ফিতনাঃ মালহামা থেকে দাজ্জাল
লিখেছেন লিখেছেন কায়সার আহমেদ (কায়েস) ১৭ জুন, ২০১৬, ১০:১৮:২৭ রাত
"মালহামা যুদ্ধ শেষ হয়ে গেল বিশ্ব খুব ছোট হয়ে এসেছে। কয়েকবছর আগেও ৭৭০ কোটি মানুষ ছিল এখন দূর দূর পর্যন্ত মানুষ চোখে পরেনা। শুধু ধ্বংসলীলা। ঘর বাড়ি, অফিস-আদালত, শপিংমল সকল স্থাপনাই ধুলো বালি হয়ে একাকার হয়েগেছে। কোন শহর টিকে নেই সব ধ্বংস হয়ে গেছে গ্রামের একই অবস্থা। এই ছোট বিশ্বের শাসনভার এখন ইসরাইলের হাতে, সিংহ-বাঘের লড়ায়ে উভয়ে এখন মৃত প্রায় অবস্থায় তাই ধৃত শিয়াল এখন জঙ্গলের রাজা হয়ে বসে আছে। একদিন জেরুজালেমে এক লোক দেখা গেল সবাই তাকে খুব সম্মান করছে ভদ্রলোক মাঝারী গড়নের তবে শক্ত দেহের অধিকারী, চুল গুলো দু কানের পাশে ঝুলছে অর্থডক্স ইয়াহুদিদের মত। মাথায় কালো উচু টুপি। ডান চোখে পুরোপুরি অন্ধ। বড় ললাট। সেখানে জ্বল জ্বল করে স্পষ্ট লেখা আছে 'কাফির'। ইসরাইলের এর পরের শাসক হতে যাচ্ছেন তিনি এটা প্রায় নিশ্চিত। ভদ্রলোকের অনেক ক্ষমতা অজস্র প্রাকৃতিক বিষয় এখন তার ইচ্ছাধীন। তাকে মান্য করলে তাকে সে তার জান্নাতে জায়গা দেই আর শত্রুতা করলে তাকে দোযখের আগুনে নিক্ষেপ করে।"
উপরিউক্ত ব্যক্তিটি কে? এমন কোণ মুসলিম নেই যে এর উত্তর দিতে পারবে না। সবাই বলবে সে হল মহাফিতনা দাজ্জাল। খুব সহজেই চিনে ফেলা যায়। অন্যদিকে দাজ্জালের সাথে যে যুবকের সাক্ষাত হবে সেও মৃত্যুর পরে আবার জেগে বলবে 'এখন আমি নিশ্চিত তুই কানা দাজ্জাল।' তবে সমস্যা হল আমরা তো খুব সহজেই নিশ্চিত ব্যক্তিটি দাজ্জাল কিন্তু যুবক নিশ্চিত হল আমাদেরও পরে। আর আমরা এও জানি রাসুল সা ও সাইয়্যাদ কে নির্দিষ্ট করে দাজ্জাল বলে সাব্যস্ত করেননি উনিও সে দাজ্জাল কিনা সন্দেহের মধ্যেই ছিলেন বিঁধায় উমার রা কে তাকে হত্যা করা থেকে বিরত রাখলেন।
ফিতনা হল পরীক্ষা যেমন, নফসের অনৈতিক চাহিদা, লোভনীয় বস্তু, যুদ্ধ, নারী, দাজ্জাল ইত্যাদি। এই সব কিছু হল এক একটি করে ফিতনা বা পরীক্ষা আল্লাহ আমাদের ইমান কে যাচাই করেন এই সকল ফিতনার মাধ্যমে।
আলিফ লাম মীম। মানুষ কি মনে করে, 'আমরা ঈমান এনেছি' বললেই ওদের ফিতনা (পরীক্ষা) ছাড়াই ছেড়ে দেওয়া হবে? ওদের পূর্ববর্তীদেরকেও পরীক্ষা করা হয়েছিলো। অবশ্যই আল্লাহ্ স্পষ্ট করে দেবেন কারা সত্যবাদী ও কারা মিথ্যাবাদী। –(সূরা আনকাবুত ২৯:১-৩)
সাধারন ভাবে আমরা ফিতনা কে সহজেই চিনতে পারি যেমন রাসুল সা বলেছেন, পুরুষজাতির জন্য নারী হল বড় ফিতনা। তাই আমরা নারী কে ফিতনা হিসেবে চিহ্নিত করে বেচে থাকার চেষ্টা করি চোখের হেফাজত করি। অর্থাৎ নারী হল স্পষ্ট ফিতনা। আবার ভ্রাতৃযুদ্ধ হল স্পষ্ট ফিতনা কিন্তু এখানে কে সঠিক সহজে বুঝা যায় না তাই এমন হতে পারে এক ব্যক্তি আল্লাহর জন্য নিজের জান কে কুরবান করতেছে কিন্তু সে ভুল দলে ছিল। সিরিয়ার মানুষের অবস্থা দেখলে এমনটা স্পষ্ট হবে সাধারন জনগন কি করবে তারা নিজেরাও জানে না। ইসলামিক ওয়ে কোনটা ভালো হবে সেটাও তাদের কাছে স্পষ্ট নয়।
ফিতনার মধ্যে সব চেয়ে বড় ফিতনা হল দাজ্জাল। রাসূল (সা) বলেছেন আদম (আ) থেকে শুরু করে কিয়ামত পর্যন্ত সব চেয়ে বড় ফিতনা হল দাজ্জাল। এটা হল কিছুটা স্পস্ট আর বেশির ভাগই অস্পষ্ট ফিতনা। অনেক কঠিন চিহ্নিত করতে পারা। কারন দাজ্জাল ব্যক্তি, নাম, গুণাবলী, কর্ম এর অনেক কিছুই হাদিসেও স্পষ্ট করে দেয়া হয়নি তাই আমরা বাস্তবতা থেকে দূরে আছে এমন হাদিস দেখি, যেমন গাধায় চড়ে উড়ে বেড়ানো বা এক বছর হবে একদিনের সমান, সহকারি জাসসাসার বিবরন, এইগুলো বাস্তবতার বাহিরে তাই একাধিক ব্যাখ্যা করা যায়।
আমরা যেভাবে চিন্তা করছি দাজ্জাল প্রকাশ পেলে আমরা খুব সহজেই চিনে নিব আর তার থেকে বেঁচে থাকবো এমন হলে তো তাকে এত বড় ফিতনাই বলা হত না। তাই দাজ্জাল বের হয়েছে এটা শুনলেই তাকে দেখে পরিক্ষা না করে পাহাড়ে বা অন্যত্র পালিয়ে যেতে হবে। কিছু কিছু ভাইরা বলেন দাজ্জাল নিয়ে এত ভেবে লাভ কি অনেক দেরি হাজার বছর লাগবে আরো তার প্রকাশে, আবার বলেন বের হলে তো বুঝবই!
আর কত দিন ঘুমিয়ে থাকবো, আল্লাহু আলাম
বিষয়: বিবিধ
৩০৪৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাযাকাল্লাহ খাইর
মন্তব্য করতে লগইন করুন