নারী মুক্তি
লিখেছেন লিখেছেন বান্দা ০৩ এপ্রিল, ২০১৫, ১০:০১:১৫ রাত
অফিস না করে যদি মেয়েরা স্বেচ্ছায় বাসায় থাকতে চায়, তাহলে কি বলব তারা অত্যাচারিত? তাদের ক্ষমতায়ন করতে হবে? পুঁজিবাদী চিন্তার ধারকরা পাল্টা প্রশ্ন করতে পারেন যে, সেসব মেয়েদের ব্রেইনওয়াশ করা হয়েছে ছোট বেলা থেকেই। ইসলামী চিন্তার একজন হয়ে যদি এর উত্তরে বলি - আর সেসব মেয়েদের ক্ষেত্রে কি বলব যারা সর্বদা ঘরের বাইরেই থাকতে/খেলতে চান? তারাও কি ব্রেইনওয়াশড না আমাদের চোখে? মানুষ জীবন চালায় নিজে যে চিন্তা বহন করে সেটার ভিত্তিতে। তাই সেই চিন্তার মূলে যাওয়া উচিত। পুতুল দিয়ে না খেলে রাস্তায় ক্রিকেট খেলার ভেতরেই কি “নারী মুক্তি” রয়েছে নাকি নেই এসব হল খুবই অগভীর এবং মানুষের ওয়ার্ল্ডভিউয়ের (জীবনদর্শন বা আকিদা) শাখা প্রশাখার আলোচনা; কোন মৌলিক আলোচনা না যেখানে *নারী মুক্তির* জন্য প্রয়োজন মৌলিক চিন্তা। মৌলিক আলোচনার অংশ হচ্ছে এই প্রশ্ন করা যে, “খারাপ আর ভাল কে নির্ধারণ করবে?” অর্থাৎ “মোরালিটি সাবজেক্টিভ নাকি অবজেক্টিভ?”।
তাই একটি মেয়ে যদি মনে করে আমার ভাল-খারাপ সামগ্রিকভাবে আমি বুঝতে সক্ষম না কারন মানুষ একটি সীমাবদ্ধ জীব এবং এই কারনে নিজের সৌন্দর্য প্রকাশের ক্ষেত্রে সে একটি একান্তই ব্যক্তিগত পরিমণ্ডল তৈরি করে নেয়, তাহলে সে নির্যাতিত না, তার জন্য *নারী মুক্তি*-র দরকার নেই; এটা তার র্যাশনাল জাজমেন্ট। কিন্তু যে মেয়ে মনে করল সীমাবদ্ধ জীব হওয়া সত্ত্বেও সে তার ভাল-খারাপের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারে এবং সে কারনেই সে কোন অবজেক্টিভ আইনের ধারধারি না, তাহলে সে অবশ্যই নির্যাতিত এবং তার *মুক্তির* প্রয়োজন আছে (কারন তার মনের অজান্তেই হয়ত অন্য কেউ তাকে ব্যবহার করছে, যেমন বর্তমান কউন্সিউমার জগত)। এছাড়াও, সে র্যাশনাল জীব হয়েও যেহেতু র্যাশনালিটির প্রয়োগ করছে না, সেহেতু সে মেয়ের কাছে এরুপ বিষয় গুলো হয়ে দাড়ায় “সাবজেক্টিভ” অর্থাৎ ব্যক্তি টু ব্যক্তি বিষয়গুলো ভ্যারি করে। এবং এখানেই রয়েছে শুভঙ্করের মহা ফাঁকি কারন “মোরালিটি” কে সাবজেক্টিভ বলে ফেললে আপনি সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করবেন এবং সমাজকে সুশৃঙ্খলভাবে কোন ছাতার নীচে আনতে পারবেন না self-contradiction এর কারনে। তখন সাব্জেক্টিভিটিতে বিশ্বাসী হওয়ায় মেয়েটির চোখে অর্ধ উলঙ্গ হয়ে রাস্তায় বের হওয়াটা হবে তৃপ্তিদায়ক আর আরেকজন হায়েনার মতো ছেলের কাছেও মেয়েটিকে টিজ বা ধর্ষণ করাটাও হবে আনন্দজনক। আপনি যদি বলেন মেয়েটার স্বাধীনতা ছেলেটা খর্ব করেছে, তখনই কিন্তু আপনার “সাবজেক্টিভ মোরালিটি”-র চিন্তাকে আপনি নিজেই বাতিল করছেন, আপনি বিষয়টিকে অবজেক্টিভ বানিয়ে ফেলছেন। চিন্তার এই ফ্যালাসিকে বলা হয় contradictio in adjecto ( বা self-refuting idea)।
বিষয়: বিবিধ
১৪২৩ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন