আক্কেল আলী ও খেজুর আলী (রম্য রচনা) বিষয় পুলিশের চাকরী ৭
লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ০৩ এপ্রিল, ২০১৫, ০৫:৪৯:৫৬ বিকাল
মগা উদ্দিন মগার সমাবেশে পৌছে আক্কেল দেখল লোকজন বোমার ভয়ে মগার থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে দাড়িয়ে আছে। আক্কেল সরাসরি মগার কাছে গেল, রিপোর্ট করার জন্য, মগা তাকে দেখে বলল তোমার এত দেরি হল কেন? আক্কেল ঘটনা খুলে বললে মগা বলল হয়ত সে ময়না হলেও হতে পারে। কেননা সে ছাড়া খামাখা কেউ তোমাকে তার এলাকায় তার অনুমতি ছাড়া আটকাবে না এবং ময়না ইদানীং বিরোধী দলীয় নেতার কাযকালাপ মনিটরের দায়িত্ব পেয়েছে এবং লুঙ্গী পড়া শুরু করেছে। আক্কেল বলল, স্যার লুঙ্গী কেন স্যার? মগা বলল, লুঙ্গীর উপকারিতা কী পাগল বলে শেষ করা যাবে। ময়না আমাকে লুঙ্গী পড়ার উপকারিতা বুঝিয়ে বলার পর-ই-না আমি লুঙ্গী পড়া শুরু করেছি। আমিতো বলি যে লুঙ্গী না পরে সে বাংগালী-ই না দেখছ না আমি লঙ্গী পরে রয়েছি। আক্কেল বলল, বাংগালী না বলেন কী স্যার, তবে কী তারা নাগা না খাসিয়া না চাকমা? মগা কোন ভাল জবাব খুঁজে না পয়ে বলল, অফিসার খামাখা বক বক করে অযথা সময় নষ্ট না করে, তুমি আমাকে এই পাগলের হাত থেকে রক্ষা করার প্লান বল। আক্কেল কোন কথা না বলে, তার আনা বাক্স হতে একটি আংটি বের করে তার হাতে পড়ল। মগা তা দেখে রেগে গিয়ে বলল অই অফিসার আমারে তুমি বাচাতে এসেছ না মস্করা করতে এসেছে? আমার বিপদ দেখে ফাজলামো শুরু করেছ, একবার ধরলে কিন্তু কিছু রাখবো না, একেবারে সাফা করে ফেলবো এ তোমারে আমি বলে দিলাম। আক্কেল বলল, স্যার রাগ করবেন না আমাকে আগে শেষ করতে দিন, কেন না এইডা আমার পরিকল্পনারই অংশ। তারপর ব্যাখা করে বলল, স্যার এই যে আংটিটা দেখছেন এটা কোন সাধারন আংটি নয়। এই আংটিতে একটি ছোট চেম্বার আছে সেখানে বিশেষ এক ধরনের ক্যামিকাল আছে। এই আংটির সাহায্য নিয়ে এই ক্যামিকাল হেমায়েত পাগলার শরীরে প্রবেশ করালে তার শরীরে এক ধরনের খিচুনির তৈরি হবে তাতে সে কিছুটা লাফঝাপ করে ঘুমিয়ে পরবে আর এই ফাঁকে আপনি চলে যেতে পারবেন। কিন্তু স্যার – মগা বাঁধা নিয়ে বলল, আবার কিন্তু কেন? না মানি স্যার যে ক্যামিকেল ব্যাবহার করতে যাছিছ তা এখনও আমেরিকাতে ব্যাবহারের অনুমতি পায়নি কিনা তাই একটু ভুয়ে ভয়ে আছি, আমরা কী স্যার এই ক্যমিকাল ব্যাবহার করবো। মগা বলল, আফিসার এটা জিজ্ঞাসা করার কোন বিষয় হল। এই ধরনের পাগল ছাগল থাকার চেয়ে না থাকাই ভাল। কাজ চালাইয়া যাও। আক্কেল আর সময় নষ্ট না করে কাজ শুরু করে দিল। হেমায়েদ পাগলা ক্যামিকালের প্রভাবে মগার পা ছেরে লম্ফ-ঝম্ফ শুরু করার সাথে সাথে মগা এক দৌরে মঞ্চের সিরির দিকে চলে গেল কিন্তু তার লুঙ্গী যে হেমায়েত পাগলার হাতে রয়ে গেছে সেদিকে সে খেয়েল করল না। সে মঞ্চের সিরিতে পা ফেলতে ফেলতে বলল, এমন সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার আমার কাজ নাই, এতদিন তো ভুয়া কাহিনী তৈরি করে ইসলামপন্থীদের মৌলবাদী – জঙ্গী বলে মানুষকে বোকা বানাইতে ছিলাম, এখনতো দেখি রাখাল ও বাঘের কাহিনীর মত সত্যি সত্যি মৌলবাদী – জঙ্গী আমার সমাবেশে এসে গিয়েছে। দেশের ক্ষেতাপুরি, টাকা-পয়সা বহুত কামিয়েছি, বিদেশের ব্যাংকে আছে আমার লক্ষ লক্ষ ডলার, এই দেশে আর না, এখনই আমি আমেরিকা চলে যাব, যথেস্ট হয়েছে এই বলে সে সমাবেশ থেকে বের হয়ে আসার জন্য মঞ্চের সিড়িতে পা রাখল। অপর দিকে অর্ধ ন্যাংটা মগাকে দেখে সমাবেশের চারিদিকে একটা হাস্যরোল পরে গেল। অনুষ্ঠানের উদ্যাকতারা ঐ দিকে মগার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলল, স্যার এই অবস্থায় আপনি গাড়ীতে উঠতে গেলে অপ্রিতিকর অবস্থার সস্মুখীন হতে পারেন, তার চেয়ে বরং ভাষণের ডায়াসে চলে যান ও কিছু বলতে থাকেন জনতার উদ্দেশে। কেননা ভাষণের ডায়াসই এই মঞ্চ এক মাত্র স্থান যেখানে দাড়ালে আপনার শরীরের নীচের অংশ দেখা যাবে না এবং জনতার মনযোগ আপনার ভাষণের দিকে চলে যাবে। এই ফাঁকে আমরা আপনার লুঙ্গী উদ্ধার করে এনে আপনাকে দিতে পারবো। মগা বলল, লুঙ্গীর ক্ষেতাপুরি ময়নার কুবুদ্ধিতে পরে কী বিপদের মধ্যেই না পরছি, ইজ্জত সম্মান গেল বলে, তোমরা আমার জন্য লুঙ্গী নয় তারাতারি একটা পায়জামার ব্যাবস্থা কর। অবশেষে মগা কোন উপায় না দেখে আগ্যতা ভাষণের ডায়াসে দারিয়ে বক্তিতা শুরু করে দিল।
মগা বলল, ভাইসব, আজকে আপনারা নিজ চোখে দেখতে পেলেন, মৌলবাদী – জঙ্গীরা আজকে বাংলাদেশে কিভাবে বন্যার পানির মত বিস্তার লাভ করছে। আর দুঃখ জনক হলেও সত্য যে এদেরকে আশকারা দিচ্ছে প্রধান বিরোধী দল। এরাই হরতাল ডেকে এবং সেই হরতালকে সফল করার জন্য আমাদের মিল-কারখানা গুল ধ্বংস করে দিচ্ছে। আপনারা হয়ত অবগত আছেন, কিভাবে তারা ধাক্কা মেরে ঝাকি দিয়ে ১০১ তলা খাম্বা প্লাজাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ফলে হাজার হাজার গারমেন্ট শ্রমিক আহত ও নিহত হয়েছে ও বিদেশে আমাদের সুনাম নষ্ট করেছে। আমার পা ধরে বার বার ঐ জঙ্গীটা বলতে ছিল স্যার ধাক্কা মেরে ঝাকি দিয়ে ১০১ তলা খাম্বা প্লাজাকে ধ্বংস করে ভুল করেছি আমাকে মাফ করে দিন কিন্তু আমার কথা ছিল একটাই “তুমি আমার পা ধরে মাফ চাও বা না চাও কিংবা পা ছাড় বা না ছাড় এমনকি আমার পা ভেঙ্গে হাতে ধরাইয়া দেও না কেন, আমি তোমারে মাফ করতাম না। আজকে আমি এই সমাবেশে দারিয়ে ঘোষণা করতে চাই যে, এই হেমায়েত জঙ্গী ও তার পিছে যেই থাকুক না কেন, হোকনা সে আমাদের দলেরই লোক তাকে সঠিক তদন্তের মধ্য দিয়ে বিচারের আওতায় নিয়ে আসবো।
চলবে
বিষয়: সাহিত্য
১২৫২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ব্যাপক বিনোদন পাইলাম। মগারা এমনই হয়য়। উপর দিয়ে ফিটফাট নিচে দিয়ে সদরঘাট!
Thanks for read my post and your comment.
খুবই দারুণ মাজার পোস্ট ধন্যবাদ আপনাকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন