আমাদের পূর্ব পুরুষদের শত্রু-মিত্র পর্ব ৫
লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ০৩ মে, ২০১৬, ০১:০৩:৫৩ দুপুর
ইসলাম প্রচারকদের দ্বারা (যারা আমাদের কাছে সূফী, পীর, আওলীয়া নামে পরিচিত) ঃ
বাংলার যমীনে জাত পাত, ছোট বড় ভেদাভেদ সহ একটি নিপীড়ন মূলক অংশীবাদী বৈরী পরিবেশের বিপরীতে যেয়ে, যারা ইসলামের মহান স্যম্য, একত্ববাদ ও শান্তির বানীকে প্রচার করে, এই অঞ্চলে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনেন তারা আজ আমাদের কাছে পীর (শিক্ষক), ফকীর, আওলীয়া, সুফী, দরবেশ নামে পরিচিত। তাদের ইসলাম প্রচার কেন্দ্রগুল যা আজ আমাদের কাছে খানকা/ আস্তানা/দরবার শরীফ নামে সর্বাধিক পরিচিত। তাদের এই ইসলাম প্রচার কেন্দ্র (খানকা) গুল আজও বাংলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থেকে, এক সময়ে তদের সরব উপস্থির কথা ঘোষণা করছে জোড়াল ভাবে, এই অঞ্চলে তাদের অবদানের কথা আমাদের স্মরন করিয়ে দিছেছ।
যদিও স্বার্থবাদী মহলের বিভ্রান্তকর প্রচারনার ফলে তাদের আনেকেই আজ আমাদের কাছে অতি- প্রাকৃতিক মানুষ রূপে পরিচিত লাভ করেছে। আর তাদের এই অতি- প্রাকৃতিক পরিচয়কে কাজে লাগিয়ে মুসলিম নাম ধারী কেউ কেউ মানুষকে বিভ্রান্ত করে নিজেদের আখের গুছাছে, তৈরি হয়েছে নতুন এক শ্রেনী ভণ্ড পীর/ সুফী। আর এই ভণ্ডদের কাযকালাপে বিতশ্রাদ্ধ হয়ে আমাদের অনেকেই আজ এই মহান ইসলাম প্রচারকদের অবদানের কথা ভুলতে বসেছি। অথচ এই মহান ইসলাম প্রচারকরা বর্ণ হিন্দুদের প্রবল বাধাকে উপেক্ষা করে বাংলার মুসলিম বৈরী পরিবেশে নিজেদের জীবনকে বিপন্ন করে, সকল প্রকারের বাধা বিঘ্নকে উপেক্ষা করে, বিপদ আপদ বালা মুসিবতকে মোকাবেলা করে ইসলাম প্রচার করেছ তারা আমাদের নিপিরীত নির্যাতিত পূর্বপুরুষদের পাশে দারিয়ে ছিল, শুনিয়ে ছিল তাদেরকে ইসলামের শান্তির বানী, দিয়েছিল তাদের মানবিক সাহায্য সহোযোগিতা। তারা সংসার বিরাগী ও দুনীয়া বিমুখ বৈরাগ্যদের ন্যায় কিংবা বুদ্ধের অনুসারীদের ন্যায় চুপ করে বর্ণ হিন্দুদের অন্যায় অত্যাচার জুলুম নির্যাতন মেনে নেয়নি বরং কোন কোন ক্ষেত্রে তারা স্থানীয় বৈরী হিন্দু রাজাদের সাথে জেহাদ করেছ, তাদের কেউ কেউ এই জেহাদে শাহাদাত বরন করেছ, কেউবা বিজয়ী হয়ে ইসলামী রাজ্যের সীমানা বর্ধিত করেছ। তাদের সেই ইসলাম প্রচার কেন্দ্রগুল (খানকা) আজও বাংলার আনাচে কানাচে তাদের কাজের জ্বলন্ত স্বাক্ষী হয়ে দারিয়ে আছে।
পূর্বের দলীল দস্তাবেজ ঘেটে দেখা যায় যে, মুসলমানদের দ্বিতীয় খলীফা হযরত ওমর ফারুকের খিলাফত কালে সর্বপ্রথম মুসলমানদের একটি দল এই অঞ্চলে আসে ইসলাম প্রচারের জন্য। ইসলাম প্রচারের জন্য বাংলাদেশে আগত এই দলের নেতা ছিল হযরত মামুন এবং হযরত মুহায়মিন। অতঃপর দ্বিতীয় যে দলটি এসে ছিল তাদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ছিল হযরত হামিউদ্দীন, হযরত আব্দুল্লাহ এবং হযরত আবু তালীব। তাদের দেখানো পথকে অনুসরণ করে মিশর ও প্যারস্য থেকে আরও পাচটি দল এসেছিল বাংলাতে ইসলাম প্রচারের জন্য।
এখানে উল্লেখ্য যে ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা হযরত ওমর ফারুকের খিলাফত কালে, বর্তমানে আমরা ‘তাসাউফ’ বা ‘সুফীইজম’ বলতে যা বুঝি তার কোন অস্থিত ছিল না। সুতরাং এই ঘটনা এটাই প্রমান করে যে বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারের জন্য যারা এসে ছিল তাদেরকে গণহারে সুফী লেবেল দেওয়া সার্ব ক্ষেত্রে সত্য নয় । বস্তুত নাস্তিক মুরদাত এবং ইসলাম বিরোধী কিছু লোক এই মহান ইসলাম প্রচারকদের চরিত্রকে হিন্দু পৌরানিক চরিত্রের ন্যায় অতিপ্রাকৃতিক একে এবং তদেরকে সুফী লেবেল দিয়ে, ইসলামের জন্য তাদের কুরবানী ও অবদানকে বিকৃত ভাবে তুলে ধরছে নিজেদের কাংখিত উদ্দেশ হাসিলের জন্য।
চলবে-------
বিষয়: বিবিধ
১১৮৮ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন