মাইকযোগে ক্বোরান খতমঃ একটি মারাত্মক বিদাত

লিখেছেন লিখেছেন জঙ্গী বাবা ২০ জুন, ২০১৩, ১০:৩৮:০৫ রাত

ইসলাম ধর্মে প্রচলিত বেদাতগুলোর মধ্যে মাইক যোগে ক্বোরআন খতমের তেলাওয়াত অন্যতম একটা বেদাত। বৃহত্তর সিলেটে এই বেদাতটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত। সিলেটে একে সবিনা খতম বলে। এটা একেক এলাকায় একেক নামে পরিচিত। বিশেষ করে পূর্ব সিলেটে জনৈক পীরের অনুসারীদের মাঝে এই প্রথাটা ব্যাপকভাবে প্রচলিত। আসুন আমরা দেখি এই রীতিটির কোনো 'লিগাল গ্রাউন্ড' ইসলামে আছে কিনা। ধর্মীয় বিধান এবং নাগরীক দৃষ্টিকোন থেকে এর অযথার্থতা-অসারতা নিয়ে আমরা আলোচনা করব।

প্রথমেই ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে একে দেখলে ইসলামী বিধানের প্রধান এবং সর্বোচ্চ উৎস মহাগ্রন্থ আল-ক্বোরআন একে কিভাবে দেখে সে বিষয়ে আমরা দেখি।

ক্বোরআনে বলা হয়েছে, "যখন ক্বোরআন পাঠ করা হয় তা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করো, এতে তমাদের উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হবে"। অর্থাৎ ক্বোরআন কারো সামনে পাঠ করা হলে বা ক্বোরআন পাঠের আওয়াজ কারো কানে পৌছলে তার জন্য ক্বোরআন তেলাওয়াত মনোযোগ দিয়ে শ্রবণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর নির্দেশ পালন করা ফরয। অর্থাৎ কেউ যদি ক্বোরআন তেলাওয়াত মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ না করে তবে সে ফরয ছেড়ে দিল যা শক্ত গোনাহ বা পাপ। ক্বোরআনের যে আয়াত স্পষ্টভাবে কোনো কিছুর নির্দেশ দেয় তা ব্যাখ্যার দাবি রাখেনা।

এর লঙ্গন করলে পরিণামে কী হবেঃ

১) মাইকে এই তেলাওয়াতের আওয়াজ অনেক দূর থেকে শোনা যায় বলে দুনিয়াবী অনেক ধরণের ব্যস্থতার কারণে প্রায় সব মানুষই এই ক্বোরআন তেলাওয়াত শ্রবণে মনোযোগ দিতে পারেনা। এরা না শুনার কারনে গুনাহগার হবে। আপনি অনেক মানুষকে খামাখা পাপী বানালেন। এর দায়ভার সম্পূর্ণরুপে আপনার।

২) প্রশ্রাব-পায়খানার জায়গায় ক্বোরআন তেলাওয়াত করা এবং শ্রবণ করা দুইটাই হারাম। মাইকের আওয়াজতো ওখানেও যায়। অতএব, এখানে আপনি মানুষকে পাপ করতে বাধ্য করছেন।

৩) এতে মানুষ বিরক্ত হলে ক্বোরআনের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ হলো, এর পেছনে আপনিই দায়ী।

দ্বিতীয়তঃ একে যদি আমরা নাগরিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি তবে মাইক যোগে ক্বোরআন খতম করা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। কারণ,

১) আশে পাশে অনেক রুগী থাকতে পারে যাদের ভীষণ কষ্ট হবে মাইকের আওয়াজে।

২) আশ-পাশের বাড়ির মানুষের ঘুমের বা স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় ব্যাঘাত ঘটবে।

৩) জোর করে মানুষের উপর ধর্মীয় একটা কাজ চাপিয়ে দেয়া হলো আর এই রকম চাপিয়ে দেয়াটা ইসলাম সমর্থন করেনা।

৪) আশ-পাশে অনেক শিক্ষার্থী-পরীক্ষার্থী থাকে যাদের পড়া-শোনায় ভীষণ ব্যাঘাত ঘটে।

আসুন এইরকম বেদাতগুলোকে বর্জন করি। নিজে পাপ থেকে বাঁচি, অন্যকে বাঁচতে সাহায্য করি। — feeling annoyed.

বিষয়: বিবিধ

১৭৯২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File