Roseরমাদান ও সিয়ামে রমাদানের ফযীলত Rose

লিখেছেন লিখেছেন সত্যের ডাক ২৮ জুন, ২০১৪, ০১:৫৭:২৪ দুপুর



রমাদান মাসের ফযীলত

আল্লাহর ইবাদতের জন্য বছরের অন্যান্য মাসের মাঝে রমাদান মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। কুরআন ও হাদীস পর্যালোচনা করলে এ মাসের অনেক ফযীলত, মর্যাদা, বৈশিষ্ট্য, গুরুত্ব ও মহত্ব প্রস্ফূটিত হয়। এখানে বিশেষ কয়েকটি দিক উল্লেখ করব ইনশাআল্লাহ।

(ক) কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার মাসঃ

রমাদান মাসের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, এই মাসকে আল্লাহ তাঅালা কুরআন নাযিল করার জন্য নির্বাচন করেছেন। আল্লাহ তাঅালা বলেছেনঃ ‘রমদান হল, সেই মাস, যাতে কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে। মানুষের হিদায়েতের জন্য এবং হিদায়েত ও পার্থক্যের অনেক নিদর্শনাবলী। অতএব তোমাদের থেকে যে এই মাস পাবে সে যেন সিয়াম পালন করে। {বাকারাঃ ১৮৫।}

(খ) জান্নাতের দ্বার খোলা এবং জাহান্নামের দ্বার বন্ধঃ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেনঃ নবী কারীম (সাঃ) বলেছেনঃ যখন রমাদান মাস প্রবেশ করে, তখন জান্নাতের দ্বারসমূহ খোলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দ্বারসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। আর শয়তানকে শিকলে আবদ্ধ করে রাখা হয়। {বুখারীঃ ১৭৬৪।}

(গ) দুঅ’া কবূল হওয়ার উত্তম সময়ঃ

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ প্রত্যেক মুসলিমের জন্য এ মাসের প্রত্যেক দিনে ও রাতে রয়েছে মাকবুল দুঅ’া। অর্থাৎ যখনই দুঅ’া করবে তা গ্রহনযোগ্য হবে। {বাযযার, সহীহুত তারগীবঃ ১০০২।}

(ঘ) রমাদান পাওয়ার পরও যে পাপ মোচন করাতে পারেনি সে হতভাগাঃ

কা’আব ইবনে উজরা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) কে বললেনঃ মিম্বর নিয়ে আস, আমরা মিম্বর নিয়ে আসলাম। তিনি প্রথম সিঁড়িতে চড়ে বললেনঃ আমীন। দ্বিতীয় সিঁড়িতে চড়েও বললেনঃ আমীন। তারপর তৃতীয় সিঁড়িতে চড়েও বললেনঃ আমীন। যখন মিম্বর থেকে নিচে অবতরণ করলেন, তখন আমরা জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আজ আমরা আপনাকে এমন কথা বলতে শুনলাম যা পূর্বে কখনো শুনিনি। তিনি বললেনঃ জিবরীল (আঃ) আমার কাছে এসে বললেনঃ সে ব্যক্তি ধ্বংস হোক যে রমাদান মাস পেয়েও নিজের পাপ মোচন করাতে পারেনি। আমি বললামঃ আমীন। দ্বিতীয় সিঁড়িতে চড়ার পর জিবরীল (আঃ) বললেনঃ সে ব্যক্তি ধ্বংস হোক যার সামনে আপনার নাম উল্লেখ করা হল, কিন্তু সে দরূদ পাঠ করল না। আমি বললামঃ আমীন। তারপর তৃতীয় সিঁড়িতে চড়ার পর জিবরীল (আঃ) বললেনঃ সে ব্যক্তি ধ্বংস হোক যে মাতা-পিতাকে বা তাদের কোন একজনকে বৃদ্ধাবস্থায় পেয়েও তাদের খেদমতে রত থেকে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে নি। আমি বললামঃ আমীন। {মুস্তাদরাক হাকেমঃ ৮/১৫৩, সহীহুত তারগীবঃ ৯৮৫।}

সিয়ামে রমাদানের ফযীলত

ইসলামী ইবাদতসমূহের মধ্যে সিয়ামের ফযীলত ও গুরুত্ব কারো অজানা কথা নয়। বিশেষভাবে সিয়ামে রমাদানের ফযীলত ও মর্যাদা অনেক বেশী। এখানে আমরা তার কয়েকটি ফযীলত ও গুরুত্বের কথা উল্লেখ করব ইনশা আল্লাহ।

(ক) সিয়ামে রমাদান ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ রুকনঃ

আব্দুুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেনঃ নবী কারীম (সাঃ) বলেছেনঃ ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির উপর স্থাপিত। (১) এই সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল। (২) ছলাত কায়েম করা (৩) যাকাত দেয়া (৪) হজ্ব করা এবং (৫) রমাদানের সিয়াম পালন করা। (বুখারীঃ ১/৩৪, হা/৭।)

(খ) সিয়ামে রমাদান পূর্বের সকল গুনাহের কাফ্ফারাঃ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঈমান ও ইখলাছের সহিত রমাদানের সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের সকল পাপ ক্ষমা করা হবে। {সহীহ বুখারী, হাঃ ৩৮।}

(গ) প্রত্যেক দিনে রাতে জাহান্নাম থেকে মুক্তিদানঃ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ তাঅালা রমাদানের প্রত্যেক রাতে অনেক লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। {সহীহুত তারগীবঃ ২/৫৮৫/৯৯৮।}

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ রমাদানের প্রত্যেক রাত ও দিনে আল্লাহ তা’আলা অনেক ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। {সহীহুত তারগীব, হাঃ ১০০২।}

(ঘ) ইফতারের সময় জাহান্নামীদের মুক্তিদানঃ

জাবির (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক দিন ইফতারের সময় লোকজনকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। {ইবনে মাজাহ, হা/ঃ ১৬৬৬।}

(ঙ) রমাদানের সিয়াম দশ মাস সিয়ামের সমানঃ

ছওবান (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ রমাদানের সিয়াম পালন করলে দশ মাস সিয়াম পালন করার সমান ছওয়াব হয়। {সহীহুত তারগীব, হাঃ ১০০৭।}

সিয়ামে রমাদান বই থেকে সংগৃহীত

বিষয়: বিবিধ

১৩৬০ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

239637
২৮ জুন ২০১৪ দুপুর ০৩:২০
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ বেশ ভালো লাগলো লিখাটি
২৮ জুন ২০১৪ বিকাল ০৪:২৯
185943
সত্যের ডাক লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
239648
২৮ জুন ২০১৪ বিকাল ০৪:০১
আবু তাহের মিয়াজী লিখেছেন : হে আল্লাহ ! আমের রোজাকে প্রকৃত রোজাদারদের রোজা হিসেবে গ্রহণ কর। আমাদের নামাজকে কবুল কর প্রকৃত নামাজীদের নামাজ হিসেবে। আমাদেরকে জাগিয়ে তোলো গাফিলতির ঘুম থেকে। হে জগত সমূহের প্রতিপালক! এদিনে আমাদের সব গুনাহ মাফ করে দাও। ক্ষমা করে দাও আমাদের যাবতীয় অপরাধ। হে অপরাধীদের অপরাধ ক্ষমাকারী। আমীন।
২৮ জুন ২০১৪ বিকাল ০৪:৩০
185944
সত্যের ডাক লিখেছেন : আমীন ইয়া রাব। জাযাকাল্লাহু খাইরান।
240086
২৯ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৬
ভিশু লিখেছেন : খুব সুন্দর লেখা!
জাযাকাল্লাহ খাইরান... Praying
রমযান কারীম!
Rose Rose Rose
০১ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৪
186699
সত্যের ডাক লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ খাইরান...
240595
০১ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৩
সত্যের ডাক লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ খাইরান...

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File