আক্কেল আলী (রম্য রচনা)- বিষয় অতি বুঝবান, ছাগলা পাগলা আলুপুরি হুজুর – পর্ব ৪
লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ০৬ অক্টোবর, ২০১৮, ০৭:৩৮:৫৫ সন্ধ্যা
এশা ছ’লা (নামাজ) সময় হয়ে আসায় আলু পুরীর এই মজলিশে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন বিখ্যাত দা’য়ী ডাক্তার জাকির নায়েক বিরোধী, লাখ টাকার ইসলামী কিচ্ছা-কাহীনি বক্তা মৌলিভি হাফিজুর, দেওবন্দী হাব্বিব এবং কবর মাজার পুজারী পীর কানাই এসে উপস্থিত হয়। ইল্লেললা জিকির সম্পকে চোরমনা পীরের বক্তব্য শেষ হলে পরে আক্কেলকে উদ্দেশ্য করে আলুপুরী হুজুর বলল এখানে আনেক বুজুরগানে দীন উপস্থিত হয়েছে জাকির নায়ক সম্পর্কে তোমাদের কোন প্রশ্ন থাকলে তা জিজ্ঞাসা করার এটাই উৎকৃষ্ট সময়। কেননা এক সাথে ঐ ধরনের বুজুরগানে দীনদের সহজে পাবে না। কিন্তু লাখ টাকার ইসলামী কিচ্ছা-কাহীনি বক্তা মৌলিভি হাফিজুর বাধা দিয়ে বলল চোরমনা হুজুরের সাথে জিকিরের উপর দুই চারটা কথা যোগ করতে চাই। আলুপুরী হুজুর বলল, আমাদের সৌভাগ্য আপনার কাছ থেকে এই বিষয়ে দুই চার কথা শুনতে পাব।
ইসলামী কিচ্ছা-কাহীনি বক্তা কোরআন থেকে তেলাওয়াত করল -------- গাইবা ইল্লেললা। তারপর চোখ মুখ বাকা করে বলল, আহারে কী ফেতনার ভিতরেই না আমরা আছি, ইল্লেললা জিকির করলেও বাধা। নিজেরা তো জিকির করেই না, আরেক জনে জিকির করবে তাও ভাল পায়না। জিকির বিরোধী এই জাহেলদের কথা আর কী বলবো, যেখানে খ্রিষ্টানরা ঈসা () মর্তবা বাড়াতে বাড়াতে আল্লার ছেলে পর্যন্ত যে চলে গেছে ঐ গাধা গুল তাও দেখে না! আর আমি নবী করিম () মর্তবা বাড়াতে কত ভাবেই না চেস্ট করে যাচ্ছি, এই কিচ্ছা সেই কিচ্ছা, হরিণীর কিচ্ছা বলছি, এই জন্য তারা আমার প্রশংসা করবে দূর, আমাকে বলে বেদাতী। যারা নবীর মর্যাদা বুঝে না তার হল ইসলামের দুশমন, নবীর দুশমন। এদের মূল হোতা হল হাজার হাজার ইহুদী খৃষ্টানকে ইসলাম ধর্মের দীক্ষায় দীক্ষা দানকারী ইহুদী খৃষ্টানের দালাল কবর, মাজার পূজা বিরোধী, সব তরিকা বাতিল করে একমাত্র নবীর () তরিকা অনুসরণকারী লা মাযহাবি ডাক্তার জাকির নায়ক।
ইসলামী কিচ্ছা-কাহীনি বক্তার কথা শেষ হতে না হতে কবর মাজার পুজারী কানাই রাগে গড় গড় করতে করতে বলল, হেতেরে জাকির নায়ক নয় জাকির নাটক বলা উচিত। হেতে ইসলামের কী বুঝে, হেতে হ’ল প্রসাব পায়খানার ডাক্তার। তার এই কথার প্রতিবাদ করে জাবেদ বলল, প্রসাব পায়খানার ডাক্তারকে বলে প্যাথলজিস্ট কিন্ত জাকির নায়েক হল এম বি বি এস ডাক্তার। তার প্রতি উত্তরে কবর মাজার পুজারী বলল, ঐ হ’ল, একটা হলেই হল। জাবেদ বলল কবর মাজার পুজারী জী একটা হলেই হল না, বিষয়টা অত সহজ নয় যা আপনি ভেবেছেন। আমি বলি কী বিষয়টা যদি আপনার জানা না থাকে তবে একটু পড়া শুনা করেন, না জেনে না বুঝে কোন কথা না বলাই ভাল। এতে কবর মাজার পুজারী কানাই এর রাগ আরও বেড়ে যায়, সে জাবেদকে উদ্দেশ্য করে বলল, আমরা বাংলাদেশে যে ইসলাম পেয়েছি তা কী জাকির নায়ক এনেছে, নাকি হেতের বাপ দাদারা এনেছে। আমরা তো ইসলাম পেয়েছে পীর, গাওস, কুতুব, দরবেশদের কাছ থেকে। তারা ইসলাম সম্পর্কে আমাদের যে শিক্ষা দিয়েছে তা গল্প, কিচ্ছা কাহিনী, যে ভাবেই আমাদের কাছে পৌছুক না কেন তা ই আমরা মানব। জাকির নাটকের কথায় আমরা সহি হাদিসের নামে আরব দেশের নবী () হাদিস এবং তার অনুসারী সাহাবা আকরামদের হাদীস/খবর কেন মানব!!!
আক্কেল জাবেদকে ডেকে বলল,“তার কথাবর্তা আমার কাছে কেমন যেন উল্টা পাল্টা ঠেকছে”। জাবেদ বলল, শুধু কী উল্টা পাল্টা মনে হয় কবর মাজার ব্যাবসার উপরে আঘাত আসায় মাথাটা পুরাই গেছে। কেউ তার কথা শুনলে নামেই মুসলিম থাকবে কিন্তু কাজ কামে হয়ে যাবে মোশরেক, কথা বুঝ নাই। তার জন্য আফসোস হয়, কবর মাজার ব্যাবসার দিন যে শেষ তা বুঝতে পারতেছে না। ইয়ং মানুষ এত বড় হাতীর মত বডি নিয়ে পরিশ্রম করে খাবে তানা, কেরামত মারফতের নামে কীভাবে মানুষের পকেটের টাকা হাতিয়ে নেওয়া যায় সেই চিন্তায় সর্বদা থাকে অস্থির। আর জাকির নায়কের মত কেউ ঐ অসহায় মানুষ গুলকে ইসলামের নামে চলা ঐ ধোঁকাবাজি সম্পর্কে সতর্ক করতে গেলেই পাগলা কুত্তার মত ঝাপিয়ে পড়ে তাদের উপর।
বিষয়: বিবিধ
৭৬৩ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন