বাংলাদেশ কী আরেক সিরিয়া হওয়ার পথে শেষ পর্ব
লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ০৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৭:২২:১৫ সকাল
হিযবুদ তাওহীদের প্রতিষ্ঠাতা পন্নীর এসলাম (ইসলাম) এবং কুরআন ও সুন্নাহর উপর প্রতিষ্ঠিত ইসলামের মাঝে প্রার্থক্য আকাশ আর পাতাল। সুতরাং এই বিষয়টি এখানে আলোচনায় আনবোনা। কেননা ইসলাম সম্পর্কে যে সামান্য জ্ঞান রাখে সে ব্যাক্তি অতি সহজেই তা বুঝতে পারবে।
যে গুরুত্ব পূর্ণ বিষয়টি এখানে আলোচনার দাবী রাখে তা হল। কী উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তাওহীদের লেবেল এঁটে পন্নী সাহেব এই দল প্রতিষ্ঠা করেন? পন্নী/সেলিম ও তার দলকে পিছনে থেকে কারা মদত দিচ্ছে এবং কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে আগে আমাদের জানতে হবে এই দলের এজেন্ডা বা মূল কর্মসূচী কী। পন্নীর দেওয়া তথ্য অনুসারে এই দলের মূল কর্মসুচী হল ১। একতা ২। আনুগত্য ৩। হিজরত এবং ৪। জেহাদ ( যা মূলত আহমদ এবং তিরমীজিতে বর্ণিত নবী করিম () একটি হাদীসের উপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে)। আপাত দৃষ্টিতে এটা মনে হওয়া খুবই স্বাভাবিক কুরআন সুন্নার জ্ঞান শুন্য পন্নী সাহেব সম্ভবত হাদীসটির সঠিক ব্যাখ্যা বুঝতে না পারার জন্যই বুঝি এই বিচ্যুতি ঘটেছে। কিন্ত বাস্তবতা মোটেই তা নয়।
আমরা সতর্কতার সাথে বিষয়টির একটু গভীরে গেলেই বুঝতে পারবো এর মধ্য লুক্কায়িত রয়েছে এক গভীর বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র। পন্নীর দল হিযবুদ তাওহীদের এক নম্বর এজেন্ডা হল “একতা” । একতা সব দলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত কিন্ত এক্ষেত্রে আমাদেরকে মাথায় রাখতে হবে, যদি এক দল লোভী বিভ্রান্ত লোক একত্রিত হয় তখন তা একটি জাতির জন্য ভয়ঙ্কর। তার দলের দুই নম্বর এজেন্ডা হল “অনুগত্য” আনুগত্যের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য, বিশেযত পন্নী/সেলিমের মত ইসলাম তথা বাংলাদেশ বিরোধী বিদেশী শক্তির দাস নেতাদের অনুগত্য করা মনে শুধু নিজের জন্য নয় বরং হাজার হাজার লোকদের জন্য বিপদকে ডেকে নিয়ে আসা।
পন্নীর দলের তিন নম্বর এজেন্ডা হল হিজরত (Migration), যা শুধু বিস্ম্যয়করই নয় বরং নানা প্রশ্নের উদ্দেক করে কেন এই হিজরত? একই ভাবে তার দলের চার নম্বর এজেন্ডা হল জেহাদ তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে। এ জন্যই আমরা কুরআন সুন্নার জ্ঞান শূন্য এবং ইসলামকে বিকৃত করে প্রশ্নের মুখে দারা করানোর চেস্টায় রত পন্নী/সেলিম কে বার বার বলতে দেখিছে যে, আজকে বিশ্বের কোথাও সঠিক ইসলাম নেয়, ইসলাম বিকৃত হয়ে পড়েছে। এক মাত্র হিজবুদ তাওহীদ সঠিক ইসলাম ধারন করে!!!!
তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার তাদের কথিত সঠিক এসলামকে বিশ্বের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই হিজরত (Migration) দরকার। সেলিম/পন্নী ভাল করেই জানে ইসলাম সম্পর্কে তাদের জ্ঞান কী, তাহলে তাদের তরুণ কর্মীরা ইসলামের দাওয়াত দিবে কী ভাবে? বস্তুত তাদের কর্মীরা অর্জিত জ্ঞান নয় বরং সন্ত্রাসের মাধ্যনে ইসলামের দাওয়াতের নামে তাদের প্রভুদের নির্দেশে ইসলামকে বিশ্বের বুকে হেয় করার এজেন্ডা নিয়ে নামবে কিন্ত অজ্ঞতা হেতু তার মনে করবে ভাল কাজই করছে আথচ তারা নিজেদের সাথে সাথে শুধু বাংলাদেশ সরকারের জন্য নয় বরং বিশ্বের মুসলিমদের জন্য ভয়ংকর বিপদ ডেকে বয়ে নিয়ে আসবে। আর এই জন্যই তাদের দলের চার নম্বর এজেন্ডা হল জেহাদ। এই বিষয়ে বেশী লেখার দরকার পরে না কেননা ইসলামকে পুঁজি করে, জেহাদকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যাবহার করে কুরআন সুন্নার জ্ঞান শূন্য তরুণদেরকে রাজনীতির ময়দানে দাবার খুটীর ন্যায় ব্যাহার করার উদাহরণ রয়েছে ভুরি ভুরি। ফলে বিভ্রান্ত তরুণেরা শুধু তাদের ইহকাল ও পরকাল হারাছে তাই নয় বরং আজকে বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের বেহাল দশার নাম্বার ওয়ান কারনই হল এটা।
হিযবুদ তাওহীদ কোন কোন দেশে তাদের কর্মীদের মাধ্যমে জেহাদের নামে সন্ত্রাস ছাড়াতে পারে তা জানা না গেলেও ধারনা করা যায় তাদের টার্গেট দেশ গুল হল যে দেশের কৃষ্টি কালচারকে তারা প্রকাশ্যে দাজ্জালীয় কৃষ্টি কালচার বলে বার বার উল্লেখ করছে সেই দেশ গুল।
যদি প্রশ্নকরা হয় হিযবুদ তাওহীদ কোন দেশের প্রতি নমনীয়, এর উত্তর ভারত। কেননা ভারত তথা সনাতন ধর্মের প্রতি তাদের নীতি –ই বলে দিচ্ছে তারা কার পক্ষে হয়ে কাজে নেমেছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, তারা সনাতন ধর্মের কল্পিত দেবতাদের নবী বলে উল্লেখ করে তাদের প্রতি সামাল পাঠ করে। বস্তুত তাদের সাথে প্রবল ভাবে সাদৃশ খুঁজে পাওয়া যায় আর একটি সন্ত্রাসী দলের, যে দলটি কুরআন সুন্নার অনুসারী না হলেও হিযবুদ তাওহীদের মত নিজেদেরকে দাবী করে এক ঈশ্বরবাদী! হ্যাঁ হিযবুদ তাওহীদকে ইস্কনের (ESKCON) বি টীম বললে কোন ভাবেই ভুল বলা হবে না।
বর্তমানে বাংলাদেশী আলেম ওলেমাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে হিযবুদ তাওহীদের প্রকৃত স্বরূপ প্রকাশ হয়ে পরায়,অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে হিযবুদ তাওহীদ তার ভোল পাল্টে নাস্তিকদের ন্যায় মানবতাবাদী সেজেছে।
বাংলাদেশী আলেম ওলেমাদের অবশ্যই সজাগ থাকতে হবে শুধু হিযবুদ তাওহীদের ব্যাপারে নয়। কেননা হিযবুদ তাওহীদ ব্যার্থ হলে তার শূন্য স্থান পুরনের জন্য এবং ইস্কনের (ESKCON) বি টীম হিসাবে কাজ করার জন্য অন্য কোন নতুন দলের আমদানী ঘটলে, সাথে সাথেই যেন হিযবুদ তাওহীদের ন্যায় তাদের মুখশকে খুলে দিতে পারে।
বিষয়: বিবিধ
৯২৭ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন