ইসলামের নারী নীতি (Woman Policy) এবং দাওয়া—শেষ পর্ব

লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ০৯ জানুয়ারি, ২০১৬, ১০:৫৭:৩১ সকাল

বস্তুত ইসলামের নারী নীতি বুঝতে হ’লে এই নারী নীতিগুল সম্পকে আমাদের একটি পরিষ্কার ধারনা থাকতে হবে অর্থাৎ আমাদেরকে ইসলামী বিয়ে-শাদী, ইসলামে স্বামী -স্ত্রীর দায়িত্ব কর্তব্য, পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব কর্তব্য, সন্তানের প্রতি পিতা-মাতার দায়িত্ব কর্তব্য, মিরাজ বা ইসলামের উত্তরাধীকার এবং স্বাক্ষ্য ও সুরক্ষা নীতি প্রভৃতি বিষয়গুল সম্পকে একটি পরিষ্কার ধারনা রাখেতে হবে।

কেননা এই নীতিগুল একটার সাথে আরেকটা এমন উতপ্রোতভাবে জড়িত যে, শুধু একক ভাবে একটি বিষয়কে ব্যাখ্যা করলে যেমন সেই ব্যাখ্যাকে সম্পুর্ণ ব্যাখ্যা বলা যায় না এবং বিষয়টি বুঝার ক্ষেত্রে ভুল বুঝা বুঝির সম্ভবানাই বেশী থাকে। বিষয়টি বুঝার সুভিদার জন্য একটি উদাহরণ দেওয়া হল। যেমন ইসলামী সমাজের প্রথম ধাপ শুরু হয় পরিবার থেকে। পরিবারকে যদি আমরা একটি একক ইউনিট ধরি তবে সেই ইউনিটের প্রধান বা আমীর হল ছেলে (এক্ষেত্রে আমাদের মনে রাখা দরকার যে, কাজের সুভিধার ও শৃংখলার জন্য যেমন এক দেশে দুই জন প্রধান বা রাজা থাকে না, সেরূপ ভাবে কোন একক ছোট ইউনিটের দুই প্রধান হতে পারে না)। এতে স্বাভাবিক ভাবে যে প্রশ্ন উঠে তা হল ইসলামী সমাজ কী মেয়েদের থেকে ছেলেদের বেশী সুভিদা দিয়েছে? মেয়েদেরকে হেয় করেছে? উত্তর হল মোটেও তা না। পরিবারের প্রধান হওয়ার ফলে ছেলেদের কাথে অনেক দায়িত্বের বোঝা চাপানো হয়েছে এবং ছেলেদেরকে সেই দায়িত্ব পালনের অস্ত্র হিসাবে মেয়েদের থেকে ভিন্ন দৈহিক ও মানুষিক গুন দেওয়া হয়েছে।

অপর দিকে ইসলাম সন্তানকে তার পিতা মাতার সেবা করার ক্ষেত্রে পিতার থেকে মাতাকে প্রধান্য দিয়েছে অনেক অনেক বেশী। এক্ষেত্রে মেয়েদের প্রাধান্য দিলেও ছেলেদের হেয় করা হয়নি। এমনি ভাবে আমরা দেখি যে মেয়েদের কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সার্বিকভাবে কল্যাণকর একটি স্বাক্ষ্য ও সুরক্ষা নীতি দেওয়া হয়েছে ইসলামে।

এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হ’ল, ইসলামের নারী নীতিগুল একটার সাথে আরেকটা এমন উতপ্রোতভাবে জড়িত থাকার ফলে অমুসলিমতো বহু দূর সাধারন মসলমানদের পক্ষেও এই নীতিগুল বুঝা বেশ কঠিন। আমি নিজেই এর অনেক প্রমান পেয়েছি, অনেক মুসলিম ভাই নাস্তিক-মুরতাদ এর অপপ্রচার দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ে ইসলামের অমুক নারী নীতি ‘এই’ তমুক নারী নীতি “ঐ” বলে আমার কাছে এসে অভিযোগের সুরে প্রশ্ন করেছ, অবশ্য তাদের কাছে এর যৌতক ব্যাখ্যা তুলে ধরার পর আস্তে করে কেটে পরেছে। কারও তকওয়া বা আল্লাহ ভীতি না থাকলে এমনটা ঘটাই স্বাভাবিক। শুধু ইসলামের বিবাহ নীতি নয়, ইসলামের অন্যান্য নীতি গুলও যখন আমরা এই মাপকাঠিতে বিচার করতে পারবো বা বুঝতে পারবো তখন এর কল্যাণকর দিকটা আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।

একটি ছোট ঘটনা বলে এই বিশাল ও জটিল বিষয়টি শেষ করব। ঘটনাটি এক আরব মুসলিম ভাইয়ের। ঘটনার স্থান অস্টেলিয়া। সে একজন ট্রাক্সী ড্রাইভার। একদিন সে তার গাড়ীতে করে তার এক মহিলা প্যাসেঞ্জারকে নিয়ে যাচ্ছিল। তাদের মাঝে আলাপচারীটার ফলে ঐ মহিলা প্যাসেঞ্জার যখন জানতে পারল যে, সে একাই তার ফ্যামিলির ফাইন্যানশিয়াল দিকটা দেখে, তখন সে তাকে বলল, তুমিতো খুব মহান লোক হে!! কেননা আমি আমার ফ্যামিলির অর্ধেক খরচ দিয়ে থাকি আর আমার পাটনার দেয় অর্ধেক খরচ । ঐ ট্রাক্সী ড্রাইভার যখন তাকে জানাল, শুধু সে নয় সব মুসলমানরাই তা করে থাকে। তার মানে হ’ল সব মসলমান মহান!! তখন ঐ মহিলা প্যাসেঞ্জার রেগে গিয়ে বলল, তুমি মিথ্যা বলছ, আমার কলিগ একজন মুসলমান, সে তার মেয়ে বন্ধু নিয়ে থাকে(Living together) এবং সে আমাদের মতই সংসারের জন্য অর্ধেক অর্ধেক খরচ করে। বুঝুন ঠেলা।

বিষয়: বিবিধ

৯৬১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File