ঘুষ নেওয়া বা দেওয়ার জন্য দায়ী কে?
লিখেছেন লিখেছেন মাজহারুল ইসলাম ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০২:১১:১৫ দুপুর
বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরে দেশের মানুষের জন্য প্রায় ৭ কোটি কম্বল আনা হয়েছে যা জন প্রতি এক পিস করে দেওয়া হবে ৭ কোটি মানুষকে কিন্তু সেই কম্বল সবাই পায় নাই। এই নিয়ে আওয়ামীলীগের জাতির পিতা বলেছে ''সব দেশ স্বাধীনতার পর স্বর্ণের খনি পাইয়াছে আর আমি পাইয়াছি চোরের খনি''। যদিও মুজিব সাহেব নিজের কম্বল পায় নাই।
মূল যেই বিষয় নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই তা হচ্ছে বর্তমানে দেশের সরকারী সমস্ত অফিস-আদালত, হাস্পাতাল সহ সব প্রতিষ্ঠানের কথা। স্বাধীনতা পরবর্তীতে কে কীভাবে সরকারী চাকরি নিয়েছে তা আমি জানি না বা জানতে চাইও না। তবে বর্তমানে কীভাবে সরকারী চাকরি নিতে হয় তা ভালো করে জানি। উদাহরন হিসেবে এক জন কোস্ট গার্ডের কথা তুলে ধরলাম। এক জন কোস্ট কার্ডের বেতন ৮ হাজার টাকা + সরকারী সুযোগ সুবিধা এই হচ্ছে তার মাসিক বেতন। কিন্তু সে যখন চাকরি নিয়েছে তখন তাকে ২ লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। যদিও সে নিয়োগ পরিক্ষায় দ্বিতীয় হয়ে ছিল এবং রাজনৈতিক ভাবে ছাত্রলীগ করতো। এই গেল একটা উদাহরন এই বার আসেন আরেকটা উদাহরনে। পুলিশের উপপরিদর্শক বা এসআই পদে নিয়োগ পরিক্ষায় পঞ্চম হয়েছে তার পরেও ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে চাকরি নিতে হয়েছে। এই হচ্ছে আমাদের দেশের প্রশাসনের বর্তমান অবস্থা। এখন অনেকে বলবেন তারা কেন ঘুষ দিয়ে চাকরি নিয়েছে? এই দুই জন থেকে শুনেছি। প্রথম জন যদি টাকা না দিত তাহলে অন্য এক জন ৩ লক্ষ টাকা দিতে রাজি ছিল। দ্বিতীয় জনের একই সমস্যা সে টাকা না দিলে আরেক জনে ৫ লক্ষের উপরে ঘুষ দিতে রাজি ছিল।
উপরের এই দুই জন ব্যাক্তি যখন কর্মক্ষেত্রে আসবে তখন কি এরা ঘুষ ছাড়া কোন কাজ করবে? না এরা কোন দিন করবে না কারন তাদের প্রথম টার্গেট থাকবে ২ লক্ষ বা ৫ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া।
কয়েক দিন আগে সার্টিফিকেট সত্যায়িত করার জন্য একটা শিক্ষাবোর্ডে গেলাম সেখানে নির্দিষ্ট ফি ছাড়া আর কোন টাকা নেওয়া হয় না। কিন্তু যার কাছে দিয়েছি সে সরাসরি বলে ভাই কিছু না দিলে আজকে পাবেন না। এই কথা শুনে বলি বুঝি নাই, আমার পাশে দাঁড়ানো এক ভাইয়ে আসতে করে বলে ঘুষ দেওয়ার কথা বলেছে যদি না দেন আজকে কোন দিন পাবে না। যদিও আমি এক দিনের মধ্যে সত্যায়িত করার জন্য আবেদন করেছি। যাক পরে ঐ লোকের কাছ থেকে শুনলাম সেই ব্যক্তিও এক দিনের মধ্যে করার জন্য আবেদন করেছে কিন্তু টাকা না দেওয়া তিন দিন পরে পেয়েছে।
আমি ব্যাক্তিগত ভাবে এই কাজ করা থেকে দূরে থাকি কিন্তু ঘুষ ছাড়া সহজে ঐ কাজ করতে পারি নাই কোন না কোন সমস্যা এরা ধরবে যতক্ষন পর্যন্ত টাকা না দিবেন।
কেউ যদি এই দেশ থেকে এই সমস্ত অপকর্ম দূর করতে চায় তাহলে আগে এমপি মন্ত্রীদের ভালো করতে হবে তা না হলে কোন দিন এই ঘুষ প্রথা দূর হবে না। অনেক দিন আগে এক ভাই বন্ধু বলে সরকারী চাকরি কেউ যদি করতে করতে চায় তাহলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে বলিছ এক জন মন্ত্রীর মাধ্যমে নিশ্চিত চাকরি নিয়ে দিবো। এই হচ্ছে এই দেশের মন্ত্রীদের অবস্থা। এখনে শুধু আওয়ামীলীগের মন্ত্রীদের কথা বলেছি না বাংলাদেশের অতীতের প্রায় সব মন্ত্রীদের কথা বলতেছি। দেশের প্রায় সব মন্ত্রাণালয়ের মধ্যে লেখা আছে ঘুষকে না বলুন কিন্তু যারা এই স্টিকার লাগিয়েছে তারাই আবার ঘুষ নিচ্ছে।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই ঘুষ দেওয়া এবং নেওয়া থেকে বিরত রাখুক, আমীন।
সবশেষে আল কুরআনের একটি আয়াত দিয়ে শেষ করলাম, আর তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের সম্পদ অবৈধ পদ্ধতিতে খেয়ো না এবং শাসকদের সামনেও এগুলোকে এমন কোন উদ্দেশ্যে পেশ করো না যার ফলে ইচ্ছাকৃতভাবে তোমরা অন্যের সম্পদের কিছু অংশ খাওয়ার সুযোগ পেয়ে যাও। [আল বাকারাহঃ ১৮৮]
বিষয়: বিবিধ
১২৬৩ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক ধন্যবাদ..সচেতনতামূলক পোস্টটির জন্য..আশাকরি আরো লিখবেন...
মন্তব্য করতে লগইন করুন