আমাদের পূর্ব পুরুষদের শত্রু-মিত্র পর্ব ১
লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ২৯ এপ্রিল, ২০১৬, ০৪:০৮:২৪ রাত
বর্তমান হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের দ্বারা একটি জনপ্রিয় প্রচারনা হল বাংলাদেশের মুসলমানদের পূর্ব পুরুষ ছিল নিন্ম বর্ণের হিন্দু। কিন্তু ঐতিহাসিক সত্য হল এই অঞ্চলে শ্রীমানা মুভমেন্টের ফলে বৌদ্ধ ধর্মের অবিরভাব ঘটে এবং সত্য অনুসন্ধানী আমাদের পূর্ব পুরুষেরা হিন্দু ধর্মকে ত্যাগ করে বৌদ্ধ ধর্মকে আপন করে নেয়। এটা আজও ঐতিহাসিকদের কাছে বিস্ময়ের উদ্রেগ করে, কেন ভারতের যে অঞ্চলে (যেমন বাংলাদেশ, পশ্চিম পাঞ্জাব) বুদ্ধের অনুসারীরা সংখ্যা গরিষ্ঠ ছিল হিন্দুরা নয় সেই অঞ্চলে ইসলামের প্রসার ঘটেছে এবং মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ অঞ্চল হিসাবে অন্তপ্রকাশ করেছে। ঐতিহাসিক সত্য হল বাংলাদেশীদের পূর্ব পুরুষরা ছিল প্রধানত বুদ্ধার অনুসারী কোন ভাবেই নিন্ম বর্ণের হিন্দু না।
বাংলার রাজা শশাঙ্কের মৃত্যুর পর যোগ্য নেতার অভাবে গোলমালে, বিশৃঙ্খল অবস্থা বরাজ করছিল। এই সময়টাকে অনেক ঐতিহাসিক “ মৎস বিচার” ( ছোট মাছকে বড় মাছ কতৃক গলধঃকরন) সময় বলে উল্লেখ করেছেন। এই অসহনীয় অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য আমাদের পূর্ব পুরুষরা এই অঞ্চলের সন্তান গোপালাকে তাদের রাজা নির্বাচিত করেন। ঐতিহাসিক প্রমান থেকে দেখা যায় যে গোপাল সরাসরি জনতা দ্বারা নির্বাচিত ছিলেন না, কিছু সমান্ততান্ত্রিক সর্দার দ্বারা নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। পালরা বুদ্ধার অনুসারী ছিলেন। তখন রাস্ট্রে ধর্ম ছিল হিন্দু নয় বৌদ্ধ। পালরা বৌদ্ধ ধর্মের প্রবতক গৌতম বুদ্ধের এলাকার রাজা হিসাবে অন্যান অঞ্চলের বুদ্ধার অনুসারীদের কাছ থেকে যথেস্ট সস্মান পেতেন।
পাল রাজারা শ্যামপুরা বৌদ্ধ বিহার সহ অনেক বৌদ্ধ মন্দির নির্মাণ করেন। পালরা বাংলা ভাষার প্রভুত উন্নতি সাধন করে, উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় চর্যা পদের কথা। তারা প্রতিষ্ঠা করেন বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় নালন্দা ও বিক্রমাশীলা। পালদের সময় বাংলার সাথে আরব আব্বাসীয় খলিফাদের সুন্দর সম্পক বিদ্যমান ছিল। পালদের রাজত্ব কালেই ইসলাম সর্বপ্রথম বাংলাতে প্রবেশ করে, মধ্যপ্রাচ্য ও বাংলার মধ্যে বানিজ্য সম্পক প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে; এর প্রমান পাওয়া যায় পালদের প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকায় আব্বাসীয় কয়েন বা মুদ্রা পাওয়া যাওয়া মধ্য বিয়ে। এ ছাড়াও আরব ইতিহাসবিদরা, পালদের সময়ে বাংলা ও বগদাদের মাঝে বনিজ্যিক ও বুদ্ধিবিত্তিক সম্পকের কথা উল্লেখ করেছেন।সে সময়ের জ্ঞান বিজ্ঞানের কেন্দ্রভুমি বাগদাদ, মহাকাশ বিজ্ঞান এবং গণিতের ক্ষেত্রে ভারতীয় অর্জনকে কাজে লাগিয়ে ছিল।
এ প্রসঙ্গে উল্লখ্য যে, বাংলাদেশে ইসলামের প্রবেশ ঘটেছে প্রধানত তিন ভাবে
(ক) আরবদের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পক স্থাপনের মধ্য দিয়ে।
(খ) মুসলিম সেনাপতিদের দ্বারা এই অঞ্চল বিজয়ের মাধ্যমে
(গ) ইসলাম প্রচারকদের দ্বারা যারা আমাদের কাছে সূফী, পীর, আওলীয়া নামে পরিচিত।
(ঘ) এবং অন্যান্য উপায়ে
চলবে -----
বিষয়: বিবিধ
১৩৮২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বাংগালি মুসলিম যদি নিন্ম শ্রেনির হিন্দুদের উত্তরাধিকারিও হয় তাতে কিছু যায় আসেনা। কারন ব্রাম্মন্যবাদি শ্রেনিভেদ ইসলাম মানেনা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন