দাজ্জালের মহা ফিতনা ও বর্তমান বিশ্বঃ পর্ব-৭
লিখেছেন লিখেছেন কায়সার আহমেদ (কায়েস) ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:৩৯:৫৭ রাত
বিংশ শতাব্দী তে আমরা প্রত্যক্ষ করি কিভাবে মুসলিম দেশ গুলো অভিন্ন ধর্ম থাকা সত্ত্বেও জাতি, ভাষা, সংস্কৃতি ও জাতিয়তাবাদেরর নামে ৫৭ টা ভাগে ভাগ হয়ে যায়। আর তার আগে আমরা দেখেছি এক এক মুসলিম দেশ কে কিভাবে ইউরোপীয় শক্তিরা দখল করে কোলনী বানায়েছিল যেন তারা সবাই একে উপরকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছিল, রাসুল (সা) ইরশাদ করেছিলেন-
আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত,রাসুল (সা.) বলেছেন,‘শীঘ্রই মানুষ তোমাদেরকে আক্রমন করার জন্য আহবান করতে থাকবে,যেভাবে মানুষ তাদের সাথে খাবার খাওয়ার জন্য একে-অন্যকে আহবান করে।’ জিজ্ঞেস করা হলো,‘তখন কি আমরা সংখ্যায় কম হবো?’ তিনি বললেন,‘না,বরং তোমরা সংখ্যায় হবে অগণিত কিন্তু তোমরা সমুদ্রের ফেনার মতো হবে,যাকে সহজেই সামুদ্রিক স্রোত বয়ে নিয়ে যায় এবং আল্লাহ তোমাদের শত্রুর অন্তর থেকে তোমাদের ভয় দূর করে দিবেন এবং তোমাদের অন্তরে আল-ওয়াহ্হান ঢুকিয়ে দিবেন।’ জিজ্ঞেস করা হলো,‘হেআল্লাহর রাসুল (সা.),আল–ওয়াহ্হান কি?’ তিনি বললেন,‘দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা এবং মৃত্যুকে অপছন্দ করা।’ (মুসনাদে আহমদ,খন্ডঃ ১৪,হাদিস নম্বরঃ ৮৭১৩)(সুনানে আবু দাউদ)
এভাবেই আমরা বিংশ শতাব্দী দেখেছিলাম কি ভাবে কাফির রা মুসলিম ভূখণ্ড গুলোকে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেই। সাইকস-পিকোট চুক্তি মাধ্যমে উসমানীয় খেলাফত কে টুকরো টুকরো করে দেই আর একইভাবে আলজেরিয়া ফ্রান্সের কাছে, লিবিয়া ইটালির কাছে, মিসর ও সুদান, সিরিয়া ইংল্যান্ডের কাছে, তিউনেসিয়া মরক্কো স্পেন এর কাছে পরাধীণ ছিল, আর এখন তো তারা ন্যাটো (NATO)এর পতকার তলে এক সাথে মিলিত হয়ে মুসলিম দেশ গুলো কে শাসাচ্ছে। লিবিয়া, ইয়ামান, আফগানিস্তান, মরক্কো, সোমালিয়া, নাইজেরিয়া, ইরাক প্রভৃতি দেশ কে সেই হাদিসে উল্লেখিত ভাবে কাফিররা মিলিত হয়ে একে অপরকে আমন্ত্রন করে আক্রমন করছে। আর আমরা মুসলিমরা সমুদ্রের ফেনার মত (শুধু রোহিঙ্গা) নয় পুরো ১৬০ কোটি মুসলিমরা ঘুরে বেড়াচ্ছি।
দাজ্জালিয়াত ২- সম্পদ কুক্ষিগত করে সকল কে দাসে পরিনত করা--
বিশ্বের শাসন করতে হলে অর্থনৈতিক ভাবে অবশ্যই জবরদখল রাখতে হবে, তাই সকলের সম্পদ ও সময় (মুল্য) কে নিজের দখলে আনার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করা যেখানে সকলে বাধ্য হয়ে জড়িয়ে যাবে আর সময় অতিবাহিতের সাথে সাথে সেই ব্যবস্থা অন্যের সম্পদ ও সময় হ্রাস করে দাজ্জালী শক্তির হাতে তুলে দেবে।
আর এই ব্যবস্থা হল আন্তর্জাতিক মুদ্রা ব্যবস্থা (International Monetary system), যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখ যোগ্য হল কাগুজে মুদ্রা (Paper Money)। এই কাগুজে মুদ্রা হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা দিনার ও দিরহাম কে (Gold & Silver) ছুড়ে ফেলে (Replace) স্থান দখল করে নিয়েছে।
দিনার ও দিরহামের মুল্য বৈশিষ্ট হল ‘অন্তর্নিহিত মুল্য’ (Intrinsic Value)অর্থাৎ মুদ্রার মুল্য মুদ্রার ভিতরেই ছিল,গোল্ড ও সিলভার এর নিজস্ব একটি মুল্য আছে কিন্তু কাগজের কোন মুল্য নেই। আর এটাই হলো এদের মূল পার্থক্য।
আজ থেকে ১০০ বছর আগেও যদি আমাদের সম্পদ কেউ কেড়ে নিতে চেত তবে তাকে অবশ্যই আমাদের ঘরে বা পকেটে হাত দিতে হত কিন্তু এখন পকেটে হাত না দিয়েই টাকা কেড়ে নেয়া যায়,আর এটা সম্ভব হয়েছে শুধু মাত্র কাগুজে মুদ্রার ফলে,কারন এটার কোন অন্তর্নিহিত মুল্য নেই।
বাবা পরিশ্রম করে ছেলের জন্য ১০ লক্ষ টানা জমিয়ে একটা লকারে রেখেদিয়েছেন আর বলেছেন ১০ বছর পর সে এই টাকা গুলো বের করে নিজের প্রয়োজন মিটাবে,১০ বছর পর যখন ছেলে টাকা বের করলো (লকারে এর আগে কেউ হাত দেইনি তবুও) তখন সে দেখল সেখানে দেখেতে ১০ লক্ষ কিন্তু প্রকৃত ভাবে ৯ লক্ষ টাকা আছে অর্থাৎ ১০ বছর আগে ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে যা কেনা যেত এখন সেটা দিয়ে তা কেনা যাবে না কারন মুদ্রাস্ফীতি (Inflation)’র ফলে মুদ্রার মুল্যমান (Purchasing power) কমে গিয়েছে,তাই ১০ বছর পর সেই টাকার মুল্যমান ৯ লক্ষ হয়ে গেল যদিও তার বাবা ১০ লক্ষ টাকার জন্য ১০ লক্ষ টাকার পরিশ্রম ও সময় ব্যয় করেছিলেন।
....চলবে
(আগামী পর্বে মুদ্রা কি? মুদ্রাস্ফীতি কি? মুদ্রার মুল্যমান কি? দিনার ও দিরাহামের সাথে কাগুজে মুদ্রার পার্থক্য ইত্যাদি তুলে ধরবো ইনশাআল্লাহ্)
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
একজন সম্মানিত নারী। হাদিসে আছে
“দাজ্জালের দলে সবচেয়ে শেষে যারা শামিল হবে তারা হলো নারীরা; অবস্থা এমন হবে যে পুরুষ তার মা, মেয়ে, বোন এবং খালাকে বেঁধে রাখতে বাধ্য হবে যাতে তারা বের হয়ে তার কাছে না যেতে পারে”
জাযাকাল্লাহু খাইর
মন্তব্য করতে লগইন করুন