ক্ষমতার রাজনীতি এবং নির্বাচনে আলেম-ওলামাদের ভূমিকা

লিখেছেন লিখেছেন জঙ্গী বাবা ০৫ জুলাই, ২০১৩, ০১:০৯:৪৬ দুপুর

গত ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে আলেম-ওলামার ম্যান্ডেট নিয়ে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আরোহন করেছিল। তার আগে আওয়ামিলীগের ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপ, আলেম-ওলামা নির্যাতন, সংসদে ফতোয়া বিরোধী আইন পাশ ইত্যাদি ইস্যুতে প্রতিবাদ করার কারনে আলেম-ওলামাদের ব্যাপক নির্যাতন-নীপিড়নের স্বিকার হতে হয়েছিল। আওয়ামিলীগের এই সব বর্বর কার্যক্রমই তাদের নির্বাচনে ভরাডুবির পেছনে অন্যতম কারন হিসেবে বিবেচিত হয়।

আসুন এইবার আমরা বর্তমানে আসি। এই ফ্যাসিস্ট সরকার মসনদে বসার পর থেকেই তাদের কালো থাবা সম্প্রসারিত করে ইসলাম ও মুসলিম নিধনে। হাজার হাজার আলেম-ওলামা-হাফেজে ক্বোরানকে রাতের আধারে নারকীয় কায়দায় হিংস্রভাবে হত্যা করা হয়। এরই ফলশ্রুতিতে গত ১৫ জুনের চারটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামিলীগের নৌকা ডুবে যায় মানুষের ঘৃনার সমুদ্রে। এবং তারই মধ্যিদিয়ে আগামি সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামিলীগের লজ্জাজনকভাবে পরাজয়বরণের পদধ্বনি আমরা শুনতে পাই।

এখন আসুন আরেকটু গভীরে। ২০০১ সালের পর থেকে আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে বাংলাদেশের জাতীয় এবং স্থানীয় নির্বাচনে দেশের আলেম-ওলামাদের ব্যাপক প্রভাব স্পষ্ট। নির্বাচনের সময় এদের ম্যান্ডেটটি নির্বাচনে জেতার জন্য দুইটি দল ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করে।

কথা হচ্ছে যাদেরকে ব্যবহার করে দুইটি দল ক্ষমতার স্বাদ গ্রহন করে তাদেরকে তারা কী পর্যন্ত মূল্যায়ন করে? এবং এরাইবা কী পর্যন্ত লাভবান হয় ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে? ধর্মের জন্য লড়াই করে যারা তুলনামূলক কম ধর্ম বিদ্বেসীদের ক্ষমতার মসনদে তারা সমসীন করিয়ে ধর্মেরইবা কী পর্যন্ত ফায়দা উঠাতে পেরেছেন? ২০০১-২০০৬ সেশনেও এ দেশে অনেক অনৈসলামিক কার্যক্রম ঘটেছে আমাদের নাকের ডগায় এবং একটি ইসলামী দলের সংসদে ব্যাপক প্রভাব থাকা সত্ত্বেও তারা নীরব ভূমিকা পালন করেছে অনেক ক্ষেত্রে। তাহলে রক্ত এবং ঘামের বদলায় কী পেলাম আমরা তাদের কাছ থেকে? তবে কি আমরা সারা জীবন মিডল ফ্যাক্টর হয়ে ক্ষমতালোভীদের দ্বারা ভাগ-বাটোয়ারা হয়ে তাদের মসনদে আরহনের সিড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকব?

সময় এসেছে চিন্তা করার। ২০০১ সালে আমাদের কোনো কমন প্লাটফর্ম ছিলনা তাই আমরা কাজ করেছি দুটি দলের হয়ে। এখনতো আমাদের একটি কমন প্লাটফর্ম আছে। এখন তবে কেন আমরা নিজেদেরকে একক শক্তি হিসেবে ভাবতে পারছিনা? কেন আমরা এখনো ‘তাদের’ লেজুড়বৃত্তি করে যাচ্ছি? এক্ষেত্রে কওমী ঘরানা সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে ভাবতে হবে বিষয়টি নিয়ে।

আমরা জানি কাজটা খুবই কঠিন তবে অসম্ভবও না। আমাদের দেশ হল সব সম্ভবের দেশ। এর জন্যে সবার আগে যা করতে হবে তা হল দেশের সব সম্মানিত আলেমরা আগে একজনকে নেতা বা আমীর হিসেবে মানার জন্যে ঐকমত্যে পৌছতে হবে। হেফাজতে ইসলামের আগের কার্যক্রমগুলোতে আমরা দেখেছি কিছু ভাইদের হটকারী আচরন। এইসব আচরন, মনমানসিকতা ত্যাগ করার দৃঢ় শপথ নিতে হবে আগে আমাদের। সাহাবায়ে কেরামের আদর্শে রঙ্গীন হয়ে চলতে হবে আমাদের দৃপ্ত পায়ে সামনের দিকে সুন্দর একটি আগামী বিনির্মানের প্রত্যয়ে। এতটুকু আশা আমরা বুকে লালন করলে কি আমাদের পাপ হবে?

বিষয়: বিবিধ

১২৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File