আগামীকাল ১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস।
লিখেছেন লিখেছেন মাজহারুল ইসলাম ১৫ মে, ২০১৫, ১০:৩১:৫১ রাত
আন্তর্জাতিক মহলের কাছে ফারাক্কার বিষয়টি তুলে ধরেন মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। এই দিনটি আজও শোষণ, বৈষম্য আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাবি আদায়ের পক্ষে বঞ্চিতদের প্রেরণা হয়ে কাজ করে।
১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির মাধ্যমে ফারাক্কার বাঁধ চালু হয়। ১৯৭৬ সালের এই দিনে ভাসানীর নেতৃত্বে সারাদেশের লাখ লাখ মানুষ রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা ময়দান থেকে মরণ বাঁধ ফারাক্কা অভিমুখে লংমার্চে অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, ভারতের একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহারের উদ্দেশ্যে ১৯৬১ সালের ৩০ জানুয়ারি ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ শুরু করে। ১৯৭০ সালে শেষ হয় বাঁধটির নির্মাণকাজ। তখন পরীক্ষামূলকভাবে ভারত কিছু পানি ছাড়ে। আর ১৯৭৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ফারাক্কা বাঁধের সবকটি গেট খুলে দেয় দেশটি, সেবারই মূলত চাহিদা অনুযায়ী পানি পেয়েছিল বাংলাদেশ। তারপর ১৯৭৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত চাহিদানুযায়ী পানির নায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিতই রয়ে গেছে বাংলাদেশ। অথচ ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের আগে, শীতকালের শুষ্ক মৌসুমেও পদ্মা নদী থেকে ৪০ হাজার কিউসেক পর্যন্ত পানি পেত বাংলাদেশ।
ফারাক্কার অভিশাপে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৯ ফুট উঁচুতে অবস্থিত রাজশাহীর গোদাগাড়ীসহ সমগ্র বরেন্দ্র অঞ্চলের ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর প্রতিনিয়তই নিচে নামছে। এতে অগভীর নলকূপ থেকে বর্তমানে কোন পানি উঠছে না। সরকারি গবেষণায় দেখা গেছে, বরেন্দ্র অঞ্চলে প্রতিবছর ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর স্থানভেদে ১-২ ফুট পর্যন্ত নিচে নেমে যাচ্ছে।
চুক্তি অনুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ভারত বাংলাদেশকে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি প্রদান করবে। শুষ্ক মৌসুমের সময়ে ভারত বাংলাদেশকে চুক্তি অনুযায়ী পানি প্রদান করলে পদ্মায় অন্তত পানি প্রবাহ থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। বাংলাদেশ তার নায্য পানির হিস্যা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আজ ভাসানী নেই। অথচ পানির সমস্যা বছরের পর বছর বাড়ছে। নদী শুকিয়ে বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে। শুকনো মৌসুমে নদী এখন প্রায় পানিহীন অবস্থায় পৌঁছেছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই অবস্থা আরো শোচনীয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য থেকে জানা যায়, ফারাক্কা বাঁধ দেওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ পানি কম পেয়ে আসছে। এ ব্যাপারে লিখিত-অলিখিতভাবে ভারতের কাছে প্রতিবাদ করে আসলেও তাদের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যাইনি এখন পর্যন্ত। যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকেও বিষয়টি বারবার উত্থাপন করা হলেও তা কোন সুফল বয়ে আনতে পারেনি। শুধু আশ্বাসের বাণীই শুনিয়ে দিন পার করছে ভারত।
বাস্তবতা হচ্ছে ভারত ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে বাংলাদেশকে পানির নায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। বাংলাদেশ যে পানি পাওয়ার কথা, তা তো পাচ্ছেই না উল্টো বর্ষা মৌসুমে ভারত পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদের ফসলি জমির ক্ষতি সাধন করে চলেছে এমন অভিযোগ দেশের কৃষকদের।
শীর্ষ নিউজের সৌজন্যে
বিষয়: বিবিধ
৭৮৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন