আক্কেল আলী (রম্য রচনা)- বিষয় অতি বুঝবান, ছাগলা পাগলা আলুপুরি হুজুর – পর্ব ২
লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৪:২৭:৩৬ বিকাল
আক্কেল আলী আলুপুরী হুজুরকে জাকির নায়েকের সিডি সম্পর্কে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করার পূর্বে চোরমনার পীরানে পীর হক্কানী পীর গাউসুল আজম হযরত বব্জলুল করিম দেখা করতে আসে। তখন আলুপুরী হুজুর আক্কেলকে ডেকে বলল, মেহমান এসেছে তো তাই মেহমানের সাথে জরুরী কথা সেরে মাগরিবের নামাজ বাদ তোমাদের সাথে বসবনে।
চোরমনা পীরের সাথে সালাম বিনিময়ের পর আলুপুরী হুজুর বলল বব্জলুল করিম সাহেব আমি পীর মুরিদ সম্পর্কে অন্যদের মত খারাপ কিছু কইনা বরং ভালাই কই। তারপর নাটকীয় ভাবে গলার স্বর একটু নীচু করে বলল, আপনার নামের সাথে যুক্ত ‘চোরমনা’ শব্দটা পছন্দ নয়। হাসতে হাসতে যোগ করল, তয় এটাও বুঝি জায়গার নাম যদি ‘চোরমনা’ হয় তো আপনিই বা কি করবেন! কিন্ত আপনার নামের সাথে যুক্ত ‘গাউসুল আজম’ টাইটেল তো পুরা শিরকি টাইটেল। এই টাইটেল নাম থেকে হালান। চোরমনা পীর বলল, এই টাইটেল তো আমি লিখিও না, বলিও না, আমার বিদ্যুৎশাহী (অতি উৎসাহি) মুরিদরা দিয়েছে। আলুপুরী হুজুর বলল মুরিদরা আপনাকে কেন এই টাইটেল দিল? তারা কী খুঁইজা আর কাউকে পায় নাই! আলুপুরী হুজুরের কথা শুনে পীর সাহেব একটু আমতা আমতা করে বলল, আসলে হয়েছি কী আমার মুরিদরা যখন আমার দাদা হুজুর কেবলার লিখিত বই, “মুরিদদের মাথায় কাঁঠাল ভাঙ্গার একই পথ ভেদেমারফত” পড়ে তখনেই দাদাজানের কেরামতের বদৌলতে আমার প্রতি তাদের মহব্বত এতটাই প্রবল হয়ে যায় যে, তারা আমাকে কী নামে ডাকবে, কী হাদিয়া দিবে কী টাইটেল দিবে তা ঠিক মত বুঝে উঠতে পারে না! শুধু কী তাই তখন এই আওলা-ঝাওলা মাথাওয়ালা মুরিদরা আমার সাথে সম্মিলিত জিকির করতে যেয়ে এই মহব্বতের জোশে দেওয়ানা মস্তানা হয়ে ফাল দিয়া বাশের মাথায় উঠবে না মান্দার গাছে উঠবে তার কোন দিশ পায় না। বুঝতেই পারছেন এই আসেকে রসূল দেওয়ানা মস্তানার দল যদি ‘শিরকি টাইটেল’ না দেয় তো দিবে কে? এর কিছুই বুঝি না এত বোকা তো নই কিন্তু এই সকল আসেকে রসূল দেওয়ানা মস্তানার দলকে কিছু বলতে আমার লজ্জা লাগে। এই সময়ে মাগরেব সালাতের জন্য আজান দেওয়া হলে তারা কথা বন্ধ করে সালাতের জামাতে চলে যায়।
মাগরেবের সালাত শেষে আক্কেল ও খেজুর যখন আলুপুরী হুজুরের জন্য অপেক্ষে করছিল ঠিক সেই সময়ে তাদের পুরানো বন্ধ জাভেদকে দেখে ডাক দেয়, আরে জাভেদ যে, আমেরিকা থেকে কবে আসলা। জাভেদ বলল এই তো দশ দিন হয় এসেছি। সে আক্কেল ও খেজুরকে উদ্দেশ্য করে বলল তোমরা আলুপুরী হুজুরের এখানে কী করছে। আক্কেল এবং খেজুর উভয়েই বলল আমরা হুজুরের কাছে জাকীর নায়েকের সিডি সম্পকে জানতে এসেছি। জাভেদ বলল, আমিও একই উদ্দেশ্যে এসেছি কিন্ত কারন ভিন্ন। আমি আমেরিকাতে বসে ইসলামের উপর অনেক পড়াশুনা করেছি কিন্ত আলুপুরী হুজুরের বক্তিতা শুনে অনেক বিষয়ে প্যাজ লেগে গেছে, এই পেজগী খোলার জন্য তার কাছে এসেছি। এই সময়ে আলুপুরী হুজুর চোরমনা পীরকে সাথে করে বসে আক্কেল ও খেজুরকে ডাক দেয়। আক্কেল এবং খেজুর হুজুরের মজলিশের দিকে রওনা দিলে তাদেরকে অনুসরণ করে জাভেদও হুজুরের মজলিশে যেয়ে হাযির হয়।
সংবিধিবদ্ধ সতরকরনঃ এই রম্য রচনার চরিত্রগুল কাল্পনিক, তাই কারো সাথে মিলের কোন প্রশ্নই উঠে না।
চলবে---
বিষয়: বিবিধ
৭৫৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন