদ্দাম হোসেনের সমৃদ্ধইরাকআজকের ইরাকবাসীকে হয়তো কল্পনার চোখেই দেখতে হবে বৈকি!
[২০০৩ সালে বাগদাদে নিযুক্ত জাতিসংঘের অস্ত্র পরিদর্শক সংস্থার প্রধান হ্যান্স ব্লিক্স সম্প্রতি স্বীকার করেছেন-ইরাকযুদ্ধ ছিল ইতিহাসের এক ভয়ংকর ভুল। একইভাবে স্বীকার করেছেন আরও অনেকে। যে ভুলে প্রাণ গিয়েছে ১০ লক্ষাধিক মানুষের। আজও রক্ত ঝরেই চলেছে। অথচ সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ, কলিন পাওয়েল, টনি ব্লেয়াররা যুদ্ধাপরাধী নন! কি চমৎকার ন্যায়বিচার! কি চমৎকার গণতন্ত্র!
বিষয়: বিবিধ
১৪৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন