লাইলাতুল ক্বাদরের খোঁজে..................
লিখেছেন লিখেছেন ফরহাদ হোসেন মিঠু ২৯ জুলাই, ২০১৩, ১০:১০:৪২ রাত
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
রমযান মাসের শেষ দশক এসে পড়ছে।আমাদের এখন লাইলাতুল ক্বাদর খোঁজার প্রস্তুতি নিতে হবে।লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব অনেক।আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
"কদরের রাত হাজার মাসের চাইতেও বেশী ভালো" (সূরা কদর-৩)
রসূলুল্লাহ্ (সঃ) বলেছেন,
"যে ঈমান সহকারে প্রতিদানের আশায় লাইলাতুল ক্বাদরে ইবাদত করবে,তার অতীতের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।" [বুখারী]
আমি লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব ও ফযীলত এই লেখায় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করছি না।লাইলাতুল কদর সন্দান করার সময় এসে গিয়েছে এই ঘোষণা দিতেই আমার এই লেখা।
১) লাইলাতুল ক্বাদরের নির্দিষ্ট তারিখের ব্যাপারে অনেক মতভেদ আছে।আমার কাছে যে মতটি সবচেয়ে বেশি নিরাপদ এবং সহজ মনে হয়েছে তা হল ২০তম রমজানের রাত্র হতে রমজানের শেষ রাত্র পর্যন্ত ইবাদত করা।আমি এখানে তাই আলোচনা করব।
রসূলুল্লাহ্ (সঃ) বলেছেন,
"তোমরা রমযান মুবারকের শেষ দশ দিনের বিজোর রাত্রিগুলিতে লাইলাতুল ক্বাদর তালাশ কর"। (বুখারী)
রমজানের শেষ দশ দিন কবে থেকে শুরু হয় এটা নিয়ে মতভেদ আছে।অধিকাংশ আলেমের মতে মাস ২৯ দিনে হোক কিংবা ৩০ দিনে হোক ২১তম রাত্র হতেই দশ দিন শুরু হয়। তাহলে শবে কদর ২১,২৩,২৫,২৭,২৯ তারিখের রাত্রগুলিতে তালাশ করা উচিত।আরেকটি মত হল যদি চাঁদ ২৯শা হয় তাহলে শেষ দশ দিন বিশতম রাত্রি থেকে শুরু হবে।তখন ২০,২২,২৪,২৬,২৮ তারিখে তালাশ করা উচিত।এই দু'টি মতের মধ্যে অগ্ররাধিকারযোগ্য হল ১ম মতটি।তবে ২য় মত অনুযায়ী অন্যান্য রাত্রতেও লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা আছে।উভয় মতকে আমরা যদি একত্র করি তাহলে ২০তম রাত্রি থেকে ইবাদত শুরু করে শেষ পর্যন্ত ইবাদত করতে হবে।
আপনি যদি ১০ দিন না পারেন তাহলে ৫ দিন ইবাদত করুন।আর তাও যদি না পারেন তাহলে ২৭শে রমজান মাসের রাত্রিতে ইবাদত করা উচিত।২৭শে রমজানে লাইলাতুল ক্বাদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।আর শুধু এক রাত্রে ইবাদত করাই হল ন্যূন্যতম।
ক্বাদরের রাত পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়।যারা আখিরাতের গুরুত্ব বুঝেন তারা এই রাত তালাশ করার জন্য লেগে যাবেন আশা করি।
কদরের রাতের কিছু লক্ষণ আছে।আমি এখানে কিছু উল্লেখ করছি।
মহিমান্বিত রজনীর নিদর্শনসমূহ : ১. কদরের রাত্রি তিমিরাচ্ছন্ন হবে না। ২. নাতিশীতোষ্ণ হবে। ( না গরম না শীত এমন ) ৩. মৃদু বায়ু প্রবাহিত হবে। ৪. উক্ত রাতে মু'মিনগণ কিয়ামুল লাইল বা ইবাদত করে অন্যান্য রাত অপেক্ষা অধিক তৃপ্তি বোধ করবে। ৫. হয়তো বা আল্লাহ তা'আলা কোন ঈমানদার ব্যক্তিকে উহা স্বপ্নে দেখাবেন। (দেখুন : ইবনে খুযায়মা, ইবনে হিব্বান, মুসনাদে আহমদ) ৬. ঐ রাতে বৃষ্টি বর্ষণ হতে পারে। (বুখারী) ৭. সকালে হালকা আলোক রশ্নিসহ সূর্যোদয় হবে, পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায়। (মুসলিম)
২)এ প্রসঙ্গে আমি একটা উদাহরণ দিই--
মনে করুন,আপনাকে একজন বলল যে অমুক মাসের শেষ দশ দিনের যেকোন রাত্রে যেকোন সময়ে আমি তোমাকে অমুক জায়গায় এসে এক কোটি টাকা দিব।কিন্তু যদি তুমি সেখানে না থাক তাহলে তুমি টাকা পাবে না।আপনি এখন কি করবেন?এখানে সবচেয়ে নিরাপদ সিদ্ধান্ত হল যে,আপনি প্রতি রাতে নির্ধারিত জায়গায় যাবেন এবং সারা রাত অবস্থান করবেন।
এখন দুনিয়ার জন্য তো আমরা সহজেই এই কাজ করতে পারি।এখন আখিরাতের কথা ভাবুন।যিনি লাইলাতুল ক্বাদরের বিপুল সওয়াব পাওয়ার আশা রাখেন তার কাছে দশ বা এগারটি রাত জাগা কোন ব্যাপার নয়।
আমি আবারও বলছি যে,লাইলাতুল ক্বাদর সম্পর্কে আরও মত আছে আর আমি কোন মতকে ছোট করে দেখি না।আমি শুধু মুসলিম ভাই এবং বোনদের লাইলাতুল ক্বাদরের খোঁজ করার জন্য উৎসাহিত করছি।আশা করি আপনারা অন্যদের উৎসাহ দিবেন এই ব্যাপারে ।ভাল কাজ করার সুপারিশ করায় ইনশা'আল্লাহ্ আপনি সওয়াব পাবেন।
মহান আল্লাহ্ তা'আলা আমাদের সাহায্য করুন যাতে আমরা রমজানের শেষ দশকের রাত্রিগুলোতে 'ইবাদত করতে পারি এবং লাইলাতুল ক্বাদরের সন্ধান পেতে পারি।আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৫৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন