দাজ্জালের মহা ফিতনা ও বর্তমান বিশ্বঃ পর্ব-১১ (নারী সম্প্রদায়কে বিকারগ্রস্ত করে এক নির্লজ্জ সমাজ কায়েম করা)
লিখেছেন লিখেছেন কায়সার আহমেদ (কায়েস) ১৪ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৯:৫৭:৩৩ রাত
দাজ্জালিয়াত ৩ - নারী সম্প্রদায়কে বিকারগ্রস্ত করে এক নির্লজ্জ সমাজ কায়েম করা
দাজ্জালি সিস্টেমের উদ্দেশ্যই হল আল্লাহ্র বিধানের অবজ্ঞা করে একদম বিপরিত বিধানে আমাদেরকে জড়িয়ে দেয়া। ইসলামিক ভাবে যুগ যুগ ধরে প্রতিষ্ঠিত সত্য কে ভেঙ্গে দিয়ে ধর্মের একদম বিপরীত একটা ব্যবস্থা কায়েম করা হল দাজ্জালের একটা প্রতারনা। রাষ্ট্র ও অর্থ ব্যবস্থা আমাদের এতটা ক্ষতি করেনি যতটা করছে তথা কথিত নারী স্বাধীনতা ও নারীবাদীতা। রাষ্ট্র ও অর্থ কাঠামো মানুষকে প্রভাবিত করে মানসিক দাসত্বে বন্দি করতে পারে না। কিন্তু এই নারী ক্ষমতায়নের প্রচার প্রসার সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে নৈতিকতা, মূল্যবোধ, ধর্মীয় অনুশোচনাবোধ, বিনম্রতা, ভদ্রতা, লজ্জাবোধ সহ সবকিছু কে প্রভাবিত করে সমাজে মূলভিত্তিকেই ধ্বংস করে দিয়েছে।
ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লবের সময় অনেক শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় এতে দেশে থাকা তাদের ভাষায় ঘরের চাকরানী (নারীদেরকে) ঘর থেকে বের করে কে অপেক্ষাকৃত কম কায়িক শ্রমের (বিশেষ করে ট্যাক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্পে) কাজে লাগিয়ে সেই চাহিদা পূরণ করা হয়। আর এই ভাবেই মনোভাব জেগে ওঠে যে নারীদের ক্ষমতায়ন করে দেশের উন্নতির জন্য ব্যবহার করা উচিত। A country cannot progress if half its population is enslaved in the kitchen (একটি দেশ উন্নত হতে পারে না যদি তাদের অর্ধেক জনগন রান্নাঘরে দাসী হয়ে আঁটকে থাকে) তবে ঘরে শাহজাদি হালতে থাকা নারীরা কেন ঘর থেকে বের হয়ে কাজ করবে? তাই সেমিনার, শিক্ষা, আন্দোলন ইত্যাদির মাধ্যমে মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে যে নারীরা পরাধীন চাই স্বাধীনতা, সমতা। ফলে নারী ক্ষমতায়নের নামে হয়ে গেল ফেমিনিস্ট বিপ্লব আর একের পর এক আন্দোলন তারপর থেকে লেগেই আছে।
আমেরিকায় ১৯৬০ সালের দিকে হল Sexual Revolution আর সর্বশেষে এখন হচ্ছে Free the nipple Movement যা এখন ৫০ টার ও বেশি দেশে ছড়িয়ে পরেছে, নারীরা এখন সমধিকার চায় রাস্তায় পুরুষ যেভাবে খালি গায়ে হাটতে পারে ঠিক তেমনি নারীরাও শরীরের উপরিভাগ খোলা রেখে নির্দ্বিধায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে পারবে তার জন্য এই আন্দোলন হচ্ছে। তাই হাজারো নারী উপরিভাগ (Top less)উলঙ্গ হয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে। যেন একঝাক পশুর পাল, পশুরা যেমন উলঙ্গ হয়ে থাকে ঠিক তেমন তবে বেচারা পশুরা সভ্যতা বহির্ভূত, আর এই সকল মানুষেরা আধুনিক সভ্যতায় সজ্জিত।
যাইহোক নারী ক্ষমতায়নকে প্রমোট করতে বিভিন্ন কনফেরেন্স হয়েছে ও হচ্ছে যেমন বেইজিং+, সোশ্যাল ইঞ্জেনিয়ারিং প্রোগ্রাম ইত্যাদি আর সেই গুলোতে বিভিন্ন উদ্যোগ বিভিন্ন সময়ে নেয়া হয়েছে যেমন সমকামীতাকে স্বাভাবিক ভাবে নিতে হবে অস্বাভাবিক বা অসামাজিক চিন্তা করা যাবে না, স্ত্রীর অনিচ্ছায় স্বামী যদি তাকে বিছানায় নিয়ে যায় তবে সেটাকে বৈবাহিক ধর্ষণ/যেনাহ (Marital Rape) বলা হবে। সংসারে কাজের জন্য নারীর বেতন চাওয়ার অধিকার আছে, একজন পুরুষ তার শরীরের শক্তি ব্যবহার করে উপার্জন করে তেমনি নারী শরীর কে ব্যবহার করে আয় করতে পারে তাই এদের কে পতিতা/বেশ্যা (Prostitutes) না বলে সম্মানিত যৌনকর্মী (Sex Worker) বলতে হবে, উত্তরাধিকার ও তালাক এ সমান অধিকার থাকতে হবে ইত্যাদি আর সর্ব শেষে যদি কোন দেশ এইগুলো কার্যকরের বিরোধীতা করে তবে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
“দাজ্জালের দলে সবচেয়ে শেষে যারা শামিল হবে তারা হলো নারীরা; অবস্থা এমন হবে যে পুরুষ তার মা, মেয়ে, বোন এবং খালাকে বেঁধে রাখতে বাধ্য হবে যাতে তারা বের হয়ে তার কাছে না যেতে পারে”
“দাজ্জালের অধিকাংশ অনুসারী হবে ইয়াহুদী ও নারীরা”
(কানযুল উম্মাল, ৭ম খণ্ড, হাদীস নং ২১১৬ ও ২১১৪, মু’জামে তাবরানিঃ ২৪/১৬৯- মাকতাবায়ে শামেলা)
দাজ্জাল থেকে মেয়েরা এতটা প্রভাবিত কেন বা কিভাবে হবে যে পুরুষরা বাধ্য হয়ে তাদের বেঁধে রাখবে? স্পষ্টত ভাবে একটাই কারন তা হলো, তাদের ব্রেইন ওয়াস করা হবে, নারীদের মগজ সম্পূর্ণ ধোলাই হয়ে গেছে তাই আমরা তাদের যতই বুঝবো তারা বুঝবেই না। রমরমা মেডিয়া, ফ্যাশন, শিক্ষা আর সর্বপরি নারী স্বাধীনতার আন্দোলন তাদের মগজ ধোলাই করে দিয়েছে। তাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে চল আইডল, ডান্স এইগুলোতে অংশগ্রহণ করি, হিজাব বাদ দেই, আবেদনময়ী হয়ে ওঠি ইত্যাদি। এই আধুনিক পশ্চিমা নারীবাদী আন্দোলন ১০০ বছর ধরে নারীদের মগজ ধোলাই করে যাচ্ছে, মেয়েদের সাধারণ চিন্তা করার ক্ষমতাকেও কেড়ে নিয়েছে। আমরা পূর্বেই বলেছি যে দাজ্জালই হল এই আধুনিক পশ্চিমা সভ্যতার (মাস্টার মাইন্ড) পরিকল্পনাকারী।
মাশাআল্লাহ আমাদের অনেক বোনদেরকে দাজ্জাল এখনো প্রভাবিত করতে পারেনি, তারা নিজের হিজাব কে বর্জন করেনি আর ইনশাআল্লাহ্ করবেও না।
চলবে.......
------“আল্লাহুম্মা আরেনি আল আশ’ইয়া'আ কামা হিয়া” (হে আল্লাহ আমাদের প্রত্যেক জিনিসের আসল রূপ দেখাও যাতে বাহিরটা দেখে প্রতারিত না হই
বিষয়: বিবিধ
২৬৩৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনি অলমোস্ট সবগুলো দিকই টাচ্ করেছেন লিখাটায় - তারপর ও মনে হয়েছে যবনিকাটি হুট করে হয়ে গেছে।
বিষয়গুলো এতটাই বিস্তৃত ও জটিল এবং এমন সুক্ষভাবে সমাজে প্রতিস্থাপিত হয়েছে যে - বেশীর ভাগ মানুষের ই মাথায় এটা ডুকছে না - ডুকবে না। আবার সহজ সরল করে উপস্থাপনা করা ও কষ্টসাধ্য, পাঠকের মনোযোগ রক্ষা ও কঠিন।
আমি কখনো কখনো ভাবি দেশে ফিরে সারা দেশময় ৫দিন ব্যাপী ইমাম ও আলেম দের নিয়ে সেমিনার করে বেড়াই। কিন্তু পরমূহুর্তে মনে হয় যেখানে হাদীস বলছে প্রতি ১০০০ এ ৯৯৯ জন (ইয়াজুজ মাজুজ) তাদের আবাস দোযখ এ স্থির করেছে - সেখানে কে শুনবে কার কথা।
এ্যানীওয়ে তারপর ও চেষ্টা করা উচিত। আপনি সে চেষ্টা করছেন - আপনার পরিশ্রম আল্লাহ কবুল করুন।
জি ঠিক বলেছেন। জাজাকাল্লাহ ভাই
মন্তব্য করতে লগইন করুন