বর্তমান বাংলাদেশ ও কল্যাণকর ইসলামী আন্দোলন
লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৮:৪৩:৫৯ সকাল
আপাত দৃস্টিতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলে, এক বাক্যে সবাই স্বীকার করবে যে, বর্তমান এন্টি-ইসলামিক ফ্যাসিস্ট রেজীমের হাতে “কল্যাণকর ইসলামী আন্দোলন” এর মৃত্যু ঘটেছে। কিন্তু আমরা যদি একটু গভীরে যেয়ে ইতিহাস ও যুক্তির আলোকে দেখি তবে দেখবো যে, প্রকৃত সত্য হল “কল্যাণকর ইসলামী আন্দোলন” এর মৃত্যু তো ঘটেইনি বরং আগের চেয়ে আনেক বেশী শক্তিশালী অবস্থানে পৌছেছে। কল্যাণকর ইসলামী আন্দোলনের এই শক্তিশালী অবস্থানকে আমরা বুঝতে পারছি না কারন তা বুঝার জন্য যে জ্ঞান ও পর্যবেক্ষণ শক্তি দরকার তা আমাদের নেই বলে। তাই হতাস না হয়ে বেশী বেশী করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও সাহায্য প্রাথনা করা দরকার। বিভিন্ন কারন এর পিছনে কাছ করছে, এই কারন গুল এখানে উল্লেখ না করে এক কথায় বলব যে, কোন আদর্শবাদী আন্দোলনকে কখনই জুলুম নির্যাতনের মধ্য দিয়ে স্তব্ধ করে দেওয়া যায় না। এই জন্যই বলা হয়ে থাকে যে “হার কারবালা কা বাদ ইসলাম জিন্দা হোতা হে”।
কিন্তু ব্রাহ্মানবাদীদের কথা আলাদা তারা যে শুধু মুসলিমদের হত্যা, খুন, গুম করছে তাই নয় বরং সাথে সাথে তাদের ঘৃন বিশ্বাসও মুসলমানদের মণ-মস্তিকের মধ্যে সুকৌশলে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। তার একটি বড় উদাহরণ হল নিন্মের এই অবিশ্বাস সংবাদটি।
‘ওরা মুচি, ওদের কাপ আলাদা’
মনিরুল ইসলাম, যশোর | আপডেট: ০২:০২, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৬ , প্রথম আলো
সোমবার দুপুর ১২টা। যশোর শহর থেকে সাত কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে চূড়ামনকাটি বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে চা পান করছি। এ সময় ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি দোকানে এসে চা খেতে চাইলেন। দোকানি পলাশ হোসেন বললেন, ‘তোমার নিজের কাপ নিয়ে এসো।’ অগত্যা ওই ব্যক্তি চলে গেলেন। কিছুক্ষণ পর কাপ হাতে ফিরে এলেন। দোকানি অন্য একটি কাপে চা বানিয়ে ওই ব্যক্তির কাপে ঢেলে দিলেন।
ব্যাপারটা কী, জানতে চাইলে দোকানি পলাশ বললেন, ‘ওরা মুচি, ওদের কাপ আলাদা।’ লোকটি মাথা নিচু করে দ্রুত সরে পড়লেন। তাঁর পিছু নিলাম। তিনি নিজের দোকানে গিয়ে বসলেন। জুতা-স্যান্ডেল সেলাই-পলিশের দোকান তাঁর। নাম দশরথ গোঁসাই। এ বাজারেই তাঁর আদিনিবাস।
কথা প্রসঙ্গে দশরথ গোঁসাই জানান, মুচি বলে অন্যরা তাঁদের ঘৃণা করে। বাজারের কোনো দোকানে বসে তাঁরা চা খেতে পারেন না। দুটো চায়ের কাপ দেখিয়ে তিনি বললেন, ‘এই কাপ নিয়ে গেলি অন্য কাপে চা বানায়ে উঁচু করে আমার কাপে ঢেলে দেয়। তখন কী যে লজ্জা করে! মুচির ঘরে জন্ম নেওয়া কি আমাগের অপরাধ?’
রাস্তার অপর পাশে বিল্লাল হোসেনের চায়ের দোকানে গিয়ে বসলাম। কিছুক্ষণ পর নিজস্ব কাপ হাতে এলেন দুজন। একইভাবে অন্য কাপে চা বানিয়ে তাঁদের কাপে ঢেলে দেওয়া হলো।
এমনটা কেন করা হলো, জানতে চাইলে দোকানি বিল্লাল ইশারায় বোঝালেন, ‘ওরা মুচি’। ওই দুজন চলে গেলে তিনি বলেন, ‘আমি যদি দোকানের কাপ ও গ্লাস ওদের ব্যবহার করতে দিই, তাহলে আমার দোকানে অন্য ক্রেতারা আসবে না। এ বাজারে অন্তত ৫০টি চায়ের দোকান রয়েছে। সবখানে একই ব্যবস্থা।’
দোকানে বসা মো. মফজেল মুন্সী নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘বাপ-দাদারা ভাগাভাগি করে গেছেন। আমরাও সেভাবে চলছি। মানুষ হয়ে মানুষকে ঘৃণা করাটা একদমই ঠিক না। কিন্তু আমাদের অনেকে বিষয়টি মানতে পারেন না।’
দশরথের মতো চূড়ামনকাটি বাজারে ঋষি সম্প্রদায়ের অন্তত ১০০ মানুষের ওঠাবসা। তাঁদের অন্তত ২৫টি ছোটখাটো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাঁরা সমমর্যাদা পান না।
সমমর্যাদার দাবিতে বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন, যশোর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সূর্য বিশ্বাস গত ৩১ জুলাই সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) চিঠি দেন। তাতে বলা হয়, ‘চূড়ামনকাটি এলাকায় ঋষি সম্প্রদায়ের মানুষকে খাবার হোটেল ও চায়ের দোকানে অন্যদের সঙ্গে বসে খেতে দেওয়া হয় না। আমরা যাতে সম-অধিকার ও সমমর্যাদা নিয়ে থাকতে পারি, সে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি।’
ব্রাহ্মানবাদীদের ঘৃন বর্নভেদ প্রথা কী ভাবে মুসলিমদের মণ-মস্তিকে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে তার বড় প্রমান এই খবরটি। এই খবরটি পরিবেশনের জন্য প্রথম আলো অসংখ্য ধন্যবাদ। উল্লেখ্য মুসলিম উম্মার ঐক্যের মূলমন্ত্র হল ISLAMI BROTHERHOOD.
বিষয়: বিবিধ
৭৭২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন