দুনিয়া(Physical World) এবং আখেরাত(Meta Physical World) পর্ব-৫

লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৭:৫৮:২৭ সকাল



অভিযোগ -2

বিশ্ব বা মহাজগত(Physical World) কখন সৃষ্টি হয়েছিল? ইহুদি খ্রীস্টান ও ইসলাম ধর্মে বিশ্বসৃষ্টির যে বিবরণ পাওয়া যায়, তাতে বোঝা যায় তদের বিশ্বাসে মহাজগত (Physical World)সৃষ্টি হয়েছিলো অতীতের এক নিদৃস্ট সময়ে; আর সে অতীত বেশি অতীত নয়। তাদের ভাবনায় ওই সময়টা অবশ্য অত্যন্ত দীঘ, কেননা হাজার বছর তাদের চিন্তায় ছিলো মহাকালের মত।(আমার অবিশ্বাস, হুমায়ুন আজাত,পৃষ্ঠা ৭২-৭৩)

এখানে মহাবিশ্ব সৃষ্টি সম্পকিত ইহুদি ও খ্রীস্টান ধর্ম কতৃক দেও তথ্যর সাথে ইসলাম কতৃক দেও তথ্যকে একত্রে করে বলতে চেয়েছে মহাবিশ্ব())সৃষ্টি সংক্রান্ত তথ্যগুল ভুল। এখানে একটি মজার ব্যাপার হল “আমার অবিশ্বাস” বই এর লেখক ড হুমায়ুন আজাত তার পুরা বইটিতে ইসলাম ধর্মের বিপক্ষে যে অভিযোগ এনেছেন তা মূলত তার চিন্তা প্রসূত নয় বরং খ্রীস্টান ধর্ম বিরুদ্ধে আনিত বিভিন্ন অভিযোগ গুলর কপি-পেস্ট করেছে মাত্র, এক্ষত্রে ড. আজাদের ক্রেডিট হল, সে অতিরিক্ত শব্দ হিসাবে, খ্রীস্টান ধর্মের সাথে ইসলামও ইহুদি শব্দ দুটি যোগ করেছে মাত্র। এখানে উল্লেখ্য যে, খ্রীস্টান ধর্মগুরুরা বাইবেলে(ইঞীল শরিফ)-এ বিশ্ব সৃষ্টি সংক্রান্ত আল্লাহ্‌র দেওয়া তথ্য (আয়াত) এর অর্থ বুঝতে না পরে বা অন্য কোন অজানা কারনে, বিকৃত সাধন করে ফেলে, ফলে পরবর্তীতে বিজ্ঞান বিকাশের ক্ষত্রে তা সহায়ক না হয়ে বিরাট প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়ায়, যার প্রমান রয়েছে ইতিহাসের পাতায় পাতায় ভুরি ভুরি; এমন কি তারা ঐ ভুল তথ্যের উপর ভিত্তি করে, ভুল ভাবে গণনা করে বলে, বাইবেলের বর্ণনা অনুসারে আমাদের এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে মাত্র পাচ হাজার বছর আগে!!! এ জন্য লেখক ড. আজাত এখানে বলেছেন, “তাদের ভাবনায় ওই সময়টা অবশ্য অত্যন্ত দীঘ, কেননা হাজার বছর তাদের চিন্তায় ছিলো মহাকালের মত।”

আথচ আমরা যদি এ বিষয়ে ইসলাম কতৃক দেও তথ্য গুল দেখি তবে দেখবো যে, ইসলাম বলে “সময়”কে আল্লাহ্‌ সৃষ্টি করেছেন; আজকের বিজ্ঞানও একথা সমথন করে বলছে যে, এই মহাবিশ্ব() সৃষ্টির সাথে সাথে “সময়”ও সৃষ্টি হয়েছে। ইসলাম বলে আখেরাতে(Meta Physical World) “সময়” বলতে কিছু নেই। এমন কি ইসলাম বলে সর্ব প্রথম মানব আদম(আঃ) বেঁচে ছিলেন ৪০ কম এক হাজার বছর। সুতরাং স্পস্টতই বুঝা যাছছে যে, কোন ভাবেই একজন মুসলমানের কাছে হাজার বছর মহাকালের মত ছিল না, সেটা আজকে হোক আর ১৪০০ বছর আগে হোক। এ ক্ষত্রে ড আজাত এখানে মহাবিশ্ব সৃষ্টি সম্পকিত ইহুদি ও খ্রীস্টান ধর্ম কতৃক দেও বিকৃত বা ভুল তথ্যের সমালচনাকে অন্ধভাবে কপি-পেস্ট করতে যেয়ে, এর সাথে ভুল ভাবে ইসলামকে অন্তভুক্ত করে সমস্যর সৃষ্ট করে। অথচ ড আজাত যদি ইসলাম নিয়ে একটু কষ্ট করে জানতে চেষ্টা করত তবে অন্যন্য সকল ধর্ম এবং ইসলাম এর মধ্যকার পাথক্য ইস্পস্ট বুঝতে পারতো। এ আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারছি যে, দুনিয়ার নিয়ম (Physical Law) সম্পকিত তথ্য গুল, আল্লাহ্‌() শুধু আল-কুরআনে নাজিল করেননি বরং অন্যান্য আসমানী কিতাবেও তা নাজিল করেছেন। এখন যদি আমরা এই বিষয়টি নিয়ে একটু গভীর ভাবে চিন্তা করি তবে দেখবো যে এতে রয়েছে অনেক অনেক হিকমা ও উপদেশ। প্রথমত অগের জমানার লোকদের পক্ষে তখন দুনিয়ার নিয়ম (Physical Law) সম্পকিত তথ্য গুল সঠিক ভাবে জানা বা বুঝা সম্ভব ছিল না,যার কারন আমরা পূবে উল্লেখ করেছি। তার পরও আল্লাহ্‌() সকল জমানার লোকদেরকে কাছে ঐ তথ্য গুল প্রকাশ করেছন কিন্তু কেন? কেন? এর উত্তরে অনেক গুল কারন উল্লেখ করা যায়, তবে সম্ভবত এর একটি অন্যতম প্রধান কারন হল, আধুনিক বিজ্ঞানের মানদন্ডে আমাদের পৃথবীতে বিদ্যমান সকল ধর্ম সমূহের মধ্যে, কোন ধর্ম অবিকৃত অবস্থা, আল্লাহ্‌() বা ঈশ্বর বা GOD এর বানী (আয়াত) ধারন করছে, তা নিধারনে/বুঝতে আমাদের প্রচন্ড ভাবে সহায়তা করা। অথাৎ কোন ধর্ম আবিকৃত অবস্থায় আছে(convey the updated & right message of Allah) এবং কোন ধর্ম বিকৃত অবস্থায় আছে(convey the abrogated or wrong message of Allah) । দ্বিতীয়ত আজকে এসে আমরা দেখছি যে, আধুনিক বিজ্ঞানের মানদন্ডে একমাত্র কুরআনের দেওয়া তথ্য(আয়াত) গুল আশ্চযজনক ভাবে সঠিক। আর কুরআনের এই সঠিকতা প্রমান করে যে কুরআন বা ইসলাম হল বতমান সময়ে আল্লাহ্‌() মনোনীত ধর্ম বা দীন যা সঠিক ভাবে আল্লাহ্‌র বানীকে ধারন করছে(convey the updated & right message of Allah) । তৃতীয়ত আধুনিক বিজ্ঞানের মানদন্ডে একমাত্র ইসলাম ছাড়া অন্যন্য সকল ধর্ম সমূহ উত্তিন হতে সম্পুন ভাবে ব্যথ আর এই ব্যাথতা প্রমান করে যে, বতমান সময়ে এসে, একমাত্র ইসলাম ছাড়া অন্যন্য সকল ধর্ম সমূহ বিকৃত অবস্থায় আল্লাহ্‌() বা ঈশ্বর বা GOD এর বানী (আয়াত) ধারন করছে অথাৎ এই ধর্ম সমূহ পূবে আল্লাহ্‌ কতৃক মনোনীত ধর্ম (Prescribe by Allah) হলেও হতে পারে কিন্তু কোন ভাবেই বতমান সময়ের জন্য নয়। কেননা আজকে এসে বিজ্ঞানের মানদন্ডে, আমরা দেখছি যে, একমাত্র ইসলাম ছাড়া অন্যন্য সকল ধর্ম সমূহ আল্লাহ্‌() বা ঈশ্বর বা GOD এর বানী (আয়াত) ভুলভাবে ধারন করছে(convey the abrogated or wrong message of Allah)।

চলবে------

বিষয়: বিবিধ

১৭৪৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File