বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস : গুম খুন বন্ধ ও সম্প্রচার নীতিমালা বাতিলের দাব--র্যাবকে দায়মুক্তি না দিতে প্রস্তাব
লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৩:২৫:৪৪ দুপুর
বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। এ বিষয়ে বুধবার সেখানে একটি যৌথ প্রস্তাব পাস হয়েছে। এতে র্যাব ও অন্যান্য নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর অব্যাহত মানবাধিকার লংঘনের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকা- ঘটনো। শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদ- বাতিল করতে বলা হয়েছে এতে। নারায়ণগঞ্জে বহুল আলোচিত সেভেন হত্যা মামলার বিষয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।
গুমের ঘটনায় সরকারকে দায়ী করে ইউরোপীয় সংসদ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলে গুম হওয়া ব্যক্তিদের ফেরত দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ইউরোপীয় সংসদ শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে নিরাপত্তা বাহিনীর শক্তি প্রয়োগ ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের মৌলিক নীতিমালা অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছে। প্রস্তাবে বিরোধী দলকেও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বলা হয়েছে নতুন সম্প্রচার নীতিমালা বাতিল করতে। গত ৬ই আগস্ট বাংলাদেশ সরকার প্রকাশ করেছে নতুন সম্প্রচার নীতিমালা। এর মাধ্যমে মিডিয়ার স্বাধীনতাকে সীমিত করা হয়েছে। সুশীল সমাজের স্বাধীনতা সীমিত করা হয়েছে।
ইউরোপীয় সংসদ এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যম নীতিমালা, এনজিও নিয়ন্ত্রণ আইন ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের কথা উল্লেখ করে এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গণমাধ্যম নীতিমালায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হতে পারে আশঙ্কা করে ইউরোপীয় সংসদ বলেছে, বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশ এমনিতেই ১৭৯ টি দেশের মধ্যে ১৪৫ তম স্থানে অবস্থান করছে।
ইউরোপীয় সংসদ গণমাধ্যম নীতিমালায় বাতিল করে বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
নতুন নিয়ম করে এনজিওগুলোর ওপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আন্তর্জাতিক মান রক্ষায় ব্যর্থ হচ্ছে মন্তব্য করে ইউরোপীয় সংসদ মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদ-ের পরিবর্তে আজীবন কারাদ- দেয়াকে ‘স্বাগত’ জানিয়েছে।
রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর বিদেশী সংস্থাগুলো যে তদন্ত করেছে তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু যে তদন্ত বাংলাদেশ সরকার করেছে তা এখনও পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। শ্রম আইনের সামান্য সংস্কার হলেও এখনও যারা শ্রমিক ইউনিয়নে যোগ দিতে চান বা ইউনিয়ন গঠন করতে চান তাদেরকে অব্যাহতভাবে হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়।
র্যাবের হাতে ৮০০ জন নিহত হয়েছে
র্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ১০ বছরে এই বাহিনীর হাতে প্রায় ৮০০ মানুষ মারা গেছে জানিয়ে ইউরোপীয় সংসদের প্রস্তাবে র্যাব ও পুলিশকে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানানো হয়েছে। গৃহীত প্রস্তাবে আরো বলা হয়, এসব ঘটনায় দায়ী কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বিশ্বের বৃহত্তম সংসদ হিসেবে পরিচিত এই সংসদের প্রস্তাবে বলা হয়, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর থেকে শেখ হাসিনা সরকার নাগরিক অধিকার খর্ব করার জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
৮০৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন