বেপরোয়া হাসিনা, আমাদের আশঙ্কা

লিখেছেন লিখেছেন আসমা সিথী ২৫ মে, ২০১৩, ০৭:৫৬:২৫ সন্ধ্যা

শোষণের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততোই বেপরোয়া হয়ে উঠছেন শেখ মুজিব তনয়া শেখ হাসিনা। ন্যূনতম মানবতাবোধকেও তোয়াক্কা করছেন না তিনি। ২০০৮ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তার দানবীয় আচরণই লক্ষ্য করছে দেশের মানুষ এমনকি বহির্বিশ্বও। কিন্তু ২০১৩ সালের শেষ দিকে শোষণের মসনদ ছাড়ার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততোই পাগল হয়ে উঠছেন তিনি। ক্ষমতার মসনদ আঁকড়ে রাখতে মানুষ হত্যার পাগলামীতে তিনি এতোটাই মাতাল হয়ে উঠছেন যে, মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএনে তাকে ‘লেডি হিটলার’ বলেও মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

এটা সবারই জানা আছে যে, বাংলাদেশের ভাগ্যাকাশে সবচেয়ে কলঙ্কজনক ১/১১ সৃষ্টি করেছে ভারতের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’। উপমহাদেশের রাজনীতির মাঠ থেকে ভারতের ‘লেডি হিটলার’ ইন্ধিরা গান্ধী পৌত্র রাহুল গান্ধীর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি তারেক রহমানকে সরিয়ে দিতে এবং ক্রমেই সাম্রাজ্যবাদী ভারতের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা স্বাধীন বাংলাদেশকে দমিয়ে দিতে ইসলামপন্থি ও জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে এই কলঙ্কজনক অধ্যায় তৈরি করে ‘র’।

পলাশীর প্রান্তরের মতোই দেশের কিছু নব্য মীর জাফরের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে বাংলাদেশ ধ্বংসের চক্রান্তে সাফল্য লাভ করে যাচ্ছে ‘র’।

ইসলামপন্থি ও জাতীয়তাবাদী শক্তিতে ঘাপটি মেরে থাকা গুপ্তচরদের কারণে ‘র’ এর চক্রান্তে বাংলাদেশ ও এদেশ থেকে ইসলাম উচ্ছেদের কর্মসূচি ভালই চালিয়ে যাচ্ছেন ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের হত্যাযজ্ঞে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া হাসিনা। ইতিহাস স্বাক্ষী, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বরাবরই পাকিস্তানের গুপ্তচর বলে আসলেও দেশপ্রেমিক ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী জিয়াউর রহমানের আশীর্বাদেই এখন পর্যন্ত দেশের ক্ষমতার মসনদে বসতে পেরেছেন হাসিনা ওয়াজেদ।

প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে বাংলাদেশ ধ্বংসের চক্রান্ত শুরু করলেও মাঝে কিছু দেশপ্রেমিকের হস্তক্ষেপে কিছুটা পিছিয়ে যায় ‘র’। কিন্তু এই কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থাটির অপচেষ্টা থেমে থাকেনি একটি মুহূর্তের জন্যও। তারা মাথায় নেয়, বাংলাদেশ ধ্বংস করতে হলে এ দেশের ইসলামপন্থি ও দেশপ্রেমিকদের উৎখাত করতে হবে। তাই সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্রের ছক আঁকে। লক্ষ্য ইসলামপন্থি ও দেশপ্রেমিকদের উৎখাত। নব্য মীর জাফর ও ঘসেটি বেগমদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ১/১১ সৃষ্টির মাধ্যমে দেশপ্রেমিক রাজনীতিকদের বিতর্কিত, একাত্তরেই নিষ্পত্তি হওয়া যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের ধুয়ো তুলে ইসলামপন্থিদের বিতর্কিত করে দেশে হট্টগোল বাধিয়ে বেশ সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে ‘র’।

কুখ্যাত বাকশালের জনক মুজিব তনয়া হাসিনাকে ‘র’ হয়তো বোঝাচ্ছে যে, এই ইসলামপন্থি ও দেশপ্রেমিকদের শেষ করতে পারলে আপনার ক্ষমতা পাকাপোক্ত। ‘র’ এর আশ্বাসে হাসিনাও মেতে উঠেছেন গণরক্তের হোলি খেলায়।

কিন্তু হাসিনা কখনো বুঝতে চাইছেন কি না জানি না যে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাযজ্ঞ অবশ্যই ভারত কিংবা তাদের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর অজান্তে হয়নি। ‘র’ এর অজান্তে হয়নি ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাও। মুজিবকে হত্যা করে ‘র’ কিংবা ভারতের স্বার্থ হলো মোশতাকের মতো একনিষ্ঠ ভারতীয় দালাল পাওয়া, আর হাসিনা খুন হলে তাদের স্বার্থ এ দেশে হট্টগোল বাধিয়ে নিরাপত্তার রক্ষার অজুহাতে সিকিম কিংবা ভুটানের মতো করদরাজ্য বানিয়ে ফেলা।

কথা এখানেই শেষ নয়, হাসিনা হয়তো এতো হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে কিছুটা হলেও নিজের নিরাপত্তা সম্পর্কে উদ্বেগ্ন, তার উদ্বেগের প্রেক্ষিতে ‘র’ হয়তো বলছে সমস্যা নেই, আমরাতো আছি। কিন্তু হাসিনা এটা কখনো বুঝতে চেয়েছেন কিনা জানি না যে, জনতার রোষানল থেকে স্বয়ং ‘র’ এর দাদা রাজীব গান্ধী কিংবা ভারতীয় লেডি হিটলার ইন্ধিরা গান্ধীও বাঁচতে পারেননি।

বেঘোরে মারা পড়া এই রাজীব গান্ধী ও ইন্দিরা গান্ধীরা কালে কালে সাধারণ মানুষের কাছে কুচক্রি ও খলনায়ক হিসেবেই অভহিত হবেন নিজেদের কুকীর্তির কারণে। ‘র’ এর কুপরামর্শে মানুষ হত্যা করে দেশ ধ্বংসের চক্রান্ত চালিয়ে গেলে হয়তো একদিন রাজীব গান্ধী-ইন্দিরা গান্ধী কিংবা স্বয়ং পিতার ভাগ্যবরণ করতে হতে পারে হাসিনাকেও। আর কয়েক দফা গণহত্যা চালানোর জন্য ইতোমধ্যেই তিনি ‘লেডি হিটলার’ উপাধি পেয়ে গেছেন।

হাসিনা খুব ভাল করেই বোঝেন যে, জনতার নিরাপত্তা বেষ্টনীতে কোনো শক্তি তাকে ঘায়েল করতে পারবে না, যার প্রমাণ ২১ এ আগস্ট। তার এটাও বোঝা উচিত, জনতার রোষানলে পড়লে যত শক্তিশালী নিরাপত্তা বেষ্টনীই হোক কেউই তাকে রক্ষা করতে পারবে না।

অন্য প্রসঙ্গগুলো বাদ থাক, জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে কেবল রায়ের পর জনতা যেভাবে হাসিনাকে ঝাড়ু-জুতা স্যান্ডেল দেখিয়েছে, ভয় হয়- আল্লাহ না করুন, হাসিনা যদি কুখ্যাত ‘র’ এর পরামর্শে মাওলানা সাঈদীর কোনো ক্ষতি করে ফেলেন তবে কোন নিরাপত্তা বেষ্টনীতে নিজেকে লুকাবেন হাসিনা?

হাসিনা খুব ভালো করেই জানেন, ধর্মীয় অনুভূতির চেয়ে মানুষের আর বড় কোনো অনুভূতি নেই। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ায় তার একমাত্র আদর্শ ইন্দিরা গান্ধীকে খুব করুণভাবে শিখ নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে মরতে হয়েছে।

তিনি এও জানেন, আল্লামা সাঈদী সম্পূর্ণ নিরপরাধ। এই আল্লামা সাঈদীকে নিজের প্রাণের চেয়ে হাজার কোটিগুণ বেশি ভালোবাসে এ দেশের লাখো-কোটি জনতা। শুধু দেশেই নয়, মাওলানা সাঈদী এতোটাই আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন যে, বহির্বিশ্বেও তার জনপ্রিয়তা ঈর্ষণীয়। তার কোনো ক্ষতি করে ‘র’ এর শক্তিশালী নিরাপত্তা বেষ্টনীতে নিজেকে কিংবা নিজের পরিবারকে অক্ষত রাখতে পারবেন হাসিনা?

আমরা চাই এদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা শেখ মুজিবের পরিবারের শেষ প্রদীপটুকু হলেও হাসিনা-সজীবদের মাধ্যমে জ্বলুক। কিন্তু কুখ্যাত ‘র’ এর পরামর্শে সেই আলোটুকুও নিভিয়ে দেওয়ার কাজ করছেন না তো বঙ্গবন্ধু থেকে ‘বাংলার ফেরআউন’ উপাধি পাওয়া মুজিব তনয়া হাসিনা?

বিষয়: বিবিধ

১৬৭৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File