রমাদান মাসের বিভিন্ন কাজ ও সিয়াম পালনকারীর ফযীলত
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের ডাক ০১ জুলাই, ২০১৪, ০৪:০৭:১৬ বিকাল
রমাদান মাসের বিভিন্ন কাজের ফযীলত
রমাদান মাসে সিয়াম ব্যতীত আরো অনেক কাজ রয়েছে, যেগুলোতে অনেক অনেক ছওয়াব ও ফযীলত পাওয়া যায়। সেরূপ কতিপয় কাজের কথা এখানে আমরা উল্লেখ করছি।
(ক) সিয়াম পালনকারীকে ইফতার করানোর ফযীলতঃ
যায়েদ ইবনু খালিদ আল্ জুহানী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সিয়াম পালনকারীকে ইফতার করাবে, সে তার সমান ছওয়াব পাবে। আর সিয়াম পালনকারীর ছওয়াবে কোন কম করা হবেনা। {তিরমিযী, হা/নং -৮০৭।}
(খ) তারাবীহের ছলাত আদায়ের ফযীলতঃ
আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেনঃ নবী কারীম (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সহিত ছরয়াবের আশায় রমাদান মাসের রাত্রে তারাবীহের ছলাত আদায় করবে, তার পূর্বের সমূহ পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে। (বুখারী)
(গ) তারাবীহের ছলাত আদায়কারী শহীদদের অন্তর্ভূক্তঃ
আ’মর ইবনে মুররাহ (রাঃ) বলেনঃ এক ব্যক্তি নবী কারীম (সাঃ) এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আমি এ সাক্ষ্য দেই যে আল্লাহ ব্যতীত কোন (সত্য) মাবুদ নেই এবং আপনি আল্লাহর রাসূল। আর পাঁচ ওয়াক্ত ছলাত পড়ি, যাকাত দেই এবং রমাদানে সিয়াম পালন করি ও রাত্রিতে তারাবীহ পড়ি, তাহলে আমি কাদের অন্তর্ভূক্ত হব? তিনি বললেনঃ সিদ্দীক ও শহীদগণের অন্তর্ভূক্ত। {সহীহুত্ তারগীব, হাঃ ৩১৬।}
(ঘ) ইমামের সহিত পূর্ণ তারাবীহ পড়ার ফযীলতঃ
আবূ যার (রাঃ) বলেনঃ নবী কারীম (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ইমামের সহিত ইমাম ছলাত শেষ করা পর্যন্ত তারাবীহ পড়বে, তার জন্য পুরা রাত ইবাদত করার মত ছওয়াব হবে। {আহমদ, তিরমিযী।}
(ঙ) সাহরী খাওয়ার ফযীলতঃ
আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা সাহরী খাও, কারণ তাতে অনেক বরকত রয়েছে। {বুখারী।}
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ সাহরী খাওয়া বরকত। সুতরাং তোমরা সাহরী ছেড়ে দিও না। যদিও এক ঢোক পানি দ্বারা হয়, তারপরও সাহরী কর। কারণ যারা সাহরী করে তাদের উপর আল্লাহর রহমত হয় এবং ফেরেশতাগণ তাদের জন্য দুঅ’া করেন। {আহমদ, সহীহুল জামে’ঃ ৩৬৮৩।}
(চ) দ্রুত ইফতারের ফযীলতঃ
সাহাল ইবনু সাআদ (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যতদিন মানুষ দ্রুত ইফতার করবে, ততদিন তারা কল্যাণের মধ্যে থাকবে। {বুখারী, মুসলিম।}
(ছ) লাইলাতুল কদরে ছলাতের ফযীলতঃ
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেনঃ নবী কারীম (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সহিত ছওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদরে ছলাত (নামায) পড়বে, তার পূর্বের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। {বুখারী, মুসলিম।}
(জ) উমরা আদায় করলে হজ্জের সমান ছওয়াবঃ
ইবনে আব্বাস (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এক আনসারী মহিলাকে বললেন, আমাদের সাথে হজ্জ করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? মহিলা বলল, আমাদের পানি বহনকারী, দু’টি উট ছিল। আমার ছেলের বাবা এবং ছেলে এক উট নিয়ে হজ্জে চলে গেছেন, আর অপরটি পানি বহনের উদ্দেশ্যে রেখে গেছেন। রাসূলুল্লাহ বললেনঃ রমাদান মাস আসলে তুমি উমরা আদায় কর, কারণ এমাসের উমরা হজ্জের সমান। {মুসলিম/ঃ ২৯০৪।}
অপর বর্ণনায় আছে, আমার (অর্থাৎ রসূল (সাঃ) এর) সাথে হজ্জ করার সমান ছওয়াব হবে।
সিয়াম পালনকারীর ফযীলত
এতক্ষণ সিয়ামের ফযীলত এবং তার সম্পর্কীয় বিষয়াদির ফযীলতের বর্ণনা হল। এবার আসুন, পালনকারীরর জন্য কি আছে তা একটু দেিেখ।
(ক) সিয়াম পালনকারীর জন্য জান্নাতে বিশেষ দরজাঃ
সাহাল ইবনে সা’আদ (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতের আটটি দরজা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটির নাম হল ‘রায়্যান’। এই দরজা দিয়ে শুধু সিয়াম পালনকারীরাই প্রবেশ করবেন। {সহীহ বুখারীঃ ৩/২৯০, হাঃ ৩০১৬।}
(খ) সিয়াম পালনকারীর জন্য সিদ্দীক ও শহীদের মর্যাদাঃ
আ’মর ইবনে মুররাহ (রাঃ) বলেনঃ এক ব্যক্তি নবী কারীম (সাঃ) এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আমি এ সাক্ষ্য দেই যে আল্লাহ ব্যতীত কোন (সত্য) মাবুদ নেই এবং আপনি আল্লাহর রাসূল। আর পাঁচ ওয়াক্ত ছলাত পড়ি, যাকাত দেই এবং রমাদানে সিয়াম পালন করি ও রাত্রিতে তারাবীহ পড়ি, তাহলে আমি কাদের অন্তর্ভূক্ত হব? তিনি বললেনঃ সিদ্দীক ও শহীদগণের অন্তর্ভূক্ত। {সহীহুত্ তারগীব, হাঃ ৩১৬।}
(গ) সিয়াম পালনকারীর জন্য দুটি খুশীঃ
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেনঃ নবী কারীম (সাঃ) বলেছেনঃ সিয়ামপালনকারীর জন্য খুশীর বিষয় দু’টি। একটি খুশী ইফতারের সময়, আরেকটি খুশী তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাতের সময়। {মুসলিম, হা/ঃ ২৫৭৪।}
(ঘ) সিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ মিশকের চেয়েও উৎকৃষ্টঃ
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেনঃ নবী (সাঃ) বলেছেনঃ সিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিশকের সুগন্ধির চেয়েও অধিক উৎকৃষ্ট। {মুসলিম, হা/ঃ ২৫৭৪।}
বিষয়: বিবিধ
১০০২ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মাশাআল্লাহ! জাযাকাল্লাহ খাইরান..
May Allah (swt) accept our fasting in this month of Ramadan!
মন্তব্য করতে লগইন করুন