দাজ্জালের মহা ফিতনা ও বর্তমান বিশ্বঃ পর্ব-৬ (গনতন্ত্র হল দাজ্জালের তৈরি কুফরি সিস্টেম)
লিখেছেন লিখেছেন কায়সার আহমেদ (কায়েস) ২৪ মে, ২০১৫, ০৬:৩০:০৫ সন্ধ্যা
৫ম পর্বে পৃথিবীর কিছু রহস্যময় রূপান্তর (Mysterious Transformation) নিয়ে আলোচনা করেছিলাম আর এই পরিবর্তনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল পুরো বিশ্বে প্রায় একই রকম রাষ্ট্রব্যবস্থা, কোথাও হল সমাজবাদ, কোথাও সাম্যবাদ অথবা পুঁজিবাদ বা আধুনিক গনতান্ত্রিক ব্যবস্থা কিন্তু সকল ব্যবস্থাতেই একটি জিনিষ মিল আছে সেটা হল মানুষের শাসন অর্থাৎ শাসন পরিচালনা হবে মানুষের নিয়মে যদি সেটা স্রষ্টার নিয়মের বিপরিত হয় তবুও।
আমরা ৪র্থ পর্বে বলেছিলাম অতিতে মানুষ কখনো আল্লাহকে অস্বীকার করেনি তবে শিরক করেছে। কিন্ত বর্তমানে এক অদ্ভুত উপায়ে আল্লাহর আইন কে তোয়াক্কা করে নিজের মত করে রাষ্ট্র পরিচালনা করে সকল মানুষ রাষ্ট্রীয়ভাবে আল্লাহ কে অস্বীকার করছে আর ব্যক্তিগত ভাবে শিরক করছে, কিন্ত অতিতে শিরক হত কোন বুস্তু বা মানুষ কে স্রষ্টার মর্যাদা দিয়ে আর বর্তমানে পরোক্ষ ভাবে জনগন নিজেকেই স্রষ্টার মর্যাদা দিচ্ছে। ফলে মানুষ নিজেই নিজের রব হয়ে গেছে। যেহেতু এখন সকল রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত ও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে তাই আমরা এখানে শুধু গনতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা নিয়েই আলোচনা করবো।
গনতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার সংজ্ঞা
গনতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা হলো এমন শাসনব্যবস্থা যেখানে সর্বচ্চো শাসনক্ষমতা হলো জনগনের এবং জনগনের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে আইন প্রণয় করে রাষ্ট্র পরিচালনা করা হয়। আর তাই সহজে বলা হয় জনগনের শাসন জনগণের জন্য জনগনেরই দ্বারা।
গনতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা আল্লাহকে অস্বীকার করে
রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার আধুনিক কোন মতবাদ আল্লাহ কে মানে না। গণতন্ত্র আল্লাহর অস্তিত্ব সম্পর্কে নীরব থেকে, জনগণকেই আল্লাহর আসনে বসিয়ে দিয়েছে। আর ঠিক তাই গণতন্ত্রের সর্বচ্চো শাসনক্ষমতা হলো জনগনের, স্রষ্টার নই। অথচ ইতিহাসে সকল সময়ে এই সর্বচ্চো শাসনক্ষমতা ছিল স্রষ্টার, হতে পারে তা মহান আল্লাহর অথবা কোন মিথ্যা শিরকি দেবতার। যেমনঃ মুসলিম সমাজে আল্লাহ ছিলেন সর্বচ্চো শাসনক্ষমতার অধিকারী তাই যুগেযুগে আল্লাহর ওহী’ই ছিল আইনের প্রধান উৎস, আবার হিন্দু সমাজে তাদের ধর্মই হলো আইন, রোমান সাম্রাজ্যে খ্রিষ্টানদের, বা আকবরের সময় হিন্দু-মুসলিম ধর্ম মিলিয়ে অর্থাৎ সকল সময় মানুষ নিজেকে নই স্রষ্টাকেই সর্বচ্চো শাসনক্ষমতার অধিকারী মনে করে স্রষ্টার আইনকেই মূল আইন মনে করেছে।
আর বর্তমানে সকল মানুষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীরের একটা অংশ হওয়ার কারনে রাষ্ট্রীয় ভাবে মানুষ আল্লাহকে অস্বীকার করছে।
গনতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় আল্লাহর সাথে শিরক করা
যারা আল্লাহ কে মানে ব্যক্তিগত ভাবে তারা শিরকে জড়িয়ে পরছে। গণতন্ত্র বলে “জনগন সকল ক্ষমতার মালিক’’। সার্বভৌমত্ব হল জনগণের আল্লাহর নয় । আর আল্লাহ বলেছেন-
إِنَّ اللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
“নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান” [সূরা বাকারা ০২:১০৯]
আবার গণতন্ত্রে জনগনের ক্ষমতা আছে তারা চাইলে যা ইচ্ছা (সুদ, মদ, যিনাহ, সহশিক্ষা ইত্যাদিকে) বৈধ বা (দাঁড়ী, টুপি, ইসলামিক বই, আল্লাহর আইন, মাইকে আযান ইত্যাদিকে) অবৈধ বানাতে পারে অর্থাৎ হালাল কে হারাম অথবা হারাম কে হালাল বানানোর অধিকারও জনগনের আছে। এবং জনগণই এখন তাদের খেয়াল খুশি তে নির্ধারণ করে কি করতে হবে, কুরআন সুন্নাহর ভিত্তিতে নয়। অথচ আল্লাহ বলেছেন-
إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ
“আল্লাহ ছাড়া কারও বিধান দেবার ক্ষমতা নেই’’ [সূরা ইউসুফ ১২:৪০]
“যারা আল্লাহর বিধান অনুসারে বিধান দেয় না তারাই কাফের”। [সূরা মায়িদা : ৪৪]
আল্লাহ হলেন আল-হাকাম। কিন্তু এখন জনগন বলছে না আমাদেরও বিধান দেওয়ার ক্ষমতা আছে। অর্থাৎ গণতন্ত্রে মানুষ হলো আল্লাহর সমান (নাউযুবিল্লাহ)
রাসূল সা বলেছেন—
“যে ব্যক্তি ধারণা করবে যে, আল্লাহ তাআলা ‘আমর’ (সংবিধান ও আইন প্রনয়ন)-এর কোন অধিকার বান্দাদের সামান্য দিয়েছেন, তাহলে সে নবীদের উপর আল্লাহর নাযিলকৃত সমস্ত কথাকে অস্বীকার করবে। কেননা আল্লাহ বলেছেন- শোনে রাখো, সৃষ্টি ও নির্দেশ (আইন প্রণয়ন) শুধু আল্লাহ্র।” [তাফসীরে তাবারী খণ্ড ১২ সূরা আরাফ :৫৪]
মানুষ মানুষের রব
বর্তমানে আমরা নিজেদেরই বানানো আইনের মাধ্যমে নিজেদেরই উপাসনা করছি অর্থাৎ মানুষ মানুষের রব-----
তারা তাদের পন্ডিত ও সংসার-বিরাগীদিগকে তাদের পালনকর্তারূপে গ্রহণ করেছে …(সূরা তাওবা-৩১) আল্লাহ্র রাসুল (সাঃ)যখন এই আয়াতটি পড়ছিলেন তখন আদি বিন হাতিম (রাঃ) বলেন “হে আল্লাহ্র রাসুল! তারাতো রাবি এবং আলেমদের উপাসনা করে না।” তখন আল্লাহ্র রাসুল বলেন, “নিশ্চয়ই তারা তা করে। তারা (রাবি এবং আলেমরা) হালালকে হারাম আর হারামকে হালাল বানায় এবং তারা (ইহুদি এবং খ্রিস্টানরা) তাদের অনুসরন করে এবং অনুসরন করেই তারা তাদের উপাসনা করে” (আহমাদ,আত-তিরমিজি এবং ইবন জারির) (তাফসীরে তাবারী খণ্ড ১০ পৃষ্ঠা ১১৪)
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ হলো আল-আকবার আল্লাহ নন
প্রতিটি গণতান্ত্রিক দেশ কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের চার্টারের সাথে একাত্ম প্রকাশ করতে হয়। আর এই Security Council তাদের Article 24 & 25 এ ঘোষণা করে “Security Council has supreme authority in the world in all matters pertaining to international peace and security” অর্থাৎ পৃথিবীতে শান্তি ও নিরাপত্তা কায়েমের জন্য এই Security Council হল সর্বচ্চো ক্ষমতার অধিকারী মানে এখানে তাদের অধিকার আল্লাহর ও তার রাসুল (সা)’র অধিকার থেকেও বেশি । তাহলে আল্লাহ আল আকবার (মহান) নন নিরাপত্তা পরিষদ হল আল আকবার (The Supreme) । এটা সুস্পষ্ট শিরক।
গণতন্ত্রে সকল মানুষ সমান
গণতন্ত্রে জালেম, মজলুম, আলেম, জ্ঞানি-মূর্খ সকলেই সমান। অর্থাৎ মুফতি শফি সাহেবেরও এক ভোট এই অধমের এক ভোট রাস্তার গাঁজাখোরেরও এক ভোট আবার জ্ঞানপাপী বুদ্ধিজীবী আর নাস্তিকদেরও এক ভোট। অথচ আল্লাহ বলেছেন-
قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ
“বলুন, যারা জানে এবং যারা জানে না; তারা কি সমান হতে পারে?” [সূরা যুমার ৩৯:০৯]
সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তি
গণতন্ত্রে যে কোন বিতর্কিত বিষয় মীমাংসা করা হয় সংবিধান ও সংসদ সদেস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে। অথচ আমরা জানি বেশির ভাগ লোকই হলো পথভ্রষ্ট, এরা তাদের মতই আমাদেরকেও বিপথেই নিয়ে যাবে।
আল্লাহ বলেছেন-
وَإِن تُطِعْ أَكْثَرَ مَن فِي الْأَرْضِ يُضِلُّوكَ عَن سَبِيلِ اللَّهِ ۚ إِن يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَإِنْ هُمْ إِلَّا يَخْرُصُونَ
আর যদি আপনি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের কথা মেনে নেন, তবে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করে দেবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমান ভিত্তিক কথাবার্তা বলে থাকে। [সূরা আনআম ০৬:১১৬]
“কোন বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন নির্দেশ দিলে সে বিষয়ে কোন মুমিন পুরষ বা মুমিন নারীর ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে না। যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করবে সে স্পষ্টরূপে পথভ্রষ্ট হবে”। [সূরা আহযাব:৩৬]
একটা উদাহরন—ধরি ২০০১ সালে এক নাইট ক্লাব খুলার জন্য আবেদন করা হল শেষ মেস এটা সংসদে গেল এবং ধরি সেই সময় সংসদের সদস্য মধ্যে আল্লামা সাইদী সাহেব, মুফতি আমিনী সাহেব রহ., শাইখুল হাদিস আজিজুল হক সাহেব রহ. ও পীর সাহেব চরমোনাই’রা আছেন। এখন সংসদে উপস্থাপন করা হল লাইসেন্স দেয়া হবে কিনা, কিন্তু আমাদের এই শ্রদ্ধেয় আলেমরা দারিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা উচ্চ আওয়াজে বলেছেন, এটা হারাম, এটা হারাম। কিন্তু পরিশেষে দেখা গেল ৯০% ভোট পেয়ে সংসদে বৈধতার নতুন আইন পাস হয়ে গেল। এখানে কাদের পরাজয় হয়েছে আলেম সমাজের ? কোন ইসলামিক দলের? নাকি ইসলামের?
আল্লামা ইকবাল রহ. উনার 'যারবে কালাম' বইতে জামুরিয়াত (গণতন্ত্রের) সংজ্ঞায় বলেছেন-
জামুরিয়াত এক তারযে হুকুমাত হায় জিস মে
বান্দো কো গিনা করাতে হায়, তোলা নাহি কারতে
অর্থাৎ গণতন্ত্র হলো এমন একটি শাসন পদ্ধতি যেখানে মানুষদের (সংখ্যা) গোনা হয়, তাদের কে (জ্ঞানের আলোকে) মাপা হয় না
আবার যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতার মত ইসলামের পক্ষেও যাই তবুও সেটা বাস্তবায়ন হবে না। তুর্কীর উদাহরন কি আমাদের কাছে নেই মাত্র একদিনেই সেখানে শারিয়াহ, হিজাব, টুপি, দাঁড়ী, আযান, আরবী ভাষা কে অবৈধ করে দেওয়া হয়ছিল। কিভাবে সম্ভব হয়েছিল এটা? সংখ্যাগরিষ্ঠতা কাদের পক্ষে ছিল কিভাবে এক দিনে মানুষ এতটা ইসলামকে ঘৃণা করলো? নাকি ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে এটা করা হয়েছিল?
মিসরের চেয়ে বড় উদাহরন আর কি হতে পারে ইখওয়ানদের থেকে কে বেশি কুরবানী দিয়েছে, কিন্তু সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে আসা মুরসী (আল্লাহ উনাকে হেফাযত করুন) কে একবছরেই নামিয়ে দিয়ে আজ নির্যাতন করা হচ্ছে। এই গুলো কি এমনি এমনি হচ্ছে নাকি কেউ এর পিছনে বসে কলকাঠি নাড়ছে?
দলাদলী ও দলান্ধতা
গনতান্ত্রিক সিস্টেমে একাধিক দল গুলো থাকায় মানুষদের কে একধিক ভাগে ভাগ করে দেয়। আবার দলীয় ভাবে মানুষ বিভিন্ন মত ও পথ গ্রহন করে দলীয় অন্ধ হয়ে যাই। অথচ আল্লাহ বলেছেন-মুসলিমরা পরস্পরের ভাই ভাই [সূরা হুযুরাত ৪৯:১০]
যেই ক্ষমতাই আসুক সবাই একই রকম
গণতন্ত্র হল একটা আলাদা জীবনাদর্শ
ইসলাম হল একটা পূর্ণাঙ্গ জীবনাদর্শ আর গণতন্ত্র যেহেতু একটা মতবাদ এটাও একটা আলাদা জীবনাদর্শ এখানে সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবনকে কিভাবে পরিচালিত করতে হবে সেটার আলাদা একটা নিয়ম রয়েছে, আর একটা সমাজকে চালিত হতে হয় শুধু মাত্র একটি জীবনব্যবস্থা দিয়ে। সেটা হতে পারে ইসলাম বা অন্যকিছু কিন্ত দুইটা এক সাথে মানা যাবে না। তাই তো ইসলাম ও গণতন্ত্রের সংঘাত কে দুটি জীবনাদর্শের সংঘাত বলা যায়। আর মুসলিমরা কখনো ইসলাম ব্যতিত কোন মতবাদ গ্রহন করতে পারবে না। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন-
إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ
নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম [সূরা ইমরান ৩:১৯]
যারা ইসলাম ছাড়া অন্য কোন জীবনব্যবস্থা চায়,কখনোও তা গ্রহণ করা হবে না [সূরা ইমরান ৩:৮৫]
গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ইসলাম কায়েম
প্রথমত যেহেতু সম্পূর্ণ পদ্ধতিই শিরকে আর কুফুরিতে ভরপুর সেহেতু এটার দ্বারা ইসলাম কায়েম করা কখনো যাবে না। তাই এর মাধ্যমে ইসলাম কায়েম মানে হলো “শিরকের রাস্তায় হেটে ইসলাম আনা”
আর আজ মুসলমানের বেহাল অবস্থা। শুধু আমাদের দেশেই ৫% লোকও নামাজ পরেনা । তবে এরা কিভাবে চাইবে যে এমন আইন আসুক যেখানে নামাজ ছেড়ে দিলে জেল হতে পারে এমনকি এর কারনে মৃত্যুদণ্ড ও হতে পারে।
গণতন্ত্র নিয়ে কিছু বিজ্ঞ আলেমদের অভিমত
হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী রহঃ তাঁর ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা’ নামক গ্রন্থে ‘সিয়াসাতুল মাদীনা‘ নামক অধ্যায়ে লেখেন-“যেহেতু ভিড়ের নাম হল শহর,এ জন্য তাদের সবার রায় সুন্নাত হেফাযতের ব্যপারে ঐক্যবদ্ধ হওয়া অসম্ভব”।
হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী রহঃ বলেন-“মোটকথা,ইসলামে গণতান্ত্রিক শাসন বলে কোন বস্তু নেই….এই অভিনব গণতন্ত্র শুধু মনগড়া ধোঁকা। বিশেষত এমন গণতান্ত্রিক শাসন, যা মুসলিম ও কাফের সদস্য দিয়ে গঠিত। একে অমুসলিম শাসনই বলা হবে”।
মাওলানা ইদ্রিস কান্ধলভী রহঃ বলেন-“ওরা বলে থাকে যে,এটা মজদুর ও সাধারণ মানুষদের হুকুমত। এমন হুকুমত নিঃসন্দেহে কাফিরদের হুকুমত”।
কারী তায়্যিব সাহেব রহঃ বলেন-“গণতন্ত্র আল্লাহ তাআলার কর্তৃত্বের মধ্যেও শির্ক এবং আল্লাহ তাআলার ইলমের মধ্যেও শির্ক”।
মুফতি রশীদ আহমদ লুধিয়ানভী রহঃ বলেন-“এইসব বুঝ পশ্চিমা গণতন্ত্রের খবীস বৃক্ষের ফসল। ইসলামে এই কুফরী ব্যবস্থাপনার কোন অবকাশ নাই“
মাওলানা সাইয়েদ আতাউল মুহসিন বুখারী রহঃ বলেন-“যদি কোন কবরকে মুশকিল আসানকারী মনে করা শির্ক হয়, তাহলে অন্য কোন রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা, ইম্পেরিয়েলিজম, ডেমোক্রেসি, কমিউনিজম, ক্যাপিটালিজম এবং অন্যান্য বাতিল রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে মান্য করা ইসলাম হয় কিভাবে? … কবর সিজদাকারী মুশরিক, পাথর নুড়ি ও বৃক্ষকে মুশকিল আসানকারী মনে করে যে, সে মুশরিক। অথচ গাইরুল্লাহর ব্যবস্থাপনা- বিধিবিধান সংকলন করা, সেটার জন্যে পরিশ্রম করা, সেটা গ্রহণ করা কি তাওহীদ??
মাওলানা শাহ মুহাম্মদ হাকীম আখতার সাহেব রহঃ বলেন-‘যেদিকে ভোট বেশি সেদিকে যাও’- ইসলামে এমন গণতন্ত্র বলতে কিছুই নেই। বরং ইসলামের কামালত হচ্ছে এই যে, সারা দুনিয়া এক দিকে যাবে, কিন্তু মুসলমান আল্লাহরই থেকে যাবে।
শাইখুল হাদীস মাওলানা সলিমুল্লাহ খান দা.বাঃ বলেন-নির্বাচনের মাধ্যমে ইসলাম আনা সম্ভব নয়। গণতন্ত্রের মাধ্যমেও সম্ভব নয়। গনতন্ত্রে বিবেচ্য হল সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়। আর গরিষ্ঠ সংখ্যা থাকে মূর্খ, যারা দ্বীনের গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত নয়। তাদের থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না”।
হযরত মুফতি নিযামুদ্দীন শামেযী শহীদ রহঃ বলেন-দুনিয়াতে আল্লাহর তাআলার দ্বীন ভোটের মাধ্যমে, পশ্চিমা গণতন্ত্রের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হবে না। কেননা এ দুনিয়াতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হচ্ছে আল্লাহর দুশমনদের, ফাসেক ও ফাজেরদের। আর গণতন্ত্র হল মাথা গণনা করার নাম। ওজন করার নাম নয়।দুনিয়াতে ইসলাম যখনই প্রতিষ্ঠিত হবে, তখন সেই এক পন্থায়ই প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটা আল্লাহর নবী সঃ অবলম্বন করেছিলেন। তা হল জিহাদের রাস্তা।
পরের পর্ব হবে কিভাবে দাজ্জাল এই সিস্টেম কার্যকর করে পরিচালনা করছে...ইনশাআল্লাহ
চলবে......
আল্লাহ আমাদের কে সঠিক জ্ঞান দান করুন।
সূত্রঃ
১. Various lecture of Sheikh Imran Nazar Hossein
২. Democracy in Islam by Abdur Raheem Green
৩. Dajjal aur Dajjaliyat by Dr. Israr Ahmed
৪. ইসলাম ও গনতন্ত্রঃ দুটি জীবনাদর্শের সংঘাত- মো আজিজুর রহমান খান
৫. ইসলাম ও গনতন্ত্রের সংঘাত- মাওলানা আসেম ওমর
৬. The Battle of Hearts and Minds by Sheikh Anwar al-Awlaki
দাজ্জালের মহা ফিতনা ও বর্তমান বিশ্বঃ পর্ব-৫
দাজ্জালের মহা ফিতনা ও বর্তমান বিশ্বঃ পর্ব-৪
বিষয়: বিবিধ
২০২০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন