বাংলাদেশেও কি ইসলাম ফোবিয়া

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মাদ রুবেল ১৫ মে, ২০১৩, ০১:৫৯:০৮ দুপুর

পাগলা-কুকুর কামড় দিলে জলাতঙ্ক রোগের সৃষ্টি হয়। জল বা পানি দেখলেই রোগী যে আতঙ্কের মধ্যে থাকে তা আমরা জানি। আর না-পছন্দ ইসলামের নামে কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে, তার কার্যক্রম বৃদ্ধি পেলে বা ইসলামের প্রচার-প্রসার দেখলেই আরেক ধরনের আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। একে বলা যায় ইসলামাতঙ্ক, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ইসলামফোবিয়া। তাহলে কি ইসলামফোবিয়া বাংলাদেশেও। কিছুদিন আগে সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরে দেখা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ভবনের দোতলায় এক ছাত্র অন্য কিছু সংখ্যক ছাত্রকে সালাম দিলে তারা ক্ষিপ্ত হয়। সালাম দেয়ায় ‘শিবির’ সন্দেহে তাকে মারধর করে আহত করা হয়। পিরোজপুর ও পূর্বধলায় ছাত্রলীগ কর্মীরা বোরকা পরিহিত কিছু মেয়েদের সাতে অশালিন আচরন করে মেয়েরা দিকদিশা না পেয়ে একপর্যায়ে তারা প্রাণভয়ে নিকটবর্তী মাদ্রাসায় আশ্রয় নেয়। পড়ে তারা পুলিশকে খবর দেয় মাদ্রাসায় জঙ্গী আছে।পরে পুলিশ এসে তাদের ধরে নিয়ে যায়। এছাড়াও বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জে ওয়াজ-মাহফিল যুগযুগ ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বললেন জঙ্গী কার্যক্রম, হয় গেল মাহফিল পন্ড।মাদ্রাসা থেকে পাস করা ছাত্রদের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।’রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে টুপি, দাড়ি ও হিজাবের ব্যাপারে আপত্তি করা হয়েছে। আলেম-ওলামা ও কওমি মাদ্রাসাগুলোকে জঙ্গিবাদের আখড়া বলা হচ্ছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াতের পরিবর্তে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়া হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার মহান আল্লাহর ক্ষমতা সম্পর্কে কুফরি মন্তব্য এবং আজান সম্পর্কে এক মন্ত্রী বাজে মন্তব্য রেখেছেন।এ সরকারের আমলে মানিকগঞ্জের শিক্ষক মহানবী (সা.) সম্পর্কে কটুক্তি এবং পবিত্র কোরআন সম্পর্কে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন।ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা চালু ও স্কার্ফ খুলে ফেলতে পরামর্শ দিলেন ইউনেস্কোর ভারতীয় দূত।’ তিনি বাংলাদেশের স্কাউটসের জাতীয় কমিশনার অধ্যাপিকা নাজমা শামসকে তার মাথা থেকে স্কার্ফ খুলে ফেলতে বলেন। শুধু তা-ই নয়, স্কার্ফ পরিধানের জন্য তিনি অধ্যাপিকাকে ননসেন্স বলেও ভর্ত্সনা করেন।পবিত্র রোজার মাস শুরু হওয়ার ঠিক আগের দিন ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে ডেপুটি স্পিকার বললেন, ‘বাংলাদেশে বিশেষ একটি ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণার সিদ্ধান্ত জাতির জন্য অবমাননাকর।হজযাত্রীদের ওপর পুলিশের প্রাক-গোয়েন্দাগিরি করে ক্লিয়ারেন্স দেয়া।বাংলাদেশের একজন অর্থনীতিবিদ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ‘ইসলাম’ শব্দটি বাদ দেয়া উচিত। তিনি আরও বলেছেন “বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের নামে যা হচ্ছে তা ‘ধোঁকাবাজি’।বর্তমান আইনমন্ত্রী মাদ্রাসা জঙ্গিবাদের প্রজনন ক্ষেত্র বলেও বিভিন্ন সময়ে বক্তব্য প্রদান করেছেন।প্রফেসর ড. সৈয়দা রাজিয়া সুলতানা বলেন, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের উত্সশক্তি।ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক বলেন, পৃথিবীতে যত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ রয়েছে, তার সবই ইসলাম ও মুসলমানদের মধ্যে। এসব কিসের লক্ষন। আমরা এ কোন দেশে বাস করছি। হে আল্লাহ আপনি আমাদের সহায় হোন। মনে হয় কেয়ামত নিকটে চলে এসেছে। না হলে এমন ইসলাম বিরোধী ততপরতা কেন? বৃহত্তর একটি মুসলিম দেশে ইসলামী কথা বার্তা বলা যাবে না। বললে জঙ্গী বানানো হবে।এটা কি?? যেখানে মেয়েদের ইজ্জত আব্রু নিয়ে টানা হিচড়া করা হয়, মেধাবী ছাত্রদের খুন করা হয়, ভর্তি বানিজ্য করা হয়, শিক্ষকদের লানচিত করা হয়, অন্যান্য নানা অপরাধ করা হয় তাদের বিরুদ্বে কেন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না??? আর ইসলামী কথা বার্তা বললেই টেনে হিচড়ে পুলিশ কে দিতে হবে এটাই বা কি? আর যেভাবে ৫ই মে মতিঝিলে গণহত্যা হল, নির্বিচারে আলেম হত্যা হল আর সেটাই বা কেন? তার মানে আমরা বুঝতে পারি যে, যদি ইসলাম মোতাবেক রাষ্ট্র পরিচালনা হয় তাহলে আর ঐসব লোকেরা খারাপ কাজ করতে পারবে না, দূর্নীতি করতে পারবে না, অপরের সম্পদ নষ্ট করতে পারবে না, লুটপাট-চাদাবাজী, ধর্ষণ-খুন-গুম করতে পারবে না সেজন্যেই ইসলাম এবং তাদের অনুসারীদের নির্মমভাবে নির্যাতন করে। স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে তারা ইসলামাতঙ্কে ভুগছে।

বিষয়: রাজনীতি

১৪৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File