দুনিয়া(Physical World) এবং আখেরাত(Meta Physical World) পর্ব-৭
লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ১৫ অক্টোবর, ২০১৩, ০৭:০৩:৪০ সন্ধ্যা
বর্তমান শতাব্দীকে বলা হয়ে থাকে জ্ঞান বিজ্ঞানের চরম বিকাশের যুগ। বিজ্ঞানের এই চরম বিকাশের যুগে, আমরা আমাদের মহাবিশ্বকে (Physical world) কতটা জানতে পেরেছি সে বিষয়ে এখানে আলোকপাত করবো। কেননা আখেরাতকে(Meta physical world) জানা ও বুঝার জন্য একটি অন্যতম গুরুত্বপুন ধাপ হল আমাদের এই দুনিয়াকে(Physical world) জানা ও বুঝা । কুরআন হাদিসের তথ্য থেকে আমরা জানি যে আমদের দুনিয়ার (Physical world) যেখানে শেষ সেখান থেকে আখেরাতের(Meta Physical world) শুরু এবং আমাদের এই দুনিয়া(Physical world) থেকে আখেরাতে(Meta physical world) প্রবেশ করতে হলে একটি প্রতিবন্ধককে আতিক্রম করতে হবে; আমাদের বুঝার সুভিদাথে নবী() এই প্রতিবন্ধকটিকে “আসমানের দরজা” বলে বর্ণনা করেছেন। নিন্মের আয়াতগুল থেকে আমরা আমাদের মহাবিশ্ব() সম্পকে অনেকগুল গুরুতবপুন তথ্য পাই।
(ক) অতঃপর তিনি আকাশমণ্ডলীকে দু দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রতেক আকাশে তার আদেশ প্রেরন করলেন। আমি নিকটবতী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশীল সর্বজ্ঞ আল্লাহ্() ব্যবস্থাপনা। (৪১:১২)
(খ) আমি নিকটবতী আকাশকে তারকারাজির দ্বারা সুশোভিত করেছি। (৩৭:০৬)
(গ) তারা কি তাদের উপরস্থিত আকাশের পানে দৃষ্টিপাত করে না - আমি কিভাবে তা নির্মাণ করেছি এবং সুশোভিত করেছি। তাতে কোন ছিদ্রও(ত্রুটি বা ভুল) নেই। (৫০:৬)
(ঘ) হে জিন ও মানবকুল নভমন্ডল ও ভুভমন্ডলের প্রান্ত যদি তোমাদের সাধ্যে কুলায়, তবে অতিক্রম কর। বিন্তু ছাড়পত্র ব্যাতীত তোমরা তা অতিক্রম করতে পাড়বে না। (৫৫:৩৩)
(ঙ)অতঃপর আল্লাহ্() যাকে পথ প্রদর্শন করতে চান তার বক্ষকে ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দেন এবং যাকে বিপথগামী করতে চান তার বক্ষকে সংকীর্ণ করে দেন যেন সে সবেগে আকাশে আরোহণ করছে। (৬:১২০)
(ক) অতঃপর তিনি আকাশমণ্ডলীকে দু দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রতেক আকাশে তার আদেশ প্রেরন করলেন। আমি নিকটবতী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশীল সর্বজ্ঞ আল্লাহ্() ব্যবস্থাপনা। (৪১:১২)। এই আয়াতটি থেকে আমরা যে তথ্য গুল পাই তা হলঃ –
এই আয়াতের একেবারে শুরুতে আল্লাহ্() আমাদের জানান যে তিনি সপ্ত আকাশ বা সাতটি বিশ্ব() সৃষ্ট করেছেন অর্থাৎ তিনি দুনিয়া(Physical world) এবং আখেরাত(Meta physical world) সৃষ্ট করেছন। দ্বিতিয়ত তিনি আমাদের এই সৃষ্টির সময় সম্পর্কে বলেন দুটি ধাপে (দু দিনে) এটা সৃষ্টি করা হয়েছে। সম্ভবত এখানে “দু দিনে” বলতে সৃষ্টি প্রক্রিয়া সম্পর্কে একটি ধারনা দেওয়া হয়েছে মাত্র, কেননা আজকে এসে আমরা জানতে পেরেছি যে, একেবারে আদিতে অর্থাৎ সৃষ্টির শুরুতে “সময়” বলতে কিছু ছিল না। আমাদের বিশ্বসহ সপ্ত আকাশ বা সাতটি বিশ্ব(World) সৃষ্টর সাথে সাথে তখন “সময়কে” সৃষ্টি করা হয়। কুরআন ও হদিস আমাদের আরও জানায় যে, আমাদের এই ত্রিমাতিক(Three Dimensional) মহাবিশ্বে সাথে “সময়” এর সম্পর্ক থাকলেও অর্থাৎ আমাদের এই ত্রিমাতিক(Three Dimensional) মহাবিশ্বের(Physical world) ক্ষেত্রে “সময়” একটি মাত্রা (Dimension) হিসাবে কাজ করলেও কিন্তু আখেরাতের ক্ষেত্রে “সময়” এর কোন ভুমিকা নেই। কেননা আখেরাতে(Meta Physical world) সময় বলতে কিছু নেই। এই আয়াতের তৃতীয় অংশ আমাদের জানাছে যে, সৃষ্ট এই সাতটি বিশ্বে তার আদেশ প্রেরন করলেন অর্থাৎ প্রতিটি বিশ্বের জন্য তার নিজস্ব নিয়ম-নীতি, যেমন আমাদের দুনিয়ার(Physical World) জন্য দুনিয়ার নিয়ম-নীতি(Physical Law) জারি করলেন। এই আয়াতের চতুর্থ অংশ আমরা যে তথ্য পাই তা হল, “আমি নিকটবতী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি।’ অর্থাৎ আল্লাহ্ কতৃক সৃষ্ট সাতটি বিশ্বের মধ্য আমাদের দুনিয়ার(Physical world) অবস্থান হল সর্ব নিন্ম যা তারা(প্রদীপ) সহ বিভিন্ন প্রকারের মহাকর্ষীয় বস্তুর দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছেন। এই আয়াতের শেষে আল্লাহ্() বলেন, এটা পরাক্রমশীল সর্বজ্ঞ আল্লাহ্() ব্যবস্থাপনা অর্থাৎ আমাদের এই দুনিয়াসহ সৃষ্ট সাতটি বিশ্বের ক্ষেত্রেই রয়েছে এক সুশৃখল সুনিপুণ ব্যাবস্থাপনা।
(খ) আমি নিকটবতী আকাশকে তারকারাজির(প্রদীপমালা) দ্বারা সুশোভিত করেছি। (৩৭:০৬)
এখানে আল্লাহ্() পুনরায় নিকটবতী আকাশে অর্থাৎ আমাদের এই মহাবিশ্বে অসংখ্য তারকার উপস্থির কথা বলেছেন।
গ) তারা কি তাদের উপরস্থিত আকাশের পানে দৃষ্টিপাত করে না - আমি কিভাবে তা নির্মাণ করেছি এবং সুশোভিত করেছি। তাতে কোন ছিদ্রও(ত্রুটি বা ভুল) নেই। (৫০:৬)
আখনে আল্লাহ্() আমাদেরকে নিকটবতী আকাশ অর্থাৎ আমাদের এই মহাবিশ্ব(Physical world) নিয়ে চিন্তা গবেষণা করতে বলেছেন। আমরা যদি এই মহাবিশ্ব নিয়ে চিন্তা গবেষণা করি, তবে দেখবো যে, বিভিন্ন মহাকাশীয় বস্তু যথা চাঁদ, সুয্য, গ্রহ, নক্ষত্র, তারা(Star), গ্যালাক্সী(Galaxies) ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত আমাদের এই মহাবিশ্ব। এই তারা এবং গ্যালাক্সী(Galaxies) সমূহ একে অপর থেকে এত বিশাল এবং বিরাট দূরত্বে অবস্থিত যে এই দূরত্বকে আতিক্রম করে এদের জয় করা আপাদ দৃস্টিতে অসম্ভব এবং অকল্পণীয়। কেননা আমরা যদি আমাদের মহাবিশ্বকে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করি তবে দেখবো যে এতে রয়েছে বিলিয়ন বিলিয়ন গ্রহ, নক্ষত্র, তারা, গ্যালাক্সী(Galaxies) যারা একে অপর থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন আলকবর্ষ(Light year) দূরত্বে অবস্থিত। “সময়কে” বিবেচনায় রেখে, যদি আমরা এই দূরত্ব অতিক্রমের কথা চিন্তা করি তবে তা অসম্ভব। এই বিষয়টি আমরা আরও পরিস্কার ভাবে বুঝতে পারবো, অস্ট্রেলিয়ান এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদ্বয় কতৃক আবিস্কৃত একটি কোয়াছাড়(quasar) যার নাম PKS 2000 minus 300 থেকে। তাদের আবিস্কৃত এই কোয়াছাড়(quasar) যার নাম PKS 2000 minus 300 আমাদের পৃথিবী থেকে ১৮ বিলিয়ন আলকবর্ষ(Light year) দূরে অবস্থিত। PKS 2000 minus 300 হল আমাদের জানা এই মহাবিশ্বের(Physical world) সবচাইতে দূরে অবস্থিত উজ্জ্বল বস্তু যা শক্তি বিকিরন করছে ১০০ মিলিয়ন মিলিয়ন সুযের ন্যায়। এই আবিস্কারের একটি গুরুত্বপুন দিক হল, এর পূর্বে যারা দাবী করছিল যে, এই মহাবিশ্বের প্রান্ত(Edge of the Physical world)আবিস্কার করে ফেলেছে তা বাতিল করে দেওয়া। নিন্মে আমাদের মহাবিশ্বের প্রান্ত আছে ধরে তার চিত্র দেওয়া হলঃ
চিত্রঃ আমাদের মহাবিশ্ব(Our Physical Universe)
চিত্রঃ আমাদের মহাবিশ্ব(Our Physical Universe)
চলবে--
বিষয়: বিবিধ
১২৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন