আক্কেল আলী ও খেজুর আলী(রম্য রচনা)- বিষয় ডা জাকির নায়েক –পব ২
লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ২৫ আগস্ট, ২০১৩, ০৭:৫৭:৪৪ সন্ধ্যা
আক্কেল আলীর মা বসে বসে গভীর মনযগের সাথে TV দেখছে। হঠাৎ ইউরেকা ইউরেকা বলে চিৎকার দিয়ে উঠে। তার চিৎকার শুনে আক্কেলের বাবা বলল, এরহম গাধার লাহান চিল্লায়তছ কেল্লা। জবাবে আক্কেল আলীর মা বলল, আহেন আহেন দেক্ষা যান TV তে এই সব কী দেখাইবার লাগছে। TV তে আক্কেলের বাবা দেখতে পেল, আমেরিকার বিখ্যাত দুই ব্যাক্তির বউ বিকিনি পরে রাস্তা দিয়ে হাটছে। তখন আক্কিলের বাপে বলল, দিখলাম তারা বিকিনি পইরা রাস্তা দিয়ে হাটছে, এটা আবার নতুন কী? আক্কেল আলীর মা বলল, হেরা পরলে কোন দোষ নাই আমি পরলেই যত দোষ। আক্কেলের বাবা নিজের ভুল বুঝতে পেরে চুপ করে থাকে কিন্তু আক্কেল আলীর মার বকবকানি চলতে-ই থাকে। --- - দেশটা মৈলবাদী, জংলী – দ্বারা ভইরা গেছে। হেরা নিজেগোর কাম-কাইজ ফালাইইয়া কেমনে মহিলাদের ঘরে বন্দী করা যায় হেই ফন্দীতে ব্যাস্ত।এই মোঃল্লারাই দেশটারে ১৫০০ বৎসর ------ এ সময় কলিংবেলের শব্দ তার কথার ব্যাঘাত ঘটায়, বিরক্ত মনে উঠে গিয়ে দরজা খুলে খেজুর আলিকে দেখতে পেয়ে বলে উঠে, আরে খজুর যে, কেমন আছ বাবা? সব ভাল্লা? আমগোর আক্কেল যে অহন গবেষণা নিয়া খুবই ব্যস্ত যাও যাও গিয়া দেহ সে তোমার সাথে দেখা করে কি না! খেজুর আলী কিছুটা ভরকে গিয়ে বলল, খালাম্মা বিষয়টা একটু খোলসা কইরা কন? তখন সে বলল, ইদানিং আক্কল আলী ইসলাম এবং বিজ্ঞানকে জানা ও বুঝার জন্য রিতিমত গবেষণা শুরু করে দিয়েছে। একথা শুনে খজুর আলী বলল, ও এই কথা, তা আগে কইবেন না। আমিতো ভাবছিলাম না জানি কি? খালাম্মা আপনি কোন চিন্তা করবেন না, কেননা আমি আমার হুযুরের থিকা ইসলামের কোনা ধইরা ফালাইছি। আসা করি আক্কেল আলীরে সাহায়্য করবাম পারমু।
খেজুর আলী আক্কেল আলীর ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পায় আক্কেল আলী এক পেয়ালা ভতি কুল বড়ই নিয়ে বসে বসে খাছছে আর একটা বই নিয়ে গভীর মনোযোগের সাথে কি যেন দেখছে। সালাম-কালাম এর পর খেজুর আলী বলল, আক্কেল কি অত মনোযোগের সাথে পড়ছ, আক্কেল আলী বই থেকে মাথা না সরিয়ে বলে, কুরআন পরতাছি, খেজুর আলী কাছে গিয়ে দেখে সত্যই কুরান পরতাছে তবে উলটো করে ধরে।তখন খেজুর আলী হাসতে হাসতে বলল আক্কেল তুমিতো কুরানকে উলটা করে ধরছ। আক্কেল আলী বলল, তুমি জানলা কেমবায়, উত্তরে খেজুর আলী বলল, সে তার হুজুর থেকে জেনেছে। তখন আক্কেল আলী বলল, আরে মিয়া আমিতো তোমারে টেস্ট করবার জন্য এ কাজ করেছি বুঝবার পারনাই। খেজুর আলী বলল আক্কেল ভাই বুঝবাম কেমতে, আপনেতোঁ আগে বলেন নাই। তখন আক্কেল আলী কুরআনকে সঠিকভাবে ধরে বলল, এই ভাবে কুরআন ধরতে হয়, কি ঠক কই নাই। খেজুর বলল, এক্কেবারে ঠিক। আক্কেল ভাই আফনেতো আমারে টেস্ট করলেন, আমিও একখান আফনেরে টেস্ট করবাম চাই। মনে মনে ভরকে গেলেও মুখে বলল, এইডা কোন বিষয় হইল কইরা হালাও। আক্কেল আফনেতো এক্কেলে কুরআন এর ভাষা ভাজা ভাজা কইরা খাইছেন। তখন আক্কেল খুশী হয়ে বলল, আরে খজুর ভাষা শিক্ষা আমার জন্য ১/২ মত ব্যাপার। তখন খেজুর আলী বলল, আজকে হুজুর থেকে “কুন ফা ইয়া কুন” আয়াতের আথ শিইখা আইছি। আফনে এর বাংলা অথ কন? প্রশ্ন শুনে আক্কেল আলীর ভরকে যায়, তার হাত থেকে কুল মাটিতে পরে যায়। তারপর একটু চিন্তা করে বলল, “কুন ফা ইয়া কুন” এর বাংলা অথ হল, কুল ফালাইছে কুনডায়। তখন খেজুর আলী বলল, হয় নাই, এইডার অথ হল, “ হয়ে যাও ---”। জবাবে আক্কেল আলী বলল, আরে মিয়া আমিতো এহনও এইডার অথ বলি নাই। তুমি কি আন্ধানি মিয়া, দেহ না মাটিতে একটা কুল পইরা আছে, আমিতো হেইডার কথা কইছি, এ কুলডা মাটিতে হালাইলো কোন হালায়? খেজুর বলল আক্কেল ভুল হইইয়া গেছে, তোমার কথা বুইঝা উটত্তে পারিনাই। মাফ কইরা দাও। আক্কেল আলী বলল, যাও মাফ কইরা দিলাম। তবে ভবিৎসতে এই কিছিমের ভুল আর কইর না। খেজুর বলল আফনে যে কি কন ভবিৎসতে এই কিছিমের ভুল আর করতাম! তখন আক্কেল আলী বলল, “কুন ফা ইয়া কুন” এর বাংলা অথ হল “ হয়ে যাও ---” । কি ঠক কই নাই। খেজুর বলল, এক্কেবারে ঠিক।
খেজুর বলল আক্কেল আফনে যে কিছিমের ইসলামের উপর জ্ঞান অজন করছেন, তাতে বাংলাদেশর সব ইসলামী চীন্তাবিদ ফেল। এহন আপনে একডা কাজ করেন, আফনে ইসলাম এবং বিজ্ঞান এই বিষয়ডার উপর গবেষণা শুরু করেন, এইডা জানলে দেখবেন সব ইসলামী চীন্তাবিদ আফনের ভয়ে পালাইবো। তখন দেখবেন আফেনের ইজ্জত দেশে মুরগি শাহারিয়ার মত খালি বারতেই থাকবো ,বারতেই থাকবো! কউ কি মিয়া কিন্তু ইসলাম এবং বিজ্ঞান এই দুই কিছিমের জ্ঞানের বই একত্রে কই পাইবাম। খেজুর বলল, আফনে কোন চিন্তা করবেন না, আমি আফনেরে সব খোলসা কইরা কইতাছি। আফনি ড জাকির নায়েকের নাম হুনছেন। জবাবে আক্কেল আলী হাঁ বললে, খেজুর উৎসাহিত হয়ে বলতে থাকে, এই ড জাকির নায়েক হইল এই বিষয়ডার উস্তাদ, এই জন্য সরা দুনিয়ার সব ইসলামী চীন্তাবিদ এক নামে তারে চিনে। তখন আক্কেল আলী বলল, হাচা (সত্য) কইবার লাগছতো, খেজুর বলল, আফনে যে কি কন, আফনে এই খেজুররে চিনেন না, এই খজুর কোন দিন হাচা(সত্য) কথা কইছে যে আজকে আফনেরে মিছা (মিথ্যা) কথা কইবো। আক্কেল দেখল যে খেজুর রেগে যাচ্ছে, তাই খজুরকে সান্তনা দিয়ে বলল, খেজুর গোছছা(রাগ) কইর না। মুখ ফসকে বার হইয়া গেছে, দিলে কিছু নিও না। অহন তুমি আমারে পথ বাতলাও কেমবায় এই দুই কিছিমের জ্ঞান হাসিল করবাম পারি।খেজুর বলল এই জন্যেই তো আজকে আমি আফনের বাসায় আইছি, আমার হুজুর আমারে ড জাকির নায়েকের অনেকগুল সিডি দিয়া কইল যাও মিয়া সিডি দেইখা এই দুই কিছিমের জ্ঞান হাসিল কর গিয়া। বাংলা বা ইতিহাস এর মত কঠিন বিষয় হইলে আমি তোমারে ব্যাখা কইরা বুঝাইয়া দিতাম কিন্ত বিজ্ঞান অতি সহজ বিষয়, যাও নিজে নিজে এই সিডি দিওখা বুইঝা লও। আক্কেল আলী খুশীতে বাগবাগ হয়ে বলল, মিয়া আগে কইবা না এই দুই কিছিমের জ্ঞান যে এত সহজে হাছিল করা যায়। খেজুর তার ব্যাগ থেকে হুযুরের দেওয়া সিডি গুল বের করতে করতে বলল আফনে যে কি কন, আমি যানবাম কেমবায় যে সিডীর ভিতরে এই দুই কিছিমের জ্ঞান আছে, যনি না আমারে আমার হুজুর কইত। তখন আক্কেল বলল মিয়া তোমার হুজুর জানল কেমবাই যে আজকে আমরা এই দুই কিছিমের জ্ঞান নিয়া আলোচনা করব। খজুর বলল এ সবই আমার হুজুরের কেরামত। দেখলেন তো আজকে তার প্রমান পাইলাম হাতে নাতে। আমার হুজুর এই কিছিমের আরো আনেক কেরামত জানে, যেমন ধরেন সে আফনের চক্ষের সামন দিয়া যাইবো কিন্তু আফনে তারে দেখবেন না। আক্কেল বলল কি কইবার লাগছ আবল-তাবল, তুমি কি মিয়া তার প্রমান পাইছ না শুনছ শুধু। খেজুর বলল, না আজকের মত হাতে নাতে প্রমান এখনও পায় নাই তবে তয় তয় আছি । ইতিমধ্যে সিডি চলা শুরু হয়ে গেছে, সুতরাং দুজনায়ই কথা বন্ধ করেগভীর মনোযোগের সাথে ডা জাকিরের বক্তব্য শুনতে শুরু করল।
চলবে----
বিষয়: বিবিধ
১২৯০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন