আক্কেল আলী ও খেজুর আলী (রম্য রচনা) বিষয় পুলিশের চাকরী ৬
লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ২৮ মার্চ, ২০১৫, ০৩:২১:২৪ দুপুর
পুলিশ কমিশনার ঘটনা স্থলে পৌঁছে দেখতে পেল। কুঠাল হতে একটি কালো কুচ কুচে লোক ময়নার সহকারী মজিদকে ধাওয়া করছে। কমিশনার সাথ সাথে তার পিস্তল বের করে একটা ফাকা আওয়াজ করল। ময়না আওয়াজ শুনে কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে চেষ্টা করল কিন্তু কোন কথা বলতে না পেরে পরিস্থিতি বুঝতে পেরে হাত থেকে কুঠলটা ফেলে দিল। ইতিমধ্য ময়নার সহকারী মজিদ পালিয়েছে। আক্কেল আলী বলল, কাউলা এইবার তোরে খাইছি এবং হাতকরা পরিয়ে দিল। ময়না আক্কেলের কথা শুনে তার হাত পায়ের দিকে তাকিয়ে আঁতকে উঠল। সে বুঝতে পারল ঐ গুলী লাগার ফলে সে মরেনি ঠিক কিন্তু তার মাঝে এমন কোন পরিবর্তন ঘটেছে যার ফলে পুলিশ কমিশনার তাকে চিনতে পারছে না, অন্য দিকে সে শত চেষ্টা করেও মুখ দিয়ে কোন শব্দও করতে পারছে না। পরিস্থিতি অনুধাবন করে ভয়ের একটা খারা স্রত তার শরীর দিয়ে বয়ে গেল। ইতি মধ্যে পুলিশ কমিশনার ময়নার জন্য রমার আনা অস্ত্র ভর্তি ট্রলীটি আবিষ্কার করে ফেলেছে। পুলিশ কমিশনার আক্কেলকে বলল, কী ঘটেছিল? আক্কেল বলল স্যার সে আমাকে কইছে, সে সন্ত্রাস দমন মন্ত্রী ময়না এবং তার কথা---- থাক থাক বলে কমিশনার আক্কেলকে থামিয়ে দিল। বলল বুঝতে পারছি কালুটা একটা বড় ধরনের প্রতারক। পুলিশ কমিশনার এবার ময়নার দিকে নজর দিল এবং জিজ্ঞাস করল, ঐ কালা তোম নাম কী? এত অস্ত্র তুই কোথায় থেকে পেয়েছিস? কেন তুই নিজেকে সন্ত্রাস দমন মন্ত্রী ময়না পাখী বলে প্রতারনা করতাছিস। ময়না কথা বলতে বারং বার চেষ্টা করেও ব্যাথ হল। আক্কেল বলল, দেখছেন স্যার দেখছেন, এতক্ষণ এই শালায় ময়না পাখীর মত পই পই কইরা কথা কইতে লাগতেছিল, আর অহন আফনেরে দেইখা একেবারে বোবা বইনা গেছে। দেখছেন স্যার দেখছেন কী কিছিমের বজ্জাত। পুলিশ কমিশনার ময়নার পাছায় জোরে একটা লাত্তি মেরে বলল, চিন্তার কোন কারন নাই, সাইজ করলে সব ঠিক হইয়া যাবে। (আক্কলেকে উদ্দেশ করে বলল), যাও অরে নিয়া মিরপুর থানায় যাও, ঐ খানে সন্ত্রাস দমন মন্ত্রী ময়নার ভাগিনা ট্যেরা জল্লাদ কাজ করে, তারে যেয়ে সব বল, দেখবানে তখন কেমনে সব পই পই করে বলে দেয় ।
মিরপুর থানার টর্চার সেলে ময়নার ভাগিনা বিরোধী দলীয় এক কর্মীকে বেদরছে মারছে। এই সময়ে আক্কল আলী ময়নাকে নিয়ে থানায় হাজির। কজের সময় বাঁধা প্রাপ্ত হওয়ায় ময়নার ভাগিনা ট্যারা বিরক্ত মুখে অফিসে এসে আসামী নিয়ে আক্কেলকে তার থানায় দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল, আপনি এই থানায় আসামী নিয়ে আসলেন যে। আক্কেল পুরা ঘটনা খুলে বললে, ট্যারা ময়নার উপর রাগে গম গম করতে করতে বলল, আক্কেল ভাই আপনি চিন্তা করবেন না, এই শালারে আজকে আমি কাবাব বানাইয়া না খাইছি তো আমার নাম ট্যাঁরা জল্লাদ না। ময়নার গালে জোরে একটা চড় মেরে বলল, শালা বাইনারপুত ----- আমার মামার নাম ভাঙ্গাইয়া ব্যাবসা, শুমন্দিরপুত রাখ তোরে আমি বুঝাই বার লাগতাছি। এত জোরে একটা চড় মারার পরও ময়না মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের না করায়, ট্যারা অবাক হয়ে আক্কেলকে বলল, শালায় কথা কয়না কেন? শালায় কী বোবা না বয়ড়া? আক্কেল সাথে সাথে বলল, না না এই শালায় বহুতই বজ্জাত, একটু আগেও তোতা পাখীর মত পই পই কইরা কথা বলবার লাগতাছিল, অহনে বিপদ দেইখা ভাব ধরছে, একটা বোবা ডাকাইত কোহানকার? ইতিমধ্যে গুলীর প্রভাবে ময়নার শরীর থেকে এক ধরনের গন্ধ বের হওয়া শুরু হয়েছে। আক্কেল বলল, ভাই ট্যারা কেমন জানি দুর্গন্ধ পাছিছ, থানার ভিতরে কোন কিছু পচা-দচা আছেনি। টারা গন্ধটার উৎসের সন্ধান করতে যেয়ে আবিষ্কার করল, এই গন্ধটি আসছে ময়নারর গা থেকে। সে আক্কেলকে বলল, বুঝেন নাই এই শালার শরীর থেকে খাটাসের গন্ধ আসতাছে। ক্রমেই দুর্গন্ধটা বারতে থাকায়, ট্যারা আক্কেলকে বলল, আক্কেল ভাই আপনি এইডা কী মাল নিয়া এসেছেন। এই খাটাসটার গন্ধতো থানাতে বসাই দুষ্কর, এই খাটাসটারে সাইজ করমু কেমনে। আক্কেল দেখল এই বিকট গন্ধের জন্য তার বমি হয় হয় অবস্থা, তাই বলল, ট্যারা ভাই এই শালারে পাশের রুমে নিয়া পাংখার সাথে ঝুলাইয়া দেন, এতে আপনি দুর্গন্ধ থেকে বাঁচবেন আবার শালায় সাইজও হইব। এই বলে সে মগা উদ্দিন মগার সমাবেশের উদ্দেশে বের হয়ে পড়ল। ট্যারা দেখল আক্কেলের বুদ্ধি খারাপ না, তাই সে ময়নাকে পাশের রমে নিয়ে গিয়ে ফানের সাথে ঝুলিয়ে ফেন ছেরে দিল। থানার কর্মরত সবাই তামাসা দেখতে সেই রুমে এসে জড় হল কিন্তু বপত্তি দেখা দিল ফেনের সাথে ঘূর্ণনের ফেল ময়না বমি করে দিল এবং সে তা ফেনের সাথে ঘুরতে ঘুরতে চারিদিকে ছড়িয়ে দিল এবং তা সকলের গায়ে এসে লাগল। ফলে থানার সকলে ওয়াক থুঃ, ওয়াক থুঃ করতে করতে থানা থেকে বের হয়ে আসল।
বিষয়: বিবিধ
১১১৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভালো লাগলো
ধ্যনবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন