ধ্বংস স্তূপের উপর দাড়িয়ে বাংলাদেশের সংস্কৃতিঃ- পর্ব-২

লিখেছেন লিখেছেন মাজহারুল ইসলাম ২৪ নভেম্বর, ২০১৪, ১০:৫২:৪২ রাত

গত রমজানের ঈদে সবচেয়ে বেশি প্রচার হয় ভারতীয় বাংলা সিরিয়ালের কথা যার প্রধান কারন হচ্ছে পাখি ড্রেস যা বোঝেনা সে বোঝেনা নাটকের নায়িকার ড্রেস ছিল। বাংলাদেশের মিডিয়ার মাধ্যমে জানা গেছে এই ড্রেসের জন্য নাকি কয়েক জন আত্মহত্যা করেছে এমন কি স্ত্রী স্বামীকে তালাক পর্যন্ত দিয়েছে। আগেই বলা হয়েছে এই সব নাটকে দেখা মানে এক কথায় পরিবার ধ্বংসা করা।

নাটকে যদি দেখানো হয় স্বামী অন্য মেয়ের সাথে পরকীয়া করে তাহলে এখন আমাদের দেশের মেয়েরা মনে করে তাদের স্বামীরাও অন্য মেয়ের সাথে পরকীয়া করে। এইসব ঘটনা বাস্তব কিনা বা আদ এই ঘটনা সত্য কিনা তা ঐ সব যারা দেখে তারা জানেনে কিনা আমি জানিনা। এই সব কারনে এখন আমাদের দেশের হাজার হাজার পারিবারে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক তালাকে রুপ নিতেছে এই ভারতীয় সিরিয়ালের কারনে।

এই সব নাটকের কারনে আমাদের দেশের নাটক নির্মাতারা এখন আর আগের মত ধারাবাহিক নাটক নির্মাণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করতে চান না। এসব ভারতীয় সিরিয়াল দেখার ফলে মানুষের মাঝে এখন ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে কুসংস্কার বিশ্বাস, তাছাড়া বাংলাদেশের ভাষা, সংস্কৃতি ইত্যাদির উপরও সিরিয়ালের ব্যাপক প্রভাব পরেছে। এমনকি স্কুল কলেজে কিশোর-তরুণীদের আলোচনার বিষয় হিসেবে প্রাধান্য পায় এই ভারতীয় সিরিয়াল। ভারতীয় সিরিয়ালগুলো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মূল্যেবোধ পাল্টে দিচ্ছে অথবা তাদের উস্কে দিচ্ছে বাংলাদেশী মূল্যেবোধের বিপরীতে অবস্থান নিতে।

নিচের কিছু চিত্র সংগ্রহ করে দেওয়া হয়েছে

চিত্র-১ : সন্ধ্যা ৬টা বাজে। মিরপুরের বাসিন্দা রফিক আহমদ কেবলই অফিস থেকে ফিরেছেন। স্ত্রীর চিৎকারে ঠিকমতো ফ্রেশ হতে পারেননি। বাইরে এসে দেখলেন তাদের একমাত্র এক বছর বয়সী বাচ্চা মিমি কাঁদছে। স্ত্রী রফিক সাহেবকে বললেন বাচ্চাকে নিয়ে অন্য রুমে বসে খেলতে, কারণ স্টার জলসায় শুরু হয়ে গেছে ‘টাপুর-টুপুর’ নামের সিরিয়ালটি। আজকের পর্বটি নাকি অনেক আকর্ষণীয়, নতুন কিছু ঘটবে বলে জানান তার স্ত্রী। অগত্যা রফিক সাহেব কথা না বাড়িয়ে মেয়ের কান্না থামাতে ব্যস্ত হয়ে গেলেন।

চিত্র-২ : সীমান্ত স্কয়ারে মেয়েকে নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন ধানমণ্ডির সাতমসজিদ এলাকার গোলাম হাসান। সবার পোশাক পছন্দ হলেও তার সপ্তম শ্রেণী পড়-য়া মেয়েটি কোন পোশাকই পছন্দ করছে না। কারণ তার পছন্দ ‘ঝিলিক’ নামের একটি পোশাক, এটা ছাড়া আর কোন কিছুই সে কিনতে নারাজ। তার এক কথা, ঝিলিক জামা লাগবেই। হাসান সাহেব অনেকটা অসহায়ের দৃষ্টি নিয়ে মেয়েকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে ওই নামের পোশাকটি এখানে নেই। পোশাকটি পরে কিনে দেয়া হবে।

চিত্র-৩ : ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের শহীদ আনোয়ার স্কুলে নবম শ্রেণীতে পড়ে ইতি। প্রতিদিনই একটি বিষয় নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে তার কথাকাটাকাটি হয়। যে যত কথা বলুক না কেন ‘রাশি’ নামের একটি বাংলা এবং স্টার প্লাসের ‘শ্বশুরাল গেন্দা ফুল’ হিন্দি সিরিয়ালটি তাকে দেখতে দিতেই হবে। পরীক্ষা কিংবা বাসা টিউটর পড়াতে এলেও সেটাতে তার মনোযোগ থাকে না। দীর্ঘদিন ধরে হিন্দি সিরিয়াল দেখার কারণে এখন তাকে অধিকাংশ সময়ই হিন্দিতে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে, এমনকি সিরিয়ালের বিভিন্ন ডায়ালগ মুখস্থ করে রেখেছে। অন্যদিকে পরীক্ষার রেজাল্টে যথেষ্ট খারাপ হচ্ছে দিন দিন।

এই হচ্ছে আমাদের সমাজের অবস্থা। কিভাবে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়?

চলবে..................

বিষয়: বিবিধ

১১৯৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

287689
২৪ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৩৮
বড়মামা লিখেছেন : চেষ্টা করলে উপায় হয় টিভি বন্দ করে দিন ।আমার এাখানে এক বিশাল বাড়ির মালিক শর্ত তার বাসায় কেউ টিভি চালাতে পারবে না ।সে বলে টিভির কোন দরকার নাই।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File