ইতিহাসের মানদণ্ডে মাযহাবের (مذهب) উৎপতি ও ক্রম বিকাশ পর্ব ২
লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১২:৫৬:৪১ দুপুর
উম্যাইইয়াদের পতনের পর আসে আব্বাসীয়রা(৭৫০-১২৫৮ খ্রীঃ)। নবী করিম(সাঃ) চাচার নাম অনুসারে এই যুগকে বলা হয় আব্বাসীয় যুগ। এই যুগের প্রথম শতকে(৭৫০-৮৫০ খ্রীঃ) আনেকগুল মাযহাবের (مذهب) আবির্ভাব ঘটে; যা ছিল আগে প্রচলিত আইনের সাথে স্যামাঞ্জসপুন। বর্তমানে বিদ্যমান চারটি মাযহাব অর্থাৎ হানিফী, মালেকি, শাফেয়ী ও হাম্বলী ছারাও অনেকগুল মাযহাবের প্রকাশ ঘটে। তাদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য মাযহাব হল, আল জুহুরী, ইবন আবু লায়লা, ছুফফান-আত-তাহহুরী, জারী এর মাযহাব। আব্বাসীয় খেলাফতের পরর্বতি সময়ে ((৮৫০-১২৫৮ খ্রীঃ) এই সকল মাযহাবের মহান ইমামদের মৃত্যুর ফলে তাদের রেখে যাওয়া মাযহাবের মধ্যে সহজ বদ্ধতা পরিত্যাক্ত হয়ে তার জায়গায় কাঠিন্যতা বৃদ্ধি পায়। এ সময়ে যে গুরুত্বপুন একটি বিষয় বা ঘটনা যা মাযহাব ফ্যানাটিজম বা উগ্র মাযহাব প্রেমি তৈরি করতে একক ভুমিকা পালন করে তার নাম,‘মুনাতাহআরাত’ (Munaatharaaত)।এই ‘মুনাতাহরাত’ হল একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতার নাম যা রাজ দরবারে অনুষ্ঠিত হত, খলিফাদের মনোরঞনের জন্য। এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার একটি উল্লেখ্য যোগ্য বৈশিষ্ট ছিল, এখানে বিভিন্ন মাযহাবের ইমামরা এসে তাদের মাযহাবের স্বপক্ষে জোরালো যুক্তি প্রদর্শন করতো। ফলে তাদের মাঝে যে কোন ভাবেই হোক তাদের মাযহাবের সঠিকতা প্রমান করার প্রচেস্টা শুরু হয়। কেননা তখন ঐ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় হারার অর্থ শুধু এই নয় যে তারা খলিফার কাছ থেকে পাওয়া পুরস্কার থেকে বঞিত হবে বরং তার চেয়েও অনেক আনেক গুরুত্বপুন বিষয় জড়িত ছিল, আর তা ছিল সমাজে তাদেত সস্মান হারানোর ভয়। ঐ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় হারার অর্থ ছিল সমাজে তাকে ও তার মাযহাবকে ছোট বা হেয় করা। ঐ বিতর্ক প্রতিযোগিতা এতটাই জনপ্রিয়তা অর্জন করে যে ক্রমে ক্রমে তার রেশ রাজ দরবারের গণ্ডি পেরিয়ে সাধারণ জনতার মাঝে ছড়িয়ে পড়ে; এর ফলস্বরুপ মাযহাব ফ্যানাটিজম বা উগ্র মাযহাব প্রেমির সৃষ্টি হয় এবং তা আব্বাসী খেলাফতের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বের সকল মুসলমানদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে।
ঐ বিতর্ক প্রতিযোগিতার আরেকটি উল্লেখ যোগ্য কুফল হল, চারটি মাযহাব অর্থাৎ হানিফী, মালেকি, শাফেয়ী ও হাম্বলী ছাড়া আন্য সকল মহান ইমামদের মাযহাব ক্রমে ক্রমে হারিয়ে যাওয়া। অর্থাৎ মহান ইমাম আল জুহুরী, ইবন আবু লায়লা, ছুফফান-আত-তাহহুরী, জারী এর মাযহাব ক্রমে ক্রমে হারিয়ে যায় এবং এমন কি এই চার মাযহাবের বাহিরে যে আরও অনেক মাযহাব ছিল তাও লোকেরা ভুলে যায়। ফলে আজকে এসে এমন আবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে এই চার মাযহাবের বাহিরে যে আরও অনেক মাযহার বর্তমান ছিল তা লোকদের বিশ্বাস করানো কঠিন কাজ হয়ে দরিয়েছে!!!
চলবে
বিষয়: বিবিধ
১৩০১ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ
যা হোক এই সব বিষয়ে লিখতে হলে একটু আধটু আরবি না জানলে সমস্যা হয়।
জাযাকাল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন