আল্লাহর অস্তিতে বিশ্বাস এবং আমাদের অর্জিত জ্ঞান/ যুক্তি – পর্ব ২
লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ০৬ জুলাই, ২০১৩, ১১:২৯:৪৫ সকাল
এই পর্বে কোন Scientific যুক্তি না দিয়ে বরং একটি সত্য কাহিনী বর্ণনা করবো। কারন বহুবিধ।
এই কাহিনী খলীফা হারন-অর-রশিদ এর সময়কার। সে সময় এক জ্ঞানবোদ্ধা রমক ( ইটালি) থেকে এসে খলীফা হারন-অর-রশিদের দরবারে এসে হাজির হয়ে, দরবারের উদ্দেশে তিনটি প্রশ্ন রাখে। প্রশ্ন তিনটি ছিল ঃ—(১) আল্লাহকে (আউজুব্বিল্ল--) কে সৃষ্টি করেছ?
(২) আল্লাহ কোন দিকে মুখ করে আছেন? (৩) আল্লাহ এখন কি করছেন?
এপ্রসঙ্গে আমাদের জানা দরকার যে তৎকালে খলীফাদের দরবারে জ্ঞানী –গুণীদের অনেক কদর ছিল। কিন্তু প্রশ্ন তিনটি ছিল অতান্ত জটিল বিধায় দরবারে হাজির সকলেই উতর দিতে অপারগতা প্রকাশ করে বেতিক্রম শুধু এক জন। এই বেক্তি ছিল বয়সে নবীন এবং তার জ্ঞান-গরিমার জন্য সকলের কাছে পরিচিত। অতঃপর ঐ নবীন বেক্তি প্রশ্নের জবাব দেয়ার আগে কতিপয় শর্ত আরোপ করে। এখানে উল্লেখ্য যে তৎকালে খলীফাদের দরবারের প্রথা অনুসারে ধর্ম- বর্ণ নির্বিশেষ সকল জ্ঞানবোদ্ধাদের অনেক সস্মান দেওয়া হত এবং তারা দরবারে উচ্চ আসনে বসতেন। ঐ নবীন বেক্তির শর্তগুলর মধ্যে অন্যতম একটি শর্ত ছিল, আসন পরিবর্তন, অর্থাৎ ঐ নবীন বাক্তি বসবে উচ্চ আসনে, যা প্রকিতপক্ষে ঐ রমক জ্ঞানবোদ্ধা জন্য নিধারিত, আর ঐ জ্ঞানবোদ্ধা বসবে অপেক্ষাকিত নিচু আসনে, যা প্রকিতপক্ষে ঐ নবীন বাক্তির জন্য নিধারিত। ঐ রমক জ্ঞানবোদ্ধা তাতে সস্মতি জানালে আসনের পরিবর্ত ঘটে। প্রথম প্রশ্নের উত্তরের জন্য উচ্চ আসনে বসা ঐ নবীন বাক্তি নিচু আসনে বসা রমক জ্ঞানবোদ্ধাকে জিজ্ঞাসা করে, আপনি কি উল্টো করে গণনা করতে পারেন (অর্থাৎ ৯, ৮,৭------)। উত্তরে ঐ রমক জ্ঞানবোদ্ধা বলে এটা অতি সহজ কাজ। তখনঐ নবীন বাক্তি ঐ রমক জ্ঞানবোদ্ধাকে সংখ্যা দশ (১০) থেকে উল্টো করে গণনা শুরু করতে বলে। কিন্তু শর্ত হিসাবে এ কথা বলে দেয় যে,সে (নবীন বাক্তি) থামতে না বলার আগে সে (রমক জ্ঞানবোদ্ধা) যেন গণনা না থামায়। তার ঐ শর্তেও রমক জ্ঞানবোদ্ধা সস্মতি দেয়। সুতরাং যথারিতি গণনা শুরু হয়। ১০, ৯, ৮,--------১ অতঃপর জ্ঞানবোদ্ধা থেমে যায়। তখন ঐ নবীন বাক্তি ঐ জ্ঞানবোদ্ধাকে উদ্দেশ্য করে বলল, “ কেন তুমি আমাদের দুজনের মধ্যকার শর্ত ভঙ্গ করে গণনা বন্ধ করলে কারন আমিতো তোমাকে এখনও গণনা বন্ধ করতে বলি নাই?” উত্তরে হতবাক জ্ঞানবোদ্ধা বলিল, “ হে যুবক তুমিত দেখছি, গণিতের “ক” ও বুঝ না। তাই এমন অবুঝের মত কথা বলছ। তুমি কি জান না যা দুনিয়ার সবাই জানে এবং এটা গাণিতিকভাবে প্রমানিত সত্য যে সংখ্যা এক(১) এর পর আর কোন সংখ্যা নেই, অর্থাৎ সংখ্যা এক (১) দিয়েই শুরু এবং এক দিয়েই শেষ, আর এটাই হল গাণিতিকভাবে প্রমানিত সত্য; যা পাগল এবং নিরেট বোকা ছাড়া দুনিয়ার বাকি সকলেই মেনে নিয়েছে। সুতরাং কনভাবেই তুমি আমাকে শর্ত ভঙ্গ করার অভিযোগে অভিযুক্ত করতে পারো না।” তখন ঐ যুবক বলল, “ যদি তুমি সংখ্যা এক (১) দিয়েই শুরু এবং এক দিয়েই শেষ, গাণিতিকভাবে প্রমানিত এই সত্যকে মেনে নাও তবে এটা মেনে নিতে কি বিষয় তোমাকে বারন করছে, যে আল্লাহই শুরু(হুয়াল আওয়াল্লু) এবং আল্লাহই শেষ(হুয়াল আখেরু) । অবশ্য যদি না তুমি পাগল অথবা নিরেট বোকা হও তবে ভিন্ন কথা।” নিজের যুক্তির ফাঁদে নিজেই ধরা পরে ঐ জ্ঞানবোদ্ধা অবশেষ সন্তুষ্ট চত্তে ঐ যুবকের উত্তরকে মেনে নেয়।
সুতরাং গাণিতিকভাবে অতি সহজেই আমরা এ সিদ্ধাতে আসতে পারি যে আল্লাহকে() কে সৃষ্টি করেছে এ প্রশ্ন অবান্তর বা তা কোন অর্থ বহন করে না, যেমন গাণিতিকভাবে প্রমানিত সত্য হল সংখ্যা এক (১) দিয়েই শুরু এবং এক দিয়েই শেষ।
কুরআন এবং সুন্নাহর পরিভসায় আল্লহ()এক নাম হল “হুয়াল আওয়াল্লু” – তিনিই শুরু এবং আল্লহ()অপর এক নাম হল “হুয়াল আখেরু” - তিনিই শেষ।
কুরআনের ১১২ নং সূরার ১নং আয়তের মধ্যামে গাণিতিকভাবে প্রমানিত এই সত্যর দিকে আমাদের দৃষ্ট আকর্ষণ করে, আল্লাহ() বলেন, “ “বলুন, আল্লাহ() এক(১)” । (১১২:১)
বিষয়: বিবিধ
১৬০৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন