গল্প নং-২
লিখেছেন লিখেছেন স্বাধীনতার গল্প ০৯ জুন, ২০১৩, ০৯:৫৯:২৯ রাত
বসন্ত কাল শেষ হতে চলেছে। কোকিলের সমুধুর গান শুনার সময় গুলোও যেন হারিয়ে যাচ্ছে। অফিসের ব্যস্ততা আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। নিজস্ব স্বাধীনতা বলতে কিছুই নেই। এখন আর কি করা । ভাল লাগে না তবুও জীবনের প্রয়োজনে করতে হয় কোন কিছু। ভাল কিছু করার স্বপ্ন আছে মনে তবে সময় নেই এ নিয়ে ভাবার। আমার সময়ের সিংহ ভাগই চলে যায় অফিস ডিউটি করতে। সামান্য বেতন। মাসের ৫ তারিখের মধ্যে শেষ। বাড়ি ভাড়া, চাউল কেনাসহ সাংসারিক টুকিটাকি জিনিস পত্র যেন পিছু ছাড়ছে না। নতুন সংসার শুরু করেছি। সুন্দরী বউ আমার ভাড়া করা ঘরে। বয়স অল্প। এখনও পড়াশুনা করছে। তার আব্দারও একেবারে কম নয়। যদিও সে আমাকে খুব বেশি প্রেশার দেয় না। তারপরও তার মাসে দুবার মার্কেটে যাওয়া চাই। তার কেনাকাট অবশ্য আমার সামর্থের মধ্যেই থাকে। ঐদিকে বাড়ীতে আমার আব্বা আম্মার জন্যও সামান্য কিছু টাকা পাঠাতে হয়। যদিও তাদের চাহিদা অনুযায়ী পাঠাতে পারি না তারপরও কিছু দিতে পারলে মনে শান্তি লাগে । সব মিলিয়ে সামনে চলার পথ লোহার শিকল দিয়ে কে যেন বেঁধে রেখেছে। জানি না এমন একটা দেশে জন্মেছি , এত পড়াশুনা করে সোনার হরিন নামক চাকুরিটা পেয়েছি সৌভাগ্য ক্রমে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের এই বাজারে যেই টাকাগুলো বেতন পাই তা দিয়ে অর্ধেক মাসও চলতে পারি না। এমন চাকরীই করি যে এত বেশি সময় অফিস করেও কোন অভার টাইম পাই না। কারন সরকারী চাকুরীতে কোন অভার টাইমের নিয়ম নেই। ঘৃনা করি উপরি ইনকামকে তাই অন্য সবার অবস্থা ভাল থাকলেও আমার অবস্খা ছেড়া চামড়ার পাদুকার মতই । প্রায় দুই বছর হয়ে গেল ওটির বয়স তারপও জোড়াতালি দিয়ে ওটিকে ব্যবহার করতে হচ্ছে। অল্প দামের পাদুকা তো বেশি দিন লাষ্টিং করে না। যাই হোক একজোড়া পাদুকা কিনবো বলে অনেক দিন থেকেই চিন্তা করছি। কিন্তু কেনা হচ্ছে না শুধু টাকার হিসাব মিলাতে পারছি না বলে। তো সেদিন অফিস থেকে শিক্ষক নিয়োগের ডিউটি বাবদ পাঁচশত টাকা সম্মানী ভাতা পেলাম। কয়েকদিন হল টাকাটা পকেটে আছে। খরচ করছি না পাদুকা কিনব বলে। অফিসে বসে কাজ করছি আর পকেটে হাত দিচ্ছি টাকাটার উপর আর চিন্তা করছি আজকেই বিকেলের দিকে মাকের্টের যাব আর এক জোড়া পাদুকা কিনব। এবার একটু ভাল দেখে কিনব । কারন এবার বাজেট পাঁচশো টাকা। তো কাজ করছি এমন সময় আমাদের অফিসেরই পিয়ন ফরহাদ বলল ভাই আপনার বড় ভাই আসছে গ্রাম থেকে ওয়েটিং রুমে বসে আছে। আমি হাতের কাজ শেষ করে গেলাম ওখানে । বড় ভা্ই বলল যে ফুফাতো বোনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার জটিল অসুখ হয়েছে, তুই যাবি নাকি দেখতে। ফুপু তো তোর কথা বলল যে তুই তো চাকরি করিছ তোর কাছে তো অনেক টাকা আছে তাই তোকে কিছু টাকা দিতে বলেছে। কি আর করা পকেট থেকে পাঁচশো টাকার নোটটি দিয়ে বললাম যে ফুফুকে বলিস ইচ্ছা থাকা সত্বেও বেশি টাকা দিতে পারলাম না। আর আমি অফিস শেষ করে তাকে দেখতে যাব ..............তার পরে আর আছে কিন্তু সময়ের অভাবে লিখতে পারলাম না আবার কথা হবে এই প্রত্যাশায়....... শেষ করছি।
বিষয়: বিবিধ
১৫৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন