ধ্বংস স্তূপের উপর দাড়িয়ে বাংলাদেশের সংস্কৃতিঃ- শেষ পর্ব
লিখেছেন লিখেছেন মাজহারুল ইসলাম ১১ মার্চ, ২০১৫, ০৮:৩৬:০৯ রাত
ন্যাশনাল মিডিয়া সার্ভে সূত্রে পাওয়া তথ্য মতে, বাংলাদেশে টেলিভিশনের দর্শক ৯ কোটি ১২ লাখের মতো। এসব দর্শকের বয়স ১৫ বছরের ওপরে। যাদের বয়স ১৪ বছরের নিচে তাদের গোনা হয়নি। সে হিসাব নিলে দর্শক সংখ্যা ১১ কোটির মতো হতে পারে। এ দর্শকেরা তাদের প্রতি শত মিনিটের মাত্র ২০ মিনিট বাংলাদেশের টিভি চ্যানেল দেখেন। এটি তারা দেখেন মূলত বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে। রাত ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত হিন্দি চ্যানেল গুলোর দর্শক বেশি থাকে। বাকিটা তারা ব্যয় করেন হিন্দি চ্যানেলের পেছনে। এই দেশে ২৮০ টির মতো চ্যানেল দেখা যায়। এর মধ্যে ৪৫ টির মতো চ্যানেল বাংলাদেশ কিনে দেখায় এ সব চ্যানেলের প্রায় সবগুলোই ভারতীয়। বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেল আমদানি করে থাকে দুইটি প্রধান প্রতিষ্ঠান। একটি মোহাম্মদী গ্রুপ এর মালিক এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আনিসুল হক। অন্য পরিবেশক বেঙ্গল গ্রুপ অথচ বেঙ্গল গ্রুপ দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার কথা বলে ধানমন্ডিতে গড়ে তুলেছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। এ দুইটি প্রতিষ্ঠান থেকেই মূলত ক্যাবল টিভি ব্যবসায়ীরা পে চ্যানেলগুলো কিনে গ্রাহকদের মধ্যে সংযোগ দিয়ে থাকে। এ জন্য পরিবেশকদের গ্রাহক প্রতি চ্যানেলের জন্য আলাদা পেমেন্ট করতে হয়। বাংলাদেশে সব মিলিয়ে বছরে অন্তত এক হাজার কোটি টাকা এখাত থেকে ভারত চলে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ইদানীং প্রাণ সহ অনেক কোম্পানিই ভারতের চ্যানেল গুলোতে বিজ্ঞাপন প্রচার করছে।
ভারতীয় সিরিয়াল নিয়ে খবরের কাগজ গুলোতে অনেক লেখালেখি হয়েছে। যেমনঃ-
[ ভারতীয় সিরিয়ালগুলো ভাঁড়ামি পুর্ন প্রথম আলো, ২৪ অক্টোবর,২০১৩]
[ভারতীয় সিরিয়াল ধ্বংস করে দিচ্ছে আপনার জীবন। এইমাত্র.কম ১৫ জানুয়ারী ২০১৪।]
[ভারতীয় নাটকের সিরিয়াল দেখে শিশুদের নৈতিকতা শিক্ষা দেয়া যাবে না। কক্সবাজার সময়, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪]
[ভারতীয় সিরিয়ালের যে সূক্ষ চালে ধ্বংস হচ্ছে আপনার জীবন! নতুন খবর, ২৮ জানুয়ারি ২০১৪।]
[ভারতীয় সিরিয়াল দেখতে না দেওয়ায় কিশোরীর আত্মহত্যা। প্রিয়. কম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩।]
এতো লেখালেখির পরেও সরকারের এইসব সিরিয়ালের চ্যানেল বন্ধ করতে কোনো ভুমিকা নেই। যদিও ভারতে আমাদের দেশিও চ্যানেল চলতে দেয়না।
বিষয়: বিবিধ
১১৯৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
"ভারতের হিন্দি এবং বাংলা সিরিয়াল দেখে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এই দেশের হাজার হাজার পরিবারের মা, বউ, মেয়ে, বোন, চাচী, ভাবী সহ অন্যরা।" - কথা সত্য। তবে স্বদেশের সিনেমা-টিভি-নাটকও কিছু কম করছে তা কিন্তু নয়।
কারন হিসাবে বলা যায় যে - কোনো মানব সমাজ যদি দীর্ঘ দিন ধরে দরিদ্র, অশিক্ষিত, যথাযথ কর্ম-সংস্থানহীন, নৈতিক অবক্ষয়-এর মধ্যে থাকে তবে সেই সমাজ ধীরে ধীরে ধংসপ্রাপ্ত হয় - জাতি পরিনত হয় হতদরিদ্র, কুশিক্ষিত, লোভী আর দুর্নীতিপ্রিয় এক অসভ্য সমাজে। বাংলাদেশেও এই প্রক্রিয়ার প্রভাব যথেষ্ট ক্রিয়াশীল।
সুশিক্ষা ও নৈতিকতার চর্চা মানব সমাজের দুটি ইতিবাচক উপাদান, এর বিপরীতে কুশিক্ষা, অনৈতিকতা, দূর্নীতির অবাধ প্রসারে সাধারণ মানুষ ভুলে গেছে তাদের কল্যানমূখী প্রকৃত সংষ্কৃতি। ফলে কুজনেরা তৈরী করছে অকল্যানমূখী অবাস্তব অপসংষ্কৃতি। সুস্থ্য সংষ্কৃতির স্বাভাবিক চর্চা আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরেই অনুপস্থিত। আমরা বিজাতীয় সংষ্কৃতির অন্ধ-অনুকরণ বা কখোনো বিকৃত অনুকরণ করা শিখেছি আর আমাদের নিজস্ব সংষ্কৃতিকে ঘৃনা করেছি কখোনো অপ-ধর্মের নামে, কখোনো নষ্ট-রাজনীতির নামে কিন্তু আপন সংষ্কৃতির উন্নয়নে চেষ্টা করিনাই। চেষ্টা করবোই বা কিভাবে দূর্নীতি আর সৎ-উন্নয়ন কখনো এক সাথে হয় না।
মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।
আমীন,
ভারত বাংলাদেশকে দখল করতে সংস্কৃতিক আগ্রাসন চালাচ্ছে। কারন একটা দেশে ধ্বংস করতে আগে তার সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে হয় যা ভারত প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছে। আর বাংলাদেশের নাটকও আছে তবে তা পরকিয়া শিখায় না তারা শিখায় কিভাবে বিয়ের আগে প্রেম করতে হয় বাঁ নষ্টামি করতে হয়। আর বাংলাদেশের সংস্কৃতি নিয়ে লেখার চেষ্টা করবো তাই এই নিয়ে লিখা হয় নাই ঐ সময়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন