দুনিয়া(Physical World) এবং আখেরাত(Meta Physical World) শেষ পর্ব

লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ১৩ মার্চ, ২০১৪, ০৫:৪২:৪৭ বিকাল

বিজ্ঞানের আলোকে আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখা কতটা যুক্তি যুক্ত, নাকি আখেরাত সম্পর্কিত পুরো বিষয়টা বিজ্ঞানের আলোকে উদ্ভট ও অযৈতিক? নাকি নাস্তিক-মুরদাতদের পরিভাষায়, আখেরাত (Meta Physical world) হাস্যকর কল্পনা। মানুষ মরতে ভয়পায় বলেই উদ্ভাবন আখেরাতের(Meta Physical world) জান্নত ও জাহান্নাম (Heaven & hell belong to Meta Physical world)। আখেরাত (Meta Physical world) হচ্ছে জীবনের বিরুদ্ধে এক অশ্লীল কুৎসা; আখেরাতের(Meta Physical world) কথা বলা হচ্ছে জীবনকে অপমান করা।

পর্ব এক থেকে এগার পর্যন্ত আমরা যে আলচনা করেছি বস্তুত তার মঝেই এর উত্তর নিহিত আছে। দুনিয়া(Physical World) এবং আখেরাত(Meta Physical World) সম্পর্কে আমরা এ পর্যন্ত যে তথ্য উপস্থাপণ করেছি তার সার সংক্ষপ হ’ল---

আমাদের মহাবিশ্বের তুলনায় আমাদের এই পৃথিবী হল ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র একটি স্থান। আবার এই ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র স্থানে বসে আমরা আমাদের সর্ব বৃহৎ ও সর্বাধুনিক দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্য নিয়ে, মহাবিশ্বের(Physical World) সর্ব শেষ যে অংশটুকু পর্যন্ত দেখতে পাই; আমাদের তৈরি সর্বাআধুনিক মহাকাশযানের সাহায্যে, সে দূরত্ব পর্যন্ত পৌছতে লাগবে; পাঁচ লক্ষ হাজার মিলিয়ন বছরের চেয়েও বেশী সময়!!! আব্যেশিক ভাবেই ঐ পরিমাণ দূরত্ব অতিক্রম করে আবার গন্তব্যে ফিরে আসতে একই পরিমান সময় লাগবে। অথচ আমরা বাঁচি মাত্র ৮০/৯০ বছর, সেখানে আমরা এরূপ লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি বছর ব্যাপিয়া ভ্রমণের কথা চিন্তাতো দূর কল্পনাও করতে পারি না।(অবশ্য এ ক্ষেত্রে আমরা মহাকাশ ভ্রমণের সময় যে ভয়ংকর ও বৈরী পরিবেশকে মোকাবেলা করতে হবে তা বিবেচনায় আনি নাই।) অর্থাৎ আজকের বিজ্ঞানই আমাদের বলছে যে,এ মহাবিশ্বের(Physical World)সীমানা অতিক্রম তো দুরের কথা বরং সর্বাআধুনিক যন্ত্রের সাহায্য নিয়ে এর যে অংশটুকু পর্যন্ত দেখতে পাই, সে দূরত্ব পর্যন্ত পৌছানোই আমাদের পক্ষে অসম্ভব ও অবাস্তব।

এখন কেউ কেউ হয়ত বলতে পারেন, অদূর ভবিষৎতে বিজ্ঞানের নব নব আবিস্কারের মাধ্যমে আমরা মহাবিশ্বের প্রান্ত সীমানা পর্যান্ত যেতে পারবো!! এক্ষেত্রে আমাদের উত্তর হ’ল আজকের আধুনিক বিজ্ঞানের সুত্রই আমাদের বলছে যে এটা অসম্ভব ও অবাস্তব; সুতরাং আপনি বিজ্ঞানের সুত্রকে অস্বীকার করে কোন নব নব আবিস্কারের কথা বলছেন???

এক্ষেত্রে কেউ কেউ হয়ত এই প্রশ্নটি করতে পারে, যেখানে আজকের আধুনিক বিজ্ঞান আমাদের এই মহাবিশ্বের শুধু মাত্র ক্ষুদ্রতম একটি অংশ সম্পর্কে জানতে পেরেছে, বিজ্ঞান বলছে এই মহাবিশ্বের প্রান্ত পর্যন্ত ভ্রমণ অসম্ভব; সেখানে আমরা কেন এই মহাবিশ্বের বাহিরে আরও মহাবিশ্বের(Meta Physical World) অস্থিতের কথা বলবো। যেখানে আমরা আমাদের মহাবিশ্বের সম্পর্কে সম্পুনরূপে জানি না সেখানে কেন আমরা অন্য মহাবিশ্বের(Meta Physical World) অস্থিতের কথা বলবো অথবা কেন আমরা নাস্তিক-মুরদাতদের সুরে সুর মিলিয়ে বলবো না, আখেরাত (Meta Physical world) হাস্যকর কল্পনা। মানুষ মরতে ভয়পায় বলেই উদ্ভাবন আখেরাতের(Meta Physical world) জান্নত ও জাহান্নাম (Heaven &

hell belong to Meta Physical world)। আখেরাত (Meta Physical world) হচ্ছে জীবনের বিরুদ্ধে এক অশ্লীল কুৎসা; আখেরাতের(Meta Physical world) কথা বলা হচ্ছে জীবনকে অপমান করা।

এর উত্তরে আমরা বলবো যে, যা আমরা দেখি না, যা আমরা বুঝি না, যা আমাদের জ্ঞান দ্বারা ধরা যায় না, তা আমরা মানি না। এ ধরনের যুক্তি কোন ভাবেই ভাল যুক্তি নয় কেননা ব্যাথতার অর্থ কোন ভাবেই সে জিনিস অস্বীকার করা হতে পারে না। সুতরাং এ কথা আমরা স্পস্টতই বলতে পারি যে, কেউ যদি আখেরাতের (Meta Physical World) অস্থিতকে স্বীকার করাকে অ- বৈজ্ঞানিক বলে। তবে অবশ্যই আমরা বলতে পারি, তার এই আখেরাতের (Meta Physical World) অস্থিতকে অস্বীকার করাটাও অ- বৈজ্ঞানিক। কেননা আজকের আধুনিক বিজ্ঞান আখেরাতের(Meta Physical World) অস্থিতের স্বপক্ষে বা বিপক্ষে কোন প্রমান উপস্থিত করতে ব্যার্থ। অর্থাৎ আখেরাতের(Meta Physical World) অস্থিতকে মানা বা না-মানার সাথে বিজ্ঞানের কোন সম্পর্ক নেই বরং এর সাথে যে বিষয়টির রয়েছে গুরুত্বপুন সম্পর্ক সেটা হল ঈমান বা বিশ্বাস। আপনি বিশ্বাসী হবেন না অবিশ্বাসী হবেন সেটা আপনার বিষয়। এটাই আপনার জন্য পরীক্ষা। কোরআনে আল্লাহ() এই বিশ্বাস সম্পকে বলেনঃ

“আর যারা তাগুতের দাসত্ব পরিহার করেছে এবং আল্লাহ() দিকে রুজু হয়েছে, তাদের জন্য সুসংবাদ। কজেই (হে নবী) সুসংবাদ দাও আমার সে বান্দাদেরকে, যারা মনোযোগ সহকারে কথা শোনে এবং উত্তম দিকগুল অনুসরণ করে। এরা সে সব লোক, যাদেরকে আল্লাহ হেদায়াত দিয়েছেন আর এরাই বুদ্ধিমান।(সুরা যুমার ঃ ১৭-১৮)

অন্যত্র আল্লাহ() তাগুতি চক্রান্তের ফলে বুঝতে ব্যার্থ হওয়া এর ফলে বিশ্বাস না করা বা ঈমান না আনার পরিণাম সম্পর্কে বলেনঃ

যারা তাদের পালন কর্তাকে অস্বীকার করেছে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। সেটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান। যখন তারা তথায় নিক্ষিপ্ত হবে , তখন তার উৎক্ষিপ্ত গর্জন শুনতে পাবে। ক্রোধে জাহান্নাম যেন ফেটে পরবে। যখনই কোন সম্পদায় নিক্ষিপ্ত হবে তখন জাহান্নামের রক্ষীরা তাদের জিজ্ঞাসা করবে তমাদের কাছে কি কোন সতর্ককারী আগমন করেনি? তারা বলবে হ্যাঁ আমাদের কাছে সতর্ককারী আগমন করে ছিল, অতঃপর আমরা মিথ্যারোপ করে ছিলাম এবং বলে ছিলাম আল্লাহ() কোন কিছু নাজিল করেনি। তোমরা মহা বিভ্রান্তিতে পরেরয়েছ।। তারা অরও বলবে যদি আমরা শুনতাম অথবা বুদ্ধি খাটাতাম, তবে আমরা জাহান্নামীদের মধ্যে থাকতাম না।” (সুরা মুলক: ৬-১০)

সবশেষে বলবো যে মনোযোগ সহকারে শুনা, বুঝা ও বুদ্ধি খাটিয়ে আখেরাতকে বিশ্বাস করার যায়গা হল এই দুনীয়া এবং বিশ্বাস না করার পরিণাম কি সেটাও আমরা জানি। এখন সিদ্ধান্ত আপনার। আল্লাহ() আমাদেরকে আল্লাহর দীনকে বুঝার তউফিক দান করুণ। আমীন

বিষয়: বিবিধ

১০৬৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

191803
১৩ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২৭
অনেক পথ বাকি লিখেছেন : আমাদেরকে আল্লাহর দীনকে বুঝার তউফিক হান করুন। আমীন Praying Praying
192015
১৪ মার্চ ২০১৪ রাত ০৪:৩৮
আনিসুর রহমান লিখেছেন : অনেক পথ বাকি ভাই আমার ব্লক বাড়ীতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। জাযাকাল্লাহ খায়ের

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File