দুনিয়া(Physical World) এবং আখেরাত(Meta Physical World) পর্ব-৬
লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ১১ অক্টোবর, ২০১৩, ০৬:১৭:৫৭ সন্ধ্যা
অভিযোগঃ বহু ধর্ম রয়েছে পৃথিবীতে। একটি সরল প্রশ্ন জগতে পারে যে বিধাতা যদি থাকেন, তিনি যদি একলাই স্রষ্টা হন, তবে তিনি কেনো এতো ধর্ম পাঠালেন? ------- তিনি তা করেননি কেন? ( আমার অবিশ্বাস, হুমায়ুন আজাত,পৃষ্ঠা ৭৭)
পর্ব ৫-এ আমরা পরিষ্কার ভাবে দেখিয়ে ছিলাম যে একমাত্র কুরআন, আল্লাহ্() দেওয়া বানীকে অবিকৃত ভাবে ধারন করছে। অন্য সকল ধর্ম গ্রন্থগুলর মধ্যে কোন কোন ধর্ম যদিও আল্লাহ্র বানীকে ধারন করছে, কিন্তু তা বিকৃত অবস্থায়। বিভিন্ন যুগে সেই যুগের উপযোগী জীবন ব্যাবস্থা আল্লাহ্() প্রেরন করলেও, তার মূল কথা ছিল একই। আথাৎ আল্লাহ্() এবং তার বার্তা বাহকের (সেই সময়কার) প্রতি ঈমান আনা এবং সেই সময়কার উপযোগী জীবন ব্যাবস্থাকে গ্রহণ করা। এ সম্পকে আল্লাহ্() বলেন, “ আপনার পূবে আমি যে রসূল প্রেরন করেছি, তাকে এ আদেশ দিয়ে প্রেরন করেছি যে, আমি ব্যাতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। সুতরাং আমারই এবাদত কর (২১ঃ ৩৫)।” কিন্তু কিভাবে আল্লাহ্() এই কথা বা বার্তা বিকৃত হয়ে এত গুল ধর্মের উৎপত্তি হল তা আমাদের এই আলোচনার বাহিরের বিষয় হওয়ায় তা আমরা এখানে বিস্তারিত আলোচনা করবো না। সুতরাং আমরা বলতে পারি আল্লাহ্() কখনই এতোগুল ধর্ম পাঠাননি বরং একমাত্র ধর্ম ইসলামকেই যুগে যুগে পাঠিয়েছন সেই সময়ের উপযোগী করে। সঙ্গত কারনে আমি এখানে আখেরাত (Meta physical world) সম্পকিত তথ্যের ক্ষেত্রে শুধু মাত্র কুরআনের দেওয়া তথ্যকে নিভুল বলে গ্রহণ করবো। কেননা অন্য ধর্ম কতৃক দেও আখেরাত(Meta physical world) সম্পকিত বিভিন্ন ভুল তথ্য ব্যাবহার করলে, আখেরাতকে জানা ও বুঝার ক্ষেত্রে বিরাট ভুল বুঝাবুঝির সম্ভবনা রয়েছে।
অভিযোগঃ প্রত্যাদেশ অসম্ভব কল্পিত ব্যাপার।-------- প্রত্যাদেশগুলতে অন্তত কোন প্রমান থাকে না, যা পরেই বুঝা যায় এগুলো বিধাতার বানী। এগুলোতে থাকে বহু ভুল ও স্ববিরোধীতা; এগুলোতে থাকে কিছু সরল নীতিকথা, আর নিদেশ, যার জন্য বিধাতার দরকার পরে না।(আমার অবিশ্বাস, হুমায়ুন আজাদ,পৃষ্ঠা ৯৭)
পূবে আমরা বলেছিলাম যে Damascus University এর মোহাম্মদ আয়াজ –উল- খাতিবের মতামত অনুসারের কুরআনের ৬৬৬৬ আয়তের মধ্যে ৭৫০ অয়াত হল বৈজ্ঞানিক তথ্য সম্বন্ধীয়, যা কুরআনের মোট অয়াতের আট ভাগের এক ভাগ। আমরা প্রমান করে দেখিয়ে ছিলাম যে কুরআনের দেওয়া বৈজ্ঞানিক তথ্যগুল, যা কুরআনের মোট অয়াতের আট ভাগের এক ভাগ, বিস্ময়কর ভাবে সঠিক। সুতরাং কুরআনকে আমরা যে মাপকাঠিতে বিচার করি না কেন, দেখবো যে কুরআনের প্রতিটি তথ্যই সঠিক, নিভুল এবং সত্য। কুরআন শুধু বিজ্ঞান নয়, প্রতিটি বিষয় বননার ক্ষেত্রে যে মূলনীতি গ্রহণ করেছে তা হল, সঠিক ধারাক্রম অনুসারে মূল বিষয়টি অতি সংক্ষিপ্তাকারে বলে দেওয়া। এভাবে আধুনিক বিজ্ঞানের সহায়তা ছাড়া নিভুল ভাবে তথ্য প্রদান থেকে আমরা পরিস্কার ভাবে বুঝতে পারি কুরআন আল্লাহ্() কতৃক প্রারিত প্রত্যাদেশ ভিন্ন অন্ন কিছু হওয়া ভাবা, অসম্ভব এবং অযৈক্তিক।
অভিযোগঃ পরলোক(Meta Physical world) হাস্যকর কল্পনা। মানুষ মরতে ভয়পায় বলেই উদ্ভাবন পরলোক(Meta Physical world) স্বগ-নরক(Heaven & hell belong to Meta Physical world)। পরলোক(Meta Physical world) হচ্ছে জীবনের বিরুদ্ধে এক অশ্লীল কুৎসা; পরলোকের(Meta Physical world) কথা বলা হচ্ছে জীবনকে অপমান করা। পরলোকে বিশ্বাস(Meta-Physical world) জীবনকে করে তোলে নিরথক।(আমার অবিশ্বাস, হুমায়ুন আজাদ,পৃষ্ঠা ৯৮)
এটা যে শুধু ড হুমায়ুন আজাদের অভিযোগ তা নয় বরং আখেরাত(Meta-Physical world) এ অবিশ্বাসী প্রায় সকলেরই অভিযোগ এটি। এই অভিযোগের একটি অন্যতম মূল কারন হল আখেরাত(Meta-Physical world) হল, এমনি এক জগত যে সম্পকে আমাদের কোন জ্ঞান নেই এবং আজকে এসে আমরা বুঝতে পারছি যে আমাদের অজিত জ্ঞান আখেরাতকে(Meta-Physical world) জানা ও বুঝার ক্ষেত্রে অচল; তার অন্যতম একটি প্রধান কারন হল আমরা আমাদের দুনিয়াকে(Physical world) জানা ও বুঝার জন্য যে নিয়ম-নীতি(Physical Law ) ব্যাহার করি তা আখেরাতের ক্ষেত্রে কোন কাজ করে না বা অচল। আখেরাতকে(Meta-Physical world) বুঝার জন্য নবী করিম() একটি গুরুত্বপুন হাদিস হল, “সে জগত(Meta-Physical world) হইবে এরকম, যা কোন চোখ কখনোও দেখেনি, কোন কান কখনোও শুনেনি, কোন হৃদয়ে কখনোও আসেনি।” (মুসলিম শরিফ)। এই হাদিস থেকে আমরা যে গুরুত্বপুন বাতা(Messege) পাই তা হল, এই দুনিয়াতে অবস্থান করে আমাদের পক্ষে আখেরাতকে(Meta-Physical world) জানা বা বুঝা অসম্ভব। আর এ জন্যই আখেরাতের উপর ঈমান আনা ঈমানের একটি গুরুত্বপুন অংশ।
চলবে --
বিষয়: বিবিধ
১৩০০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন