গল্প-৩ স্বাধীনতা গল্প

লিখেছেন লিখেছেন স্বাধীনতার গল্প ১৫ জুন, ২০১৩, ০৮:১২:০৩ রাত

কয়েকদিন ধরে শরীরের অবস্থা বেশি ভাল যাচ্ছে না। গত দুদিন ধরে প্রচন্ড জ্বর আর সর্দি কাশি। অফিসের ডিউটি অনেক বেশি আর খাওয়া দাওয়ার অনিয়ময়ের কারনেই হয়ত এ অবস্থা। স্যার অফিসে থাকা অবস্থায় খাওয়া দাওয়া করা নিষেধ। স্যার তো দুপুরে ৩/৪টার আগে অফিস থেকে বের হন না। আবার বাসায় গিয়ে রেষ্ট নিয়ে সন্ধ্যা সাতটা থেকে সাড়ে সাতটায় অফিসে আসেন এবং রাত ১১ পর্যন্ত অফিস করেন। এই সময় ১ মিনিটের জন্য বাইরে যাওয়া নিষেধ। তারমানে আমরা কয়েকজন যারা স্যারের অধীনে কাজ করি তাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। স্যারকে আমাদের অসুবিধার কথা বলা সত্বেও স্যার এ বিষয়ে কোন খেয়াল করছেন না্। ভাবখানা এমন যে চাকরি করলে কর না হলে চলে যাও। তো যাই হোক চাকুরীর সুবাধে আমি সস্ত্রীক শহরে বাসা ভাড়া করে থাকি। আর আমার পিতা মাতা থাকেন গ্রামে । আমার অসুস্থতার খবর শুনে আমার আব্বা আম্মা ছুটে এসেছেন আমাকে দেখতে। আমি বিছানায় শুয়ে আছি। মা আসার পর আমাকে দেখলেন আর আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। মনে হল বুঝি জ্বর আমার প্রায় অনেকখানি কমে গেছে। আমি মাকে জিজ্ঞাসা করলাম বাড়ীর কি খবর? মা বলল আমাদের বাড়ীর পেছনে যে রয়মানদের বাড়ী, ওদের বাড়ীতে ডাকাত পড়েছিলো গত পরশুদিন । ওর অবস্থা খুবই খারাপ। ঢাকায় নেওয়া হয়েছে উন্নত চিকিৎসার জন্য। গ্রাম তো, রয়মানের স্ত্রী যখন রাত দুইটার দিকে প্রকৃতির ডাকে বাইরে বের হয়েছে তখনই ডাকাত দল প্রথম ওনার উপর আক্রমন করেন । প্রথমেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাম কান কেটে ফেলে ডাকাত দল। কারন তার কানে দুল ছিল। দ্বিতীয় কানটি কাটার জন্য ডাকাতরা যখন চেষ্টা করছিল তখন সে চিৎকার করে উঠে এবং তার চিৎকারে তার স্বামী অর্থাৎ রয়মান বের হয়ে আসলে তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। সে বাচার আশায় নিজেকে রক্ষা করার জন্য আবার ঘরের দিকে দৌড়ে চলে যাওয়ার সময় পিছন থেকে তার ঘারে কোপ দিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। ফলে তার ঘারের রগ কেটে যায় এবং ঘরের ভিতর যাওয়ার পর ঘরের মেঝে আর আর আসবাবপত্র রক্তে ভেসে যায়। মা বললেন সকালে আমি ঘরের ভিতর গিয়ে রক্তের এ বন্যা দেখে ঠিক থাকতে পারিনি। আমি প্রায় বেহুশ হবার জোগাড় । এ অবস্থা দেখে আমার মা তাড়াতাড়ি ওখান থেকে চলে আসেন। আর মায়ের মুখের এমন বাস্তব গল্প শুনে তো আমার গায়ের লোম খাড়া হয়ে উঠলো। মা আর বললেন গত কয়েক মাসে আমাদের আশেপাশের প্রায় দশ এর অধিক বাড়ীতে ডাকাতি হয়েছে। তবে কোনটিই এত লোম হর্ষক নয়। যেই লোকটাকে কুপিয়ে আহত করা হলো সে হয়ত আর তেমন কোন ভারী কাজই করতে পারবে না। সে ই একমাত্র তার সংসারের উপার্জন ক্ষম ব্যক্তি ছিল। তার রয়েছে দুটি মেয়ে ও একটি ছেলে। তিনজনই বলা চলে ছোট। ওদের কি হবে এখন? কে নেবে ওদের দায়িত্ব?

এরুপ অবস্থাই কি আমাদের স্বাধীন দেশের চাওয়া।

স্বাধীনতার গল্প এখানেই শেষ করতে পারতাম কিন্ত এখনও শেষ হয়নি আমার স্বাধীনতার গল্প। আগামী পর্বে আবার দেখা হবে এই প্রত্যাশায়.............শেষ করছি।

বিষয়: বিবিধ

১২০২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File