হিজাব
লিখেছেন লিখেছেন বান্দা ২৮ মার্চ, ২০১৫, ১২:৩৯:০৯ দুপুর
বর্তমান সময়ে খুবই ফ্যাশনেবল ভাবে কিছু বোন হিজাব পরেন। খুব ফিটিং জিলবাব পরেন অনেকে, অনেকে আবার পরেন শুধু মাথায় পট্টি, অনেকে আবার হিজাব পারফেক্টলি পরেন কিন্তু এতো ড্যাজলিং হিজাব পরেন যা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এই তিন প্রকারই হারাম; শেষের প্রকারটা হারাম কারন একে শরিয়ার ভাষায় বলে "তাবাররুজ" যা অযাচিত ভাবে অন্যের দৃষ্টি হিজাবী মহিলাদের দিকে নিয়ে আসে।
বিষয়টা নিয়ে এক বড় ভাইয়ের একটা স্ট্যাটাস পড়ছিলাম, উনি রাস্তায় একজনকে দেখলেন স্লিভ লেস বুরখা পরতে! উনি সমালোচনা করায় কিছু বিতর্ক ওনার ওয়ালে শুরু হয়ে গেল। বিতর্ক গুলোর ভেতর থেকে একটি যুক্তি ও একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে চিন্তা করছি আমার ওয়ালেই মন্তব্য করি কারন সাধারণ অনেকের একই ধারণা আছে।
একটি কমন যুক্তিঃ "আমাদের চটজলদি অন্যকে জাজ বা বিচার করা উচিত না" (অর্থাৎ সরাসরি শরিয়াহর হুকুম লঙ্ঘন কেউ করলেও আমাদের সেই একশনের ব্যাপারে কিছু বলা উচিত না কারন তার মনে কি আছে আমরা জানি না)।
উত্তরঃ আমরা মন নিয়ে প্রশ্ন করছি না। আল্লাহতে (সু) বিশ্বাসী মানুষও ফাসেক (পাপী) হতে পারে। আমরা প্রশ্ন করছি তার কাজ নিয়ে। উমার (রা) খলিফা থাকাকালীন সময়ে একবার বলেছিলেন, "এখন আর ওয়াহি নাযিল হয় না [যেহেতু রাসুলুল্লাহ (সা) নাই]। তাই এখন আমরা তোমাদের জবাবদিহি করব তোমাদের কুকর্ম দেখে। আর যারাই খারাপ কাজ করবা আমরা তাদের বিশ্বাস করব না যতই না ভাল হউক তাদের নিয়ত" [বুখারি]। কোন কোম্পানিতে চাকরি করার সময় কোম্পানির নিয়ম ভেঙ্গে যদি প্রশাসন কে বলেন "আমাদের কে জাজ করবেন না কারন আমাদের মনে কি আছে আপনারা জানেন না" তাহলে কথাটা যেরকম হাস্যকর শোনাবে আল্লাহ্র আইনের খেত্রে কি কারনে এই র্যাশনাল থিঙ্কিং স্থান পাবে না?!
একটি ভুল চিন্তাঃ "হিজাব মানে ঢেকে রাখা **যাতে** কেউ আকৃষ্ট না হয়"
উত্তরঃ এই ভুল ধারণা অনেকেই রাখেন, মনে করেন হিজাব পরার *কারন* আছে। কারন বা cause কে ইসলামী আইনের ভাষায় বলে "ইল্লাহ"। অনেকেই তাই মনে করেন যেহেতু কেউ আকৃষ্ট না হওয়াটাই বা অন্য ভাষায় যদি বলি "মোডেস্টি" হল হিজাবের শার'ঈ ইল্লাহ (আইনী কারন), তাই মোডেস্ট কাপড় পরলেই চলবে (ফুল হিজাব করা লাগে না)।
এটা জেনে নেয়া ভাল হুকুম শরিয়ায় ৩টি বিষয়ে কোন ইল্লাহ নেইঃ ১- 'ইবাদাত (সালাত, রোযা ইত্যাদি), ২- মাকুলাত বা খাবার (অর্থাৎ, উদাহরণস্বরূপ, আল্লাহ্ কি কারনে শূকরের মাংস হারাম করেছেন) এবং ৩- মালবুসাত (কাপড়)। তাই হিজাব এর খেত্রেও কোন "ইল্লাহ" নেই। অতীতে খুবই সুন্দর দাসী (পশ্চিমা সংজ্ঞার দাসী না কিন্তু) নারীদের হিজাব করা লাগত না (যদিওবা সৌন্দর্যের বিচারে তারা সবাইকে আকৃষ্ট করত) কিন্তু, অন্যদিকে, দেখতে অসুন্দর হাবসি স্বাধীন নারীদের ওপর হিজাব ফরয ছিল (যদিওবা তারা কাউকে আকৃষ্ট করত না)। যদি " আকৃষ্ট না হওয়া" ইল্লাহ হতো তাহলে সেই সময়ের স্বাধীন নারীদের হিজাব করা লাগত না। তাই নিজের আকল (ব্রেইন) ব্যবহার করে ইল্লাহ বের করতে যাওয়া হবে বিপথগামিতা। ইল্লাহ শুধু পাওয়া যায় "মুয়ামালাত" (transactions) এবং "উকুবাত" (শাস্তি)-এর ক্ষেত্রে।
বিষয়: বিবিধ
১৪৫৩ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন