আক্কেল আলী ও খেজুর আলী (রম্য রচনা) বিষয় পুলিশের চাকরী -৯

লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ২১ এপ্রিল, ২০১৫, ০৫:১১:০২ বিকাল

আজ পহেলা বৈশাক, বাংলা বছরের প্রথম দিন। আক্কেল আলী পুলিশের পোশাক পরে বাসা থেকে বের হওয়ার জন্য যেই মুহুতে দরজা খুলল, ঠিক তখন আক্কেলের মা ও বোন মমতাজ বিশাল আকারের বাজার করে ঘরে দরজার কাছে এসে পৌছেছে। আক্কেলের মা আক্কেলকে কাজে যেতে দেখে অবাক হয়ে বলল, “বাবা আক্কেল, আজ না বছরের প্রথম দিন, ছুটির দিন, এই জন্য আমরা বাজার সদাই করে নিয়ে আসলাম যাতে সবাই এক সাথে বসে গল্প করতে পারি ও খেতে পারি। আমি তোমার মামাদেরকেও আসতে বলেছি। এই দিন তুমি কেন কাজে যাছ। আক্কেল বলল, আম্মা সরকার যদি হয় জঙ্গী ফ্যাসিস্ট জালিম বদমাইশ লুচ্চা-লুফাংগা আর চাকুরীটা যদি হয় পুলিশের, তখন পুলিশের চাকুরটা হয়ে যায় কুত্তার চাকরী। বোঝ নাইকা। তখন আক্কেলের মা বলল, হেইয়া কী না বুঝি বাবা, অহন দেশের যেদিকেই তাকাই খালী দেখবার পাই এই আজাজিল গুলার মুখ আর হাম্বা হাম্বা ধ্বনি আর আকাম-কুকামের খেলা। বাবা রে এই খেলার মাঝে পইরা কহন যে এই বুইড়া বয়েসে মান সস্মান হারাই তা একমাত্র আল্লাহ্‌ই জানে। তয় বাব দিউটি কোন এলাকায় পরেছে। আক্কলে বলল, ভার্সিটি এলাকায়, আম্মা এই এলাকায় দিউটি থাকলে মনটা খুশিতে বাক বাক করে, কেন চাই এইহানে আমরা ঘুমাইয়িইয়া ঘুমাইয়িইয়া দিউটি করি, আর আমগোর কাজ করে আম্বা হাম্ব, নাস্তিক-মুরদাত। তখন মমতাজ বলল, তোমাদের এই ঘুমাইয়িইয়া ঘুমাইয়িইয়া দিউটি করার জন্যই আমরা, এমন সুন্দর দিনে বাসার বাহিরের কোন প্রগামে না যেয়ে, ঘরোয়া ভাবে উপভোগ করার ব্যাবস্থা করছি। আক্কেল বলল, কেন কেন? আক্কেলের বোন বলল, কাজে যাও সময় হলে বুঝতে পারবা।

আক্কেলের গুলী খেয়ে ল্যেংরা হয়ে যাওয়া ছেলেটার নেতৃতে এক জম জমাট আড্ডা চলছে। একজন বলল, দোস্ত মেডামের বুদ্ধির জোরে মনের সব ইছাই পূর্ণ করতে পেরেছি কিন্ত সেক্স, এ পর্যন্ত বলে থেমে গেল। আরেক জন বলল দোস্ত থামলা কা, এই বিষয়ে লুজ্জা করলে চলত, এই ব্যাপারে একমাত্র মৌলবাদীরা ছাড়া কেউ লুজ্জা করতে পারে না। আরেক জন বলল, দোস্ত তুমি অক্কলে ঠিক কথাই কইছ মাগার কথা হইছে গিয়া এই বিষয়ডায় তোমার এত উৎসাহ কেলা। আক্কেলের গুলী খেয়ে ল্যেংরা হয়ে যাওয়া ছেলেটা বলল, বুঝবার পারছি, তোমগোর হকলের একই সমস্যা – সেক্স। এতে আমি তোমগোরো কোন দোষ দেখি না । দেখ নাই আমগো মন্ত্রী মহা মানকী সিন কী কইছে? তখন একজন বিদুৎসাহিত হয়ে বলল, কী কইছে ল্যাংরা ভাই, এই কথা বলে বুঝতে পারল,ভুল হয়ে গেছে কিন্ত তত ক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেছে। ল্যাংড়া তার উপরে খেপে গিয়ে বলল, কাউলার পুত তোরে আমি খাইছি, ঐ জাম্বা ধর হালারে, আউজকা যদি এই হালার ডান্ডা কাইটা হালার পুতরে খাসী না বানাইছি তো আমার নাম ল্যংরা না। এতে চারিদিকে হাসির রোল পরে যায়, ল্যাংড়াও ঐ ছেলেটার মত একই ভুল করল মুখ ফসকে নিজেকে নিজে ল্যাংড়া বলল ফলে ছেলেটা হয়রানীর হাত থেকে রক্ষা পেল। হাসির রোল থামলে, ল্যাংড়া বলল, ভুল মানুষেরই হয়, শয়তানের কোন ভুল নাই, যাউগা যা কইতে ছিলাম, আমগো মন্ত্রী মহা-মানকী-সিন কইছে, হাম্বা ভাইরা তোমাদের সকল বিষয়ের দিকেই আমাদের খেয়াল আছে, এমন কী সেক্স, শুধু মাত্র তোমাদের সেক্স এর কথা চিন্তা করে আমরা ছত্রীদেরকে, নার্সদেরকে হেজাব করতে নিষেধ করেছি, হুমকী দিয়েছি হেজাব না ছারলে, মৌলবাদীর লিস্টে নাম অন্তভুক্ত করার । হাম্বা ভাইরা শুধু তাই নয়, ‘প্রথম মাইনঙ্কা কালো’ সহ বিভিন্ন পত্রিকায় আমরা লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে এই এজেন্ডা প্রচারের চেষ্টা আমরা জারি রাখেছি, কী ভবে বাংলার রমণীকুলকে আধুনিকতার কথা বলে,স্বাধীনতার কথা বল চিটিং বাটপারির মাধ্যমে ঘর থেকে বের করে তোমাদের উপহার দেওয়া যায়, এই বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে যেয়ে আমি আমার বাল পাকীয়ে ফেলেছি, আমাদের ঘুম হারাম হবার অবস্থা। আর এই কিছিমের আকাম-কুকাম করতে যেয়ে জনতা হাতে প্যাদনী খেয়ে তোমাদের কেউ হাসপাতালে আসলে, তাদের বিশেষ সেবার জন্য আমাদের ভবিষৎ পরিকল্পনা হল নার্সদের সংখ্যা বারিয়ে দশ হাজার থেকে বারিয়ে দশ লক্ষ করে দেওয়া। তোমরাই কউ তোমাদের আর কত ভাল করবো। তবে আমার উপদেশ হাম্বা ভায়েরা ভুলেও আর সেঞ্চুরী মানিক চানের মত আকাম কুকামে একা একা সেঞ্চুরী করতে যাবে না, যা করবা তা দল বদ্ধ ভাবে করবা, কেননা এতে গন পিটুনির হাত থেকে রক্ষা পাবা।

ল্যাংরার কথা উতসাহিত হয়ে অবশেষে হম্বা গ্রপের সবাই এই বিষয়ে একমত হল যে, গতবাধা সেক্স করতে করতে তারা এখন সেক্সর প্রতি উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে। তাই দরকার নতুন কিছু। তাই আজকে তারা এই পহেলা বৈশাকের দিনে, গ্রপ সেক্স করবে, প্রথমে তার দলবদ্ধ ভাবে মহিলাদের উপর আক্রমণ করবে, তার পর বস্ত্রহরণ করবে এবং ---। এই জন্য তাদের দরকার ভেপু, আক্রান্ত মহিলাদের চিৎকার যাতে কেউ শুনতে না পায় তার জন্য এই ব্যাবস্থা। এক জনের উপর ভেপু আনার দায়িত্ব দিয়ে তারা দলবদ্ধ ভাবে বেরিয়ে পড়ল।

বিষয়: বিবিধ

১৯৬৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

316155
২১ এপ্রিল ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫৮
শফিউর রহমান লিখেছেন : আহারে! বাংলার কি দশা!!!
২২ এপ্রিল ২০১৫ দুপুর ০৩:১৪
257356
আনিসুর রহমান লিখেছেন : বাংলাকে শনির দশা থেকে মুক্ত করতে হলে, শুধু হা হুতাশ করলে মনে হয় না কোন কাজ হবে। আমাদেরকে অবশ্যই বিভিন্ন ভাবে চেস্ট করে যেতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ্‌() সাহায্য না আশে। ধন্যবাদ
316988
২৬ এপ্রিল ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৩৯
শফিউর রহমান লিখেছেন : জি, সহমত। তবে আমি বাংলা ভাষার কথা বলেছি এখানে। ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File