দুনিয়া(Physical World) এবং আখেরাত(Meta Physical World) পর্ব ১০

লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ২০ নভেম্বর, ২০১৩, ১০:৫৫:২৪ সকাল

আখেরাত(Meta Physical World) সম্পর্কে বাংলাদেশী নাস্তিক-মুরদাতদের উল্টাপাল্টা ব্যাখার মুল কারন হল আখেরাত(Meta Physical World) সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান বা ধারনা না থাকা। আগের পর্বগুলতে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করে দেখেয়েছি যে, আজকের বিজ্ঞান, এই বিশাল মহাবিশ্বের(Physical World) শুধু মাত্র একটি ক্ষুদ্র অংশের রহস্য ভেদ করতে পেরেছে, সেখানে এই মহাবিশ্বের বাহিরে অপর মহাবিশ্বগুল(Meta Physical World) সম্পর্কে জানা যে অসম্ভব একটি কাজ তা আমরা পূর্বেই আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে আলোচনা করে দেখিয়েছি। কিন্তু তা সত্বেও আমরা দেখি যে নাস্তিক-মুরদাতদরা, যে আখেরাত(Meta Physical World) সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই এবং যে জগতকে তারা অস্বীকার করে; অথচ মজার ব্যাপার হল নাস্তিক- মুরদাতদরা, সে জগত সম্পর্কিত কুরআন ও হাদীসের তথ্যকে, নিজেদের জ্ঞানের আলোকে(যার ভিত্তি হল এই দুনিয়ার নিয়ম- নীতির উপর প্রতস্টিত ভোগবাদী বস্তুতান্ত্রিক দর্শন) ব্যাখা দাড়া করায়। ফলে আখেরাত(Meta Physical World) সম্পর্কিত তাদের ব্যাখা গুল কোন সত্যে উপর ভিত্তি করে না হওয়ায় বুঝার ক্ষেত্রে বিরাট বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। এ ক্ষেত্রে দুঃখজনক হলেও সত্যে যে তাদের দেও এই উল্টাপাল্টা ব্যাখার দারা অনেক সাধারণ মুসলমান বিভ্রান্ত হয়ে পরে। বিশেষ ভাবে বাংলাদেশী নাস্তিক-মুরদাতদরা যেহেতু মদ-গাজা, নাজ, গান, নারী ও সেক্সকে ভীষণ ভাবে পছন্দ করে এবং ভোগ-বিলাশ ও আমোদপ্রমোদ বলতে এর বাহিরে কোন কিছু চিন্তা করতে পারে না, তাই তাদের অপব্যাখা গুলও এই বিষয় গুল দ্বারা প্রচন্ড ভাবে প্রভাবিত হয়ে থাকে; ফলে তাদের বেহেশত বিষয়ক সব বর্ণনা গুল হুর, পরী, নারী ও সেক্স এর মধ্য সীমাবদ্ধ হয়ে পরে। অথচ নবী করিম() বেহেশতি নারীর বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। ------ ---- বেহেশতের কোন নারী যদি দুনিয়ার প্রতি দৃষ্টিপাত করে তবে সমস্ত দুনিয়া আলকিত ও খুশবুতে মহিত হয়ে যাবে। বেহেশতের একটা নাসীক(অথাৎ ওড়না) তো দুনিয়ার সব কিছুর চাইতে উত্তম। ( বুখারি শরিফ)। আমরা এখানে পরিষ্কার ভবে দেখছি যে দুনিয়ার ভোগ-বিলাশ ও আমোদপ্রমোদ আখেরাতের তুলনায় কিছু নয় এবং এই দুই জগতের ভোগ-বিলাশ, আমোদপ্রমোদ এর মধ্যকার পার্থক্য এত বিশাল ও বিরাট যে, তা এই দুনিয়ার ভোগবাদী দর্শন এর উপর ভিত্তি করে বুঝতে যাওয়া বিশাল মরুভূমির মাঝে মরীচিকার পিছে ছোটার সামিল। নবী করিম () এই দুই জগতের মধ্যকার পার্থক্য সম্পর্কে ধারনা দিতে গিয়ে বলেন, (হযরত সাহল ইবন সাদ বর্ণিত) জান্নাতের(Meta Physical World) মাঝে একটা চাবুক পরিমাণ স্থান, দুনিয়া(Physical World) এবং তার মাঝে যা কিছু আছে তার চাইতে উত্তম।------- (বোখারী শরীফ)। অথাৎ আল্লাহ() আমাদেরকে নবী করিম() এর মধ্যমে দুনিয়ার তুলনায় আখেরাতের উৎকষ্টতা, সম্পর্কে কিছু ধারনা দিতে চেয়েছেন মাত্র কিন্তু প্রকৃীত অবস্থা সম্পর্কে আমাদের কোন জ্ঞান নেই। বস্তুত আমরা যখন আখেরাত সম্পর্কে যা জানি তা অনুধাবন করতে পারবো ও আখেরাত সম্পর্কে যা জানি না তাও অনুধাবন করতে পারবো এবং সাফ্যলের সাথে এই দুই এর মাঝে সমন্বয় সাধান করতে পারবো; তখন কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত আখেরাত সম্পর্কিত ধারনাগুল অনুধাবনে সক্ষম হবো ইনসাআল্লাহ। উপরে আমরা বাংলাদেশী নাস্তিক-মুরদাতদদের জান্নাত সম্পর্কিত অপব্যাখার স্বরুপ সম্পর্কে আলোকপাত করলাম। এখন আমরা যদি আখেরাতের আরেক অংশ জাহান্নাম সম্পর্কিত তাদের অভিযোগ গুলর দিকে দৃষ্টিপাত করি তবে দেখবো, এক্ষেত্রে তাদের অন্যতম প্রধান অভিযোগ হল, আগুন বা শাস্তির ভয়ভীতি দেখিয়ে মানুষকে দীনদারী(ধার্মিক) হতে ব্যাধ করা।

আজকে যদি আমরা পৃথিবীর যে কোন দেশর দিকে তাকাই তবে দেখবো যে সমাজের সকলের কল্যাণের জন্য প্রতিটি দেশে তার নিজস্ব নিয়ম কানুন রয়েছে এবং এই নিয়ম কানুন গুল ব্যাস্তবায়নের জন্য রয়েছে কিছু প্রতিস্টান বা বিভাগ। এরুপ একটি বিভাগের নাম পুলিশ বিভাগ। যাদের অন্যতম প্রধান কাজ হল মানুষকে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে, অপরাধ মূলক কাজ থেকে বিরত রাখা এবং অপরাধীদের আটক করে শাস্তির জন্য বিচার বিভাগের কাছে ন্যাস্ত করা। আজকে যদি কোন সমাজ বা দেশ, মানুষের এই সাইকোলজী অস্বীকার করে এবং মানুষকে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে অপরাধ মূলক কাজ থেকে বিরত না রাখে। সমাজের কল্যাণের জন্য গঠিত পুলিশ বাহিনী ও অপরাধীকে শস্তি দেওয়ার জন্য গঠিত বিচার বিভাগের কর্যক্রম বন্ধ করে দেয়, তবে সেই সমাজ বা দেশে বসবাস করা যে কতটা অনিরাপদ ও ভয়ংকর হবে তা বুঝতে কোন বুদ্ধি খরচের দরকার পরবেনা। সুতরাং স্পস্টতই আমরা বুঝতে পারছি যে, জাহান্নামের শাস্তির ভয় প্রদর্শন কোন ভাবেই মানুষের প্রকৃতি বিরুদ্ধি নয় এবং তা মানুষের কল্যাণের জন্য।

এখানে উল্লেখ্য যে কুরআন ও সুন্না অনুসারে জান্নাত(Paradise) আখেরাতের((Meta Physical World) অংশ এবং জন্নাতে যাওয়ার যারা যোগ্যতা অর্জন করবে তারা “পুলসিরাত” নামক একটি প্যাসেজের(Path way) মাধ্যমে হাশরের ময়দান() থেকে জান্নাতে পৈছবে। কিন্ত এ বিষয়ে ওলেমাকেরামগন এক মত যে জহান্নাম এই দুনিয়ার(Physical World) মঝে কথাও লুকায়িত অবস্থায় আছে। মুমিনদের জন্য মৃত্যুর সাথে সাথে একে একে আসমানের দ্বার গুল উন্মুক্ত করা হবে কিন্ত কাফেরদের জন্য কখনই আসমানের দ্বার উন্মুক্ত করা হবে না; ফলে কাফেরা কখনই জান্নাতের((Meta Physical World) ঘ্রান নেওয়ার সৈভাগ্য অর্জন করবে না।

বিষয়: বিবিধ

১৬০০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File