‘’দেশী বন্ধুর সাথে বিদেশী বন্ধুর ফোনালাপ ‘’
লিখেছেন লিখেছেন মোবারক ২৯ এপ্রিল, ২০১৪, ১০:২৫:৫৪ রাত
আমার এক ফেসবুক বন্ধুর সাথে কয়েক দিন আগে প্রায় ৩০মিনিট কথা হয়েছে।ফেসবুক বন্ধু কিন্তু বয়স আমার চেয়ে একটু বেশী থাকে রাজধানীতে।ভেবে ছিলাম অভিজ্ঞতা আমার বেশী কারণ আমি বিদেশে থাকি। কিছু দিন চ্যাট তার পর ফোন এ আলাপ,কিছু অংশ আপনাদের সাতে শেয়ার করবো।আলাপ এর একটা পর্যায় সে বলে আপনে কি কাজ করেন, কত বেতন পান মোবাইলে এর কাজ করি বেতন এতো। সে উত্তর দিল আপনে আমার চেয়ে কিছু টা বেশী তবে আলহামদুলিল্লাহ বিদেশীদের চেয়ে ভাল আমি।আমি প্রশ্ন করলাম ক্যামনে আপনে ভাল আছেন।উত্তর অনেক লম্বা, আমার এইচ এস সি ফাষ্ট ইয়ার শেষ , গ্রামের আশে লোকদের বিদেশে যাওয়া আশা দেখে আমার ও বিদেশ যাওয়ার ইচ্ছা হল।
আমার বাবা ও বিদেশে ছিল আমি ছোট থাকতে বাবাকে বললাম আমি বিদেশ যাব পড়া শোনা শেষ কর পরে দেখা যাবে।আমি মাকে চাপ দিতে থাকি আমি বিদেশ যাব। বাবা আমাকে অনেক বুঝিয়েছে কোন কাজ হয় নাই, এইচ এস সি শেষ করলাম, আড্ডা বেড়ে গেল, রাত করে বাড়ীতে আসা, কিছু দিন পর আমাদের ঘর এর কাজ শুরু হল।সকাল বেলা আব্বা আমাকে ডেকে বললো তুমি যদি এদের সাথে দশ দিন কাজ করতে পারো তোমাকে বিদেশ পাঠাবো।আমাকে মেস্তরির হেল্পার হিসেবে কাজ করতে বলে, দুই দিন এ আমার অবস্থা কাহিল।তিন দিনের মাথায় আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি।দুই দিন পর ভাল হয়ে আবার কাজ শুরু করি।আমি বাবার কাছে হেরে যাই। বাবা আমাকে ডেকে বললো বিদেশে আমি ছিলাম আমি জানি বিদেশ কেমন যে বেতন পাবে ইকামা কফিল নিজের খরচ এর পর যা থাকবে তিন চার মাসের ছুটিতে গেলে তাও শেষ। দেশে কিছু একটা করো।বাবার কথা মাথায় রেখে ঢাকা চলে গেলাম. ইউনিভার্সিটিতে এডমিশন নিয়েছি পাঁচ ছয় মাস বাড়ীতে থেকে খরচ নিয়ে চলেছি। এর পর কর্ম জীবনে পা দিলাম পাঁচ থেকে শুরু এখন ১৭/১৮ হাজার টাকা বেতন পাই। বাবা মা খুশি। কারণ তাদের কথা মত চলেছি। আমি এখন রাজধানীতে থাকি বিয়েও করেছি নিজের পছন্দে মা বাবা ভাই বোন সবাই খুশি। ছোট ভাইকে আমার বাসায় রেখে একটা স্কুল এ ভর্তি করে দিয়েছি। অন্য দুই ভাই আমার চেয়ে ভাল অবস্থায় আছে। তারা কে কত ইনকাম করে কোন দিন নজর দিনাই।
আমার বাবার কথার প্রমাণ আমার কিছু প্রবাসী বন্ধুদের মাঝে দেখতে পেয়েছি। ছুটিতে এসেছে চার বছর পর প্রথম এক মাস চার চক্কা। বাসার সবাই মনে করেছে অনেক টাকা নিয়ে এসেছে। বন্ধুটি এসেছে কিছু পকেট খরচ নিয়ে। ভাই বোন দের আবধার রাখতে গিয়ে ছোট না হওয়ার ভয়ে ঋণ করে বন্ধুটি প্রবাসে পাড়ি দিয়েছে। আমার গবেষণায় পাঁচ জনের মধ্যা তিন জনের এই অবস্থা। তবে আমি প্রবাসীদেরদোষ দিনা।আমরা যারা দেশে থাকি আমাদের এমন একটা ধারণা বিদেশিদের কাজে অনেক টাকা। কিন্তু এইটা চিন্তা করি না আমরা ......
বন্ধুটির কথা শুনতে শুনতে ঘড়িতে কাটা এগারোটা অতিক্রম করছে আমি বুঝতে পারিনি, নিচ থেকে সুইচ অফ করে দিয়েছে।আমার কম্পিউটার অফ হয়ে গেল। বন্ধুটির কথাও শেষ হয় নাই, বিদায় ও নিতে পারি নাই। যদিও আমি ওনাকে ঠিক মত চিনিনাতবে আমার ফ্রেন্ড লিস্ট থাকার কারণে আমি ওনাকে নিয়ে গর্ব করি, নেক্সট টাইম কথা হলে আবার আপনাদের সাতে নূতন লেখা নিয়ে হাজির হব।ইনশা আল্লাহ্
আমি ব্লগ ফেসবুক এ প্রকাশ করি মনের কিছু অনুভূতি ।
আশা করি প্রবেশদ্বারে কোনো ভুল হলে ঠিক করে দিবেন।
বিষয়: বিবিধ
১৫১৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন