রম্য রচনা – কান ধরে উঠ বস
লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ১৯ মে, ২০১৬, ০৯:০০:২০ রাত
প্রথম কালো দৈনিকের একটা খবরে এসে চোখ আটকে গেল, নাস্তিকদের গুরু মারা চেল্যা মতিলালের। খবরে প্রকাশ স্কুলের প্রধান শিক্ষক হনুমান চন্দ্র কান্তিকে প্রকাশ্য দিবালোকে কান ধরে উঠ বস করানো হয়, খবরে আরও প্রকাশ নাস্তিক মুরদাতদের পথের কাঁটা ওসমান পরিবারের একজন বিশেষ ভাবে নির্বাচিত জন প্রতিনিধি তখন সেখানে উপস্থিত ছিল। খবরটা পড়ার সাথে সাথে তার মেজাজ বিগরে যায়। এই সময়ে তার ফোনটা ‘মুসলিমরা সব অঙ্গী মঙ্গী জঙ্গী ---‘ এই সুরের তালে তালে বেজে উঠে। বিরক্তির সাথে সে ফোনটা রিসিভ করে বলে বল উঠে হ্যালো, কেডা (কে)? অপর পাশ থেকে আক্কেল আলী বলল, নাস্তিক মতিলাল স্যার আমি আক্কেল আলী। মতিলাল তখন উত্তজিত ভাবে বলল, আক্কেল খবর হুন(শুন) নাই। আক্কেল বলল, কোন খবর স্যার আলেমে দীন, মাওলনা মতিউর রহমান নীজামী (রঃ) শাহাদাতের খবর। এই কথা শুনা মাত্র মতিলাল তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বলল, তুমি টার্কি নেতা এরদুগান, ইরান, তুরান -- অঙ্গী মঙ্গী জঙ্গীদের লাহান (মত) কী এই সব অবল তাবল বকতাছ। তখন আক্কেল বলল, তবে কী স্যার, আপনে রাজকোষ চুরির কথা বলতাছেন। তখন মতিলাল বলল, এই অল্প কয়ডা টাহা চুরি কোন ব্যাপার হইল মিয়া, নাহ তোমারে বুঝনো যাইব নানে। আক্কেল বলল, স্যার আপনি ব্যাপারটা একটু খোলসা করে বলেন। তখন মতিলাল বলল, আমি একজন শিক্ষকের কথা কইতে ছিলাম হেরে (তারে) কীনা কান ধরে উঠ বস--- আক্কেল আলী তার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলল, বুঝছি স্যার বুঝছি। হয় আপনি মাদ্রাসার শিক্ষকদের কথা বলতাছেন যাদের --- কান ধরে – নয়ত বুয়েটের সেই শিক্ষকের কথা বলতাছেন, আহা রে বুয়েটের এত বড় একজন শিক্ষক তারে কিনা---- আক্কেল আলীর কথা শেষ হওয়ার পূর্বে মতিলাল গাধার মত গর্জন করে বলে উঠে, শালা ভোন্ধা গাজী গরুর লেজ, ---- আমি হেতেগো (তাদের) কথা কইতাছি না। হেতেরা হইল ‘চারাল’, হেতেগো (তাদের) লাত্তি গুতা মারলেই বা কী আর কানে ধরে উঠ বস করালেই বা কী!!! আমি কইতাছি আমগোর (আমাদের) শিক্ষক হনুমান চন্দ্র কান্তি--- । সেই সময় নাস্তিক শিক্ষা মন্ত্রী বোবা ডাকাইত ঝনঝাটঅয়ালা মতিলালকে ফোন করে, ফলে মতি আক্কেলের লাইনটা কেটে দিয়ে, মন্ত্রীর কলটা রিসিভ করে বলে, হ্যালো স্যার স্যার আপনি এই সময়ে। মন্ত্রী বোবা ডাকাইত ঝনঝাটঅয়ালা বলল, খবর হুনেন নাই। মতিলাল বলল, জী স্যার –ঐ শিক্ষকের কান ধরে উঠ --- মন্ত্রী তার কথা কেরে নিয়ে বলল, মিতিরে মতি এই জন্য তরে আমার ভাল লাগে, তুই কোন কথা বলার আগে বুঝে যাস। মতি বলল, স্যার আপনেও তো কম না, এই চারল গো বাশ দেওয়ার জন্য স্কুল সেলেবাসে --- । মন্ত্রী বোবা ডাকাইত তারাতারি তাকে থামানোর জন্য বলল, ও মতি তুমি এই তান (এ সকল) কী কইবার লাগছ (কী বলতেছ), আমারে বিপদে না হালাইবা (ফেলবা)। মতি বলল সরি স্যার সরি স্যার। তখন শিক্ষা মন্ত্রী বোবা ডাকাইত বলল, সব সময় চুপচাপ বোবা হইয়া থাকবা আর তলে তলে বাশ দিবা, কথা বুঝ নাই? মতিলাল বলল, স্যার যে কি কন, এই কিছিমের তলে তলে বাশ দিতে দিতে একদিন প্রধান মন্ত্রী গদীটাই --- শিক্ষা মন্ত্রী বোবা ডাকাইত তারাতারি আবারও মতিকে থামিয়ে দিয়ে বলল, আজকে কি হইল (হল) তোমার, মতি নিজের ভুল বুঝতে পরে বলল, স্যার কি করমু স্যার মনের কথা বার বার মুখে -- শিক্ষা মন্ত্রী বোবা ডাকাইত আবার মতিকে থামিয়ে দিয়ে বলল, আর এ বিষয়ে কথা বাড়াইয়া লাভ নাই, তবে যদি এ বিষয়ে তোমার কোন পরামর্শ থাকে। তখন মতিলাল বিদ্যুৎসাহিত (মহা উৎসাহে) হয়ে বলল, পরামর্শ নাই, কী যে কন(বলেন) না স্যার, আমার পরামর্শ এইডাই (এটাই) ঐ স্কুলের পরিচালনা বোর্ড ভেঙ্গে আমাদের লোক বসানো হোক আর ঐ প্রধান শিক্ষককে তার চাকরি ফিরাইয়া দিন। তবে স্যার এই সুযোগে আমগোর (আমাদের) পথের কাটা ঐ ---- ওসমান পরিবারের বেবাগতেরে (সকলেরে) হুগার ভিতর একখান কইরা (একটি করে) বাশ দিতে যেন ভুল না হয়। এই সুযোগ হাত ছাড়া করা ঠিক হবে না।
বিঃ দ্রঃ চরিত্র গুল কল্পিত, জীবিত বা মৃত কারো সাথে কোন সম্পক নেই।
বিষয়: বিবিধ
১২৯৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্ত্রি মশাই আরো কইয়াছেন যে প্রেম নিবেদন অপরাধ নয়!!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন