আমাদের পূর্ব পুরুষদের শত্রু-মিত্র পর্ব ১০

লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ২৪ মে, ২০১৬, ০২:০৮:৫০ দুপুর

নবী করীম (ﷺ) তিরোধানের ১০০ বৎসরের মধ্যে বিশাল সাম্রাজ্য মুসলমানদের হস্তগত হয়ে যায়। ফলাফল স্বরূপ প্রচুর টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত, যুদ্ধ বন্দী দাস-দাসী তাদের হস্তগত হয়। ঐ প্রাচুর্য অনেক মুসলমানকে ইসলামের শিক্ষা থেকে দূরে ঠেলে দেয় এবং তারা বিলাসীতায় গা ভাষিয়ে দেয়। এরূপ বিলাসী জীবনের যাপনের প্রতি বিতশ্রাদ্ধ হয়ে কিছু সংখ্যক লোক দুনীয়ার প্রতি সকল মোহ ত্যাগ করে সংসার বিরাগী হয়ে জিকির আযগার ও কঠোর ইবাদত বন্দিগীর মধ্যদিয়ে আল্লাহর সাথে সম্পক উন্নয়নে প্রয়াস পান। বস্তুত এই ধরনের চিন্তা চেতনা থেকেই সূফী বা তাসাউফের জন্ম ঘটে।

এই তাসাউফ বা সূফীইজমের অনেক মিল পাওয়া যায় প্রাচীন ভারতের ‘শ্রীমানা মুভমেন্টের’ সাথে যা আমরা পূর্বে অলোচনা করেছি।‘শ্রীমানা মুভমেন্টের’ অনুসারীরা আত্নার মুক্তি বা অনির্বাণের জন্য বৈবাহিক ও সামাজিক সম্পককে অস্বীকার করে সংসার বিরাগী হয়ে কঠোর সাধনার পথকে বেছে নিয়ে ছিল। শ্রীমানা শব্দটির অর্থ হ’ল সকল বিষয়ে কঠোরতা অবলম্বনকারী সাধু/ যোগী।

প্রফেসর ই জী ব্রওয়ান তাসাউফ (Sufism) সম্পকে বলতে যেয়ে বলেন, সূফী বলতে বুঝায় ঐ ব্যাক্তিদের যারা দুনীয়ার জীবনের প্রতি সকল মোহ ত্যাগ করে, মনের প্রশান্তি অর্জনের জন্য সংসার ত্যাগী হয়ে, কঠোর সাধনার মধ্য দিয়ে আল্লাহর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পক স্থাপনে প্রয়াস পায় উষ্ঠের সাহায্য নিয়ে অর্থাৎ জিকির আসগারের মধ্য নিয়ে। সুফীদের উপর দুনীয়ার জীবনের প্রতি সকল মোহ ত্যাগকারী, সংসার ত্যাগী খৃস্টান সন্যাসী , ভরতের হিন্দু সন্যাসী এবং পারস্য ও গ্রীসের সাধু সন্যাসীদের প্রভাব ছিল।

(John Alden William,ed.,Islam New York: George Braziller,1962)

সুফীদের এই দুনীয়া বিমুখ, সংসার ত্যাগী এবং কঠোর এবাদত বন্দিগীর জীবনের প্রতি নির্দেশ করে সুফীদের সাথে সুরে সুর মিলিয়ে বাংলাদেশের সেকুলার পন্থীরা বলে থাকে ইসলাম হল, কতকগুল অর্থহীন ধর্মীয় বিধি বিধান আচার আচরণের ধর্ম এবং এর সাথে দুনীয়ার সমস্যা সংকুল জীবনের কোন সম্পক নেই। অর্থাৎ ইসলামে রাজনীতি, অর্থনীতি ইত্যাদির কোন স্থান নেই। ইসলাম হল নামাজ কালাম জিকির ফিকিরের ধর্ম। শুধু তাই নয় যত ইসলামী ব্যাক্তিত (যেমন হযরত শাহ জালাল, শাহ পরান, খান জাহান আলী ইত্যাদি) এদেশে এসেছে ইসলাম প্রচারের জন্য সবাইকে সূফী লেবেল দিয়ে বলে থাকে বাংলাদেশের আম জনতা তাদের কাছ থেকে ইসলামের দীক্ষা নিয়েছে তাই তারাও ইসলাম বলতে নামাজ কালাম জিকির ফিকিরকে বুঝে থাকে আর যারা এর ব্যাতিক্রম তারাই হ’ল মৌলবাদী জঙ্গী।

কুরআন যখন নাজিল হয় তখন সূফী বা তাসাউফ বলতে কোন কিছুর অস্থিত ছিল না কিন্ত তখনও সংসার ত্যাগী এবং কঠোর সাধনার মধ্য দিয়ে সৃস্টি কর্তার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পক স্থাপনে প্রয়াসী সাধু, সন্নাস্যী, যোগী ছিল। তদের সম্পকে কুরআন কী বলেছে সে সম্পকে বিভন্ন তাফসিরের সারাংশ এখানে উল্লেখ করব বুঝার সুভিদার জন্য কিন্ত বিতর্ক এড়ানোর জন্য তাসাউফের অবস্থান ইসলামে কী সে সম্পকে কোন ব্যাক্তিগত বা বিশেষগ্যের মতামদ নিয়ে আলোচনা করব না।

সূরা গাসিয়াতে আল্লাহ () বলেন, অনেক মুখমণ্ডল সেদিন হবে লাঞ্ছিত। ক্লিস্ট ক্লান্ত। (৮৮ ঃ ২-৩) । এই আয়াতের তাফসির সারাংশ ঃ---

কাফের মুশরেক ও বেদাতী লোকদের আমলসমূহ আল্লাহর নিকট অগ্রায্য হবে। দুনীয়াতে নেক আমল ভেবে তারা অনেক বাড়তি কাজ করে থাকে। পোপ পাদ্রী ও যোগী-সন্ন্যাসীরা এমন কী মুমিন নামধারী ভণ্ড তপস্বীরা; তাদের দাবী মতে আল্লাহাকে পাওয়ার জন্য কঠোর সাধনার মধ্য দিয়ে নিজেদের জীবনের উপরে অযথা কষ্ট ডেকে এনে তা পাওয়ার চেষ্টা করা। সংসার ধর্ম ত্যাগ করে দেশে দেশে বনে জঙলে ঘুরে বেরায়। গির্জা, মঠ-মন্দির এবং খানকায় তথাকথিত ধ্যানে ও ভজনে জীবন কাটায়। উত্তম পোশাকদি পরিত্যাগ করে নোংরা পোশাক, চট ও জটাধারী হয়। কখনও বা উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়ায়। এই ভাবে সে মারা যায়। মূর্খরা তাকে কামেল ব্যাক্তি ভেবে বাবা বলে। তার কবরকে মাজার মানায় ও সেখানে নযর নেয়াজ দেয়া শুরু করে। কেউবা মূর্তি বানিয়ে তার পূজা শুরু করে। জীবনে সে ছিল নফসরূপী শয়তানের পুজারী। মরার পরে মানুষ হয় তার মূর্তি, প্রতিকৃতি বা কবরের পুজারী। অথচ তার অনুসারীরা ভাবে যে তারাই সর্বাধিক উত্তম অমলকারী। এদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ অন্যত্র বলেন যে, (হে নবী) তুমি বল আমরা কী তোমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের সম্পকে খবর দিব? পাথিব জীবনে তাদের প্রচেষ্টাসমূহ বরবাদ হয়েছে। অথচ তারা ভাবে যে তারা সৎকর্ম করছে। (১৮ ঃ ১০৩-১০৪) ।

হযরত আবু ইমরান জাওফী () হতে বর্ণিত আছে, একদা হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব () এক জীর্ণ শীর্ণ রিহাবের (খ্রস্টান পাদ্রী) খানকার পাশ দিয়ে গমন করছিলেন। তখন ঐ রিহাব তার সাথে দেখা করলে, তিনি ঐ সাধকের জীর্ণ শীর্ণ আবস্থা দেখে চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারেননি। সাধক তাকে ক্রন্দনের কারন জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন আল্লহতালার কিতাবে (কুরআন ) উল্লেখিত এই কথা (সূরা গাসিয়ার আয়াত নং ২ও ৩) আমার স্মরনে এসেছে এবং এটাই আমার ক্রন্দনের কারন।

এখন আমরা দেখবো ধর্মনিরপেক্ষ বাদীরা সুফী বা তাসাউফ পন্থীদের কী ভাবে ব্যাখ্যা করে। বাংলাদের সব ধর্মনিরপেক্ষ বাদীরা ইসলাম প্রচারক বা ইসলাম পন্থীদের ব্যাপারে যতটা উগ্রতা প্রদর্শন করে , যতটা অক্রমনাত্নক প্রচারনা চালায়, সূফীদের ব্যাপারে তার ঠিক উল্টো মনভাব প্রদর্শন করে। নিন্মে বাংলাদেশী ধর্মনিরপেক্ষ পন্থীদের তাসাউফ পন্থীদের স্বপক্ষে গতবাধা প্রচার প্রপাগন্ডার সার সংক্ষেপ তুলে ধরা হ’ল।

“ বাংলাদেশে ইসলামের প্রচার ও প্রসার ঘটেছে সুফীদের দ্বারা। এই সুফীদের জীবন যাপন ছিল সাদাসিধা সহজ সরল। তারা দুনীয়ার জীবনে সকল ধরনের আমদ প্রমোদ আরাম আয়েশকে ত্যাগ করে কঠোর সাধনার মধ্যমে আত্নার উন্নয়নে নিয়োজিত ছিল। কোন কোন সময় তারা সুফীদের সম্পকে বলতে যেয়ে, কুরআন হাদীস থেকে রেফারেন্স না করে বরং এ বিষয়ে লিখিত বিভিন্ন বই থেকে রেফারেন্স করে থাকে। জনৈক লেখক সুফীদের সম্পকে বলতে যেয়ে Fred. W. Clothy (2006) Religion in India : A Historical Introduction থেকে উধৃত করেছেন এই ভাবে, সুফীরা ভারতে ইসলামকে জনপ্রিয় করতে দশটি মূলনীতি গ্রহণ করত। (১) তাদের ভুলের জন্য ক্ষমা প্রাথনা করত এবং নিজেদেরকে জাহির করা থেকে বিরত থাকত। (২) সহজ সরল জীবন যাপন করত (৩) আল্লাহর সাথে সম্পক উন্নয়নের জন্য জোর দিত (৪) তারা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া বাহুল্য বস্তু বর্জন করত। (৫) ব্যাক্তিগতভাবে কঠোর নিয়ম নীতির অনুসরণ করত। (৬) রহমানুর রাহিম আল্লাহ প্রতি সর্বদা কিতগতা প্রকাশ করত। (৭) তারা ছিল খোদাভীরু। (৮) আল্লাহ প্রদত্ত গুনাগুন অর্জনের জন্য সর্বদা

কঠোর সাধনা করত। (৯) আত্নার উন্নয়নের জন্য সর্বদা কঠোর সাধনা করত। (১০) আল্লাহর ইচ্ছার কাছে অন্তসমপণ করত।

সুফীদের বৈশিষ্ট সম্পকে এই সেকুলার ঘরনার প্রচরনার সাথে ঐতিহাসিক তথ্য থেকে পাওয়া বৈশিষ্ট গুলর একটি তুলনা মূলক বিচার বিশ্লেষণ করি তবে দেখবো যে প্রায় একই শুধু উপস্থাপনের ধরন ভিন্ন। ঐতিহাসিক তথ্য থেকে পাওয়া বৈশিষ্ট গুল সারসংক্ষেপ, (১) সুফীরা দুনীয়ার চাকচিক্যময় জীবনকে পায়ে ঠেলে বৈরাগ্য জীবনকে বেছে নেয়। (২) তারা দুনীয়ার বিলাসী জীবন যাপনের প্রতি বীত শ্রাদ্ধ ছিল। (৩) তারা যুদ্ধ বিগ্রহ, ফেতনা ফ্যাসাদ থেকে দূরে থারকার জন্য নির্জন নিরিবিলি জীবন যাপন পছন্দ করত এবং সকলকে ভালবাসার নীতি গ্রহণ করে ছিল। (৪) তারা ইবাদত বন্দীগির ক্ষেত্রে অত্যাধিক কঠোরতা অবলম্বন করত। (৬) দুনীয়ার ভোগবিলাশ ও আরম আয়েশের জীবন পরিহার করে সহজ সরল সাদা সিধা জীবন যাপন করত। (৭) শৈল্পিক সৌন্দয বা চকচকে কারুকাজ বস্তু তো দূর নিত্য প্রযজোনীয় খরচ ব্যতীত বাহুল্য খরচ পরিত্যাগ করত। (৮) দুনীয়ার বড় বড় পজিশন, পদ, জটিল রাজনীতি, অর্থনীতি প্রভৃতি থেকে দূরে থাকত এবং সংসার বিরাগী হয়ে বৈরাগ্য জীবনকে বেছে নিয়ে ছিল। (৯) তাদের হাতে প্রচুর ধন সম্পদ আসলেও তারা সাথে সাথে তা দান করে দিত। এবং (১০) সুফীদের সকল ধ্যান, জ্ঞান, চেস্টা প্রচেস্ট ছিল আত্নীক উন্নয়নের জন্য। এই জন্য সর্বদা তাদের ঠোট যিকিরে ব্যাস্ত থাকত।

এই সুফীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের বিশ্বাস প্রচলিত আছে যেমন, তাদের কেউ কেউ বিশ্বাস করে পৃথিবীতে কতিপয় আব্দাল, কুতুব এবং আওলীয়া আছেন, যাদের হাতে আল্লাহ তায়ালা পৃথিবী পরিচালনার কিছু কিছু দায়িত্ব সোপদ করে দিয়েছেন। সুতরাং তারা তাদের ইচ্ছামত পৃথিবীর কাজকর্ম পরিচালনা করে থাকেন। আবার কোন কোন সুফী বিশ্বাস করে থাকে যে তাদের মাশায়েক ও অলীগন বিপদ থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম ইত্যাদি। যেহেতু বাংলাতে আগত সূফী বা ইসলাম প্রচারকরা এই ধরনের কোন বিশ্বাস অন্তরে লালন করত কী করত না? এই প্রশ্নের উত্তর জানার কোন উপাই নেই, কেননা এই সম্পকিত কোন ঐতিহাসিক দলীল দস্তাবেজ আমাদের হাতে নেই তাই এই বিষয়ে এখানে কোন আলোচনা করব না। বস্তুত এখানে আমরা আমাদের আলোচনা শুধু মাত্র এই বিষয়টির মাঝে সীমাবদ্ধ রাখব যে, তৎকালে বাংলাতে আগত ইসলাম প্রচারকরা, যাদেরকে আমরা, সূফী, দরবেশ, পীর, ফকীর হিসাবে চিনি তারা কী প্রকৃত পক্ষে সূফী, দরবেশ, পীর, ফকীর ছিলেন না কী দায়ী ইলাল্লাহ বা নায়েবে রসুল ছিলেন?

চলবে -------

বিষয়: বিবিধ

১৩৬৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

369986
২৪ মে ২০১৬ দুপুর ০৩:৪৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এই পোষ্ট এর সাথে অনেকাংশেই দ্বিমত পোষন করছি। সুফিজম বলতে এখন যা প্রচলিত সেটা ইসলাম বিরোধি হলেও প্রাথমিক যুগের সুফিরা কখনই ইসলাম বিরোধি ছিলেননা। তারা কোনভাবেই সংসার বিমুখ ছিলেন না।
২৫ মে ২০১৬ দুপুর ০২:২৪
307127
আনিসুর রহমান লিখেছেন : রেদওয়ান কবির সবুজ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য। প্রথমিক যুগের সূফী কেন, কোন সময়ের বা যুগের সুফীদের সম্পকে, আমি আমার লেখাতে বলিনি যে তার ইসলাম বিরোধী বা বেদাতী। এমন কী এই পোস্টেও আমি আমার অবস্থান পরিষ্কার ভাবে ব্যাখ্যা করে বলেছি, “তদের (সুফীদের) সম্পকে কুরআন কী বলেছে সে সম্পকে বিভন্ন তাফসিরের সারাংশ এখানে উল্লেখ করব বুঝার সুভিদার জন্য কিন্ত বিতর্ক এড়ানোর জন্য তাসাউফের অবস্থান ইসলামে কী, সে সম্পকে কোন ব্যাক্তিগত বা বিশেষগ্যের মতামদ নিয়ে আলোচনা করব না।
আমি এখানে মুলত দেখাতে চেষ্টা করেছি যে, কী ভাবে ইসলামের শ্ত্রুরা সূফীইজম বা তাসাউফকে বাংলাদেশের ইসলাম পন্থীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আথবা ঢাল হিসাবে ব্যাবহার করে মানুষকে বিভ্রন্ত করেছে তার একটি পরিষ্কার চিত্র মাত্র।
সুফীরা সংসার বিরাগী বা সংসার বিমুখ হয়, এটা আমার কোন মনগড়া কথা নয় বরং বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন বিখ্যাত শেখরা তাদের সম্পকে আলোচনা করতে যেয়ে আমাদের তা অবহিত করে গিয়েছেন। যেমন একেবারে প্রথম যুগের ইসলামী চিন্তাবিদ শেখ ইবন আল জাওজী (রঃ) তাসাউফের উপর “তালাবিস ইবলীস” নামক একটি বই লিখেছেন। সেখানে সে তাসাউফের অনুসারীদের ‘সূফী’ নামকরনের উৎপত্তি সম্পকে বলতে যেয়ে দুইটি কারন উল্লেখ করেন। তাসাউফের অনুসারী প্রথম ব্যাক্তি, যে তার জীবনকে উৎসরগ করেছিল ক্বাবার চারপাশে ইবাদত বন্দিগী করার মধ্য দিয়ে,(এ কথার অর্থ একটাই দাড়ায় সে ব্যাক্তি সংসার বিমুখ ছিল) তার নাম ছিল ‘সুফা’। ঐ ব্যাক্তির নাম অনুসারে পরবতিতে যারা তার পথকে অনুসরণ করেছে তাদেরকে বলা হয় সূফী।
369995
২৪ মে ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:১৩
সঠিক ইসলাম লিখেছেন : সূফীদের মূল তরীকা চারটি - চিশতিয়া (হযরত মইনুদ্দীন চিশতী কর্তৃক), কাদরিয়া (হযরত আব্দুল কাদের জিলানী কর্তৃক), নকশেবন্দিয়া (হযরত বাহাউদ্দীন নকশেবন্দি কর্তৃক) মুজাদ্দেদীয়া (হযরত মুজাদ্দিদ আলফে সানী সেরহিন্দ কৃর্তক প্রতিষ্ঠিত) এর চার তরিকার শত শত ইমাম ছিলেন, তারা সবাই ই বলে গিয়েছেন যে সুফিবাদ শরীয়ত অনুযায়ী পরিচালিত হয় না তা কুফরী। যেমন এ ব্যাপারে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (র.) এর একটি বিখ্যাত উক্তি হল - যে ব্যাক্তি ইলমে মারেফাত হাসিল করল কিন্তু ইলমে শরীয়ত বর্জন করল সে কুফরী করল, যে ব্যাক্তি ইলমে শরীয়ত হাসিল করল কিন্তু ইলমে মারেফাত বর্জন করল সে ফাসেকী করল, যে ব্যক্তি উভয়টিই অর্জন করল সেই পরিপূর্ণ মুমিন হল। তাই শরীয়ত বহির্ভূত সুফিবাদ ইসলামী স্কলার্স এবং ইমামগণ ই ত্যাগ করতে বলেছেন, কিন্তু যে সুফিবাদ শরীয়ত বহিভূত নয় (অন্তরের রোগ গুলো দূর করা, ফরজ ওয়াজিব আমল করার পাশাপশি সুন্নাত, নফল আমল গুলোও বেশী বেশী পালন করা, হারাম থেকে বেচে থাকার পাশাপশি মাকরুহ থেকেও বেচে থাকা ইত্যাদি)তা ইসলাম পরিপন্থি নয়। যেমন - হাদীসে জিব্রাইলে এসেছে আল্লাহর রাসূল (র.) বলেছেন তুমি এমন ধ্যান ও মুরাকাবার সাথে ইবাদত কর যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছ, যদি তুমি এ স্তরে পৌছতে ব্যার্থ হও তবে অন্তত এতটুকু মুশাহাদার সাথে এবাদত কর যেন তোমার অন্তরে এ ভয়টুকু বিরাজমান থাকে যে আল্লাহ তোমাকে দেখতেছেন। আর ইবাদতে এ ইখলাস ও একাগ্রতা অর্জন করার জন্যই এ সুিুফবাদ। তাই ইসলাম বিরোধী সুফিবাদের সাথে ইসলামী সুফিবাদের কোন সম্পর্ক নেই।
২৫ মে ২০১৬ দুপুর ০২:২৬
307128
আনিসুর রহমান লিখেছেন : সঠিক ইসলাম আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য। আমি আমার লেখাতে কোন সময়ের বা যুগের সুফীদের সম্পকে বলিনি যে তার ইসলাম বিরোধী বা বেদাতী। এমন কী এই পোস্টেও আমি আমার অবস্থান পরিষ্কার ভাবে ব্যাখ্যা করে বলেছি, “তদের (সুফীদের) সম্পকে কুরআন কী বলেছে সে সম্পকে বিভন্ন তাফসিরের সারাংশ এখানে উল্লেখ করব বুঝার সুভিদার জন্য কিন্ত বিতর্ক এড়ানোর জন্য তাসাউফের অবস্থান ইসলামে কী, সে সম্পকে কোন ব্যাক্তিগত বা বিশেষজ্ঞের মতামদ নিয়ে আলোচনা করব না।
আমি এখানে মুলত দেখাতে চেষ্টা করেছি যে, কী ভাবে ইসলামের শ্ত্রুরা সূফীইজম বা তাসাউফকে বাংলাদেশের ইসলাম পন্থীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ঢাল হিসাবে ব্যাবহার করে মানুষকে বিভ্রন্ত করেছে।
অন্তর বা “নফসের” উপর কী ভাবে নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করা যায় বা কলবকে কী ভাবে পরিষ্কার করা যায় তা আমার লিখার বিষয় বস্তু না হওয়ায় আমি তা এখানে উল্লেখ করিনি। ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File